Issue area অ্যাকাউন্ট তৈরি ও লগইন ক্ষেত্রে সতর্কতাবাণী ও পাসওয়ার্ড নির্বাচন

আলিফ চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার জন্য সে তার বাবার জুম অ্যাকাউন্ট, হোয়াটস অ্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে। চাকরির কাজে তার বাবা এ সপ্তাহে দেশের বাহিরে যাবে। তাই তিনি আলিফকে একটি গুগল অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছেন। গুগল অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার সময়ে তিনি আলিফকে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা ও ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মনে রাখা জরুরি সেগুলি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন। এছাড়াও ইন্টারনেটে বিভিন্ন পরিষেবা গ্রহণের জন্য একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড কিভাবে সাহায্য করে সে সম্পর্কে আলিফের বাবা আলিফকে ধারণা দেন।অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সময়ে আলিফের বাবা যে বিষয়গুলো মনে রাখতে বলেন- ১। আলিফকে সবসময়ই একটি শক্তিশালী এবং ইউনিক পাসওয়ার্ড (যেটি অন্যদের পাসওয়ার্ডের সাথে মেলার সম্ভাবনা কম) বাছাই করতে হবে।২। আলিফকে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (জি মেইল, ইয়াহু, ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, টুইটার ইত্যাদি অ্যাকাউন্ট সুরক্ষার বাড়তি একটি ধাপ যেখানে অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পাসওয়ার্ড এর সাথে মোবাইল নম্বর বা ইমেইল ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হয়) চালু রাখার মাধ্যমে অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করতে আলিফ নির্ভরযোগ্য কারো সাহায্য নিতে পারে (বাবা-মা, বড় ভাই-বোন)।৩। নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানাসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার সময়ে আলিফকে অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে। যেমন- সুপরিচিত ওয়েবসাইট বা অ্যাপ না হলে, নির্ভরযোগ্য কারো পরামর্শ ব্যতীত এই তথ্যগুলো প্রদানে বিরত থাকতে হবে।অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার সময়ে আলিফেরবাবা যে বিষয়গুলো মনে রাখতে বলেন:১। অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার পূর্বে যেই ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মটিআলিফ ব্যবহার করতে চায় সেটি গ্রহণযোগ্য বা নির্ভরযোগ্য কিনা তা বাবা-মা, বড় ভাই-বোন বা এ বিষয়ে ভালো জানে এমন কারও কাছ থেকে জেনে নিয়ে তবে ব্যবহার করা।২। আলিফ যদি কোনো সন্দেহজনক লিঙ্ক দেখে তবে সেগুলো ব্যবহার করা অথবা এসব লিঙ্কে প্রবেশ করতে অ্যাকাউন্টের তথ্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবে। ৩। পাবলিক (গণ) ওয়াই-ফাই ব্যবহারের ক্ষেত্রে আলিফ অবশ্যই সাবধানতা মেনে চলবে।৪। আলিফ যদি সাইবার ক্যাফে ব্যবহার করে অথবা ব্যক্তিগত ডিভাইস ছাড়া অন্য কোথাও অ্যাকাউন্ট লগ ইন করে তাহলে, কখনোই লগ-ইন তথ্য সেভ করে রাখবে না। এবং কাজ শেষে অবশ্যই অ্যাকাউন্ট লগ-আউট করবে।অ্যাকাউন্টের জন্য পাসওয়ার্ড নির্বাচনের সময়ে আলিফের যে বিষয়গুলোমনে রাখতে হবে:১। আলিফ যদি অক্ষর, সংখ্যা এবং কিবোর্ড সংকেতসমূহের সমন্বয়ে (যেমন- #@$% ইত্যাদি) পাসওয়ার্ড নির্বাচন করে তাহলে তা অন্যদের পক্ষে ধারণা করা কঠিন হবে।২। ইংরেজি ছোট ও বড় হাতের অক্ষরের মিশ্র ব্যবহার করে আলিফ পাসওয়ার্ডটিকেআরো শক্তিশালী করতে পারবে। ৩। আলিফ তার নিজের নাম বা পরিচিত কারো নামের আদ্যাক্ষর, জন্ম দিন, জন্মের সাল, ফোন নম্বর ইত্যাদির সাহায্যে পাসওয়ার্ড তৈরি করবে না। কারণ, তা অন্যদের পক্ষে ধারণা করা অপেক্ষাকৃত সহজ। ৪। আলিফকে কমপক্ষে ৮ টি অক্ষর ব্যবহার করে পাসওয়ার্ড বানাতে হবে। সংখ্যা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরলধারা (যেমন ১১১, ৯৯৯, ১২৩) ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে। ৫। কোনো অবস্থায়ই অন্যদের সাথে আলিফ পাসওয়ার্ড শেয়ার করবে না।

আরও জানুন
Issue area তথ্য চুরি

তুমি হয়তো তোমার বাবা-মা বা আশেপাশের নিকটজনদের ফোনে দেখবে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বা সেবার অফার সংক্রান্ত নানা রকম মেসেজ, মেইল বা ফোন কল আসছে। তারা কাউকে এসব তথ্য দেয়নি তবু প্রতিদিন এমন অনেক অনেক অপরিচিত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছ থেকে কল, মেসজ বা মেইল আসে। আবার কারো ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি ইত্যাদি ব্যবহার করেই অন্য কেউ ফেসবুকে বা অন্য কোথাও প্রোফাইল তৈরি করছে এবং এর ফলে যার তথ্য বা ছবি ব্যবহার করছে তাকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। নিজের ফোন নাম্বার, ইমেইল এড্রেস, ছবিসহ এসব ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে অন্যদের হাতে গেল? মূলত তারা বিভিন্ন উৎস থেকে এগুলো সংগ্রহ করেছে। এইসব উৎসগুলি বেশিরভাগই আমাদের ডিজিটাল ডিভাইস বা ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে কোনো না কোনো ব্যবহারকারীর অসাবধানতাবশত উন্মুক্ত করে রাখা ব্যক্তিগত তথ্য। ইন্টারনেটের দুনিয়ায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের বসবাস। এদের মধ্যে ক্ষতিকর ও দুষ্টু মানুষের সংখ্যাও কম নয়। কখনো ভেবে দেখেছো, তোমার কোনো গোপন বা ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন- নাম, ঠিকানা, ফেসবুক-ইউটিউবের পাসওয়ার্ড, কিংবা বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন এর মতো তথ্য যদি এধরনের কারো কাছে পৌঁছায় তাহলে কেমন বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে পারো? ইন্টারনেট ব্যবহারকালীন সময়ে তুমি যে কয়েকটি সম্ভাব্য বিপদের সম্মুখীন হতে পারো তার মধ্যে ‘তথ্য চুরি’ অন্যতম। বিভিন্নভাবেই ইন্টারনেট থেকে তোমার তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে। যেমন:১. অরক্ষিত ওয়েবসাইট বা পাবলিক Wi-Fi, যেগুলি যে কেউ ব্যবহার করতে পারে, সেগুলিতে তুমি কোনো ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করলে তা চুরি হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।২. তোমার মোবাইল, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার চুরি হয়ে গেলে এসব ডিভাইস থেকেও ব্যক্তিগত তথ্য, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য ইত্যাদি চুরি হতে পারে।৩. আবার দুর্বল পাসওয়ার্ডের কারণে কেউ তা অনুমান করতে পারলে বা পাসওয়ার্ড কোন উপায়ে পেয়ে গেলেও তথ্য চুরি হতে পারে। ৪. ইন্টারনেট তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মচারী, যার কাছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের অ্যাক্সেস আছে, এমন মানুষের মাধ্যমে ও তোমার ইন্টারনেটে দেওয়া তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে।৫. তোমার পরিচিত কেউ হ্যাকিং এর শিকার হলে, তার ডিভাইসের মাধ্যমে তুমি বা তোমার পরিবারের বা কর্মসংস্থানের অন্যান্য কর্মীদের তথ্য ও চুরি হতে পারে।৬. যেকোনো পরিস্থিতিতে থার্ড পার্টি অ্যাপ (থার্ড পার্টি অ্যাপ হলো এমন অ্যাপ বা সফটওয়্যার যা মুলত মুল সার্ভিস প্রোভাইডার এর বাইরে অন্য কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে) ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিৎ। কারণ, থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি হয়ে যাওয়া বা বেহাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মনে রাখবে, সাইবার অপরাধীরা বিভিন্ন অবৈধ কাজে তোমার তথ্য ব্যবহার করতে পারে। এমনকি ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে টাকা চুরি, তোমার  নামে ক্রেডিট কার্ড অথবা  ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে বা আরও বড় কোন অপরাধ করতে পারে। এর ফলে আর্থিক বা সামাজিক ক্ষতিসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ভারও পড়তে পারে তোমারই ওপর। কাজেই ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান ও সংরক্ষণে যত্নবান হওয়া একান্তই জরুরি।

আরও জানুন
Issue area অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং

তুমি কি ‘হ্যাকিং’ শব্দটির সাথে পরিচিত?হ্যাকিং হলো কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার একটি প্রচেষ্টা। সহজ কথায় বলতে গেলে, অসৎ উদ্দেশ্যে (যেমন- তথ্য, ফাইল ইত্যাদি চুরি বা পরিবর্তন) কম্পিউটারের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করাকে হ্যাকিং বলা হয়ে থাকে।ইন্টারনেট নির্ভর জীবনযাপন করতে গিয়ে বর্তমানে আমরা যে সকল ঝুঁকির সম্মুখীন হই তার মধ্যে অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং অন্যতম। অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে, গেমস খেলতে কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করে কেনাকাটা করতে, শিক্ষামূলক ভিডিও দেখতে শিশু-কিশোর নির্বিশেষে প্রায় সকলেরই গুগল অ্যাকাউন্ট থাকে। এই অ্যাকাউন্ট অসাবধানতার কারণে হ্যাকিং এর শিকার হতে পারে।  যারা হ্যাকিং করে তাদেরকে হ্যাকার বলা হয়। অসৎ ব্যক্তিরা বিভিন্ন কারণে হ্যাকিং করে থাকে। যেমন-ক) আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে - হ্যাকাররা ক্রেডিট কার্ড নম্বর চুরি করা, একাউন্ট সম্পর্কিত স্পর্শকাতর তথ্য সংগ্রহ বা সম্পূর্ণ ব্যাংকিং সিস্টেম অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হ্যাক করে থাকে।খ) কর্পোরেট বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে গুপ্তচরবৃত্তি করার উদ্দেশ্যে – অনেক সময়ে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের হ্যাকাররা সুবিধা অর্জনের জন্য প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের পণ্য এবং পরিষেবাগুলির তথ্য চুরি করে থাকে।গ) জাতীয় নথিপত্র চুরির উদ্দেশ্যে – আন্তর্জাতিক মহলে প্রভাব ও প্রতিপত্তি বিস্তারের জন্য অনেক সময়ে শক্তিশালী দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিযোগী দেশের জাতীয়, স্পর্শকাতর এবং গুরূত্ববহ তথ্য চুরি করে থাকে। কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তুমি তোমার অ্যাকাউন্টকে হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারো। যেমন--              ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময়ে কম্পিউটার সিস্টেম/ডিভাইসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালি করা। এজন্য ইসেট (ESET), ক্যাস্পারস্কি (Kaspersky), অ্যাভাস্ট (Avast) ইত্যাদি সফটওয়্যার গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা ব্যবহার করা যায়।-              কোনো অ্যাপ্ ডাউনলোড ও ব্যবহারের পূর্বে তোমাকে এর উৎসের নির্ভরযোগ্যতা ও যথার্থতা যাচাই করে নিতে হবে। ‘প্লে স্টোরে’ বিভিন্ন অ্যাপের রিভিউ দেওয়া থাকে। তাছাড়া, অন্যান্য ব্যবহারকারীরাও নিজেদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা প্লে স্টোরের মতামত সেকশনে লিখে রাখে। তুমি কোনো অ্যাপ ডাউনলোড ও ব্যবহারের পূর্বে  এই সকল রিভিউ এবং মতামত যাচাই করে নিতে পারো।-              তোমার ব্যবহৃত সফটওয়্যারগুলো নিয়মিত হালনাগাদ (আপডেট) করে রাখবে। এক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত উৎস থেকে হালনাগাদ (আপডেট) ফাইল নামাতে হবে। তুমি গুগল প্লে স্টোর (Google Play Store) , আই টিউন্স (iTunes), সফটোনিক (Softonic), সফটপিডিয়া (Softpedia) ইত্যাদি সাইটগুলি থেকে এসব নির্ভরযোগ্য আপডেটসমূহ ডাউনলোড করতে পারবে।-              ইন্টারনেট ব্যবহারকালীন সময়ে অপরিচিত এবং অপ্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট ও লিঙ্কে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকবে। থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে আনার চেষ্টা করবে।- এছাড়া জরুরি ফাইল বা তথ্যের ব্যাকআপ রাখতে হবে এবং তা একাধিক জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে যেন হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে তা দ্রুত পুনরুদ্ধার করা যায়।  এই কাজগুলি করার মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব। 

আরও জানুন
Issue area ফিশিং

পরিচিত সেজে ফোনকল দিয়ে আর্থিক সাহায্য চাওয়া কিংবা কোন মোবাইল ব্যাংকের এজেন্ট সেজে ব্যক্তিগত তথ্য জেনে নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে – এ ধরনের কোনো ঘটনা কখনো শুনেছো? তোমার উত্তর যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে তাহলে তুমি হয়তো ‘ফিশিং’ নামে পরিচিত জালিয়াত চক্রের এই কার্যক্রম সম্পর্কে কিছুটা আঁচ করতে পারছো।ইন্টারনেটে যে সকল জালিয়াতি অহরহ হয়ে থাকে, ফিশিং তার মধ্যে অন্যতম। ফিশিং হল একটি সাইবার অপরাধ যেখানে একটি অবৈধ (ক্ষতিকর, জালিয়াত) চক্র, প্রতিষ্ঠান কিংবা মানুষ ইমেইল, টেলিফোন বা বার্তার মাধ্যমে তোমার পরিচিত হিসেবে নিজেকে জাহির করে এবং তোমার ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংকিং এবং ক্রেডিট কার্ডের বিশদ বিবরণ এবং পাসওয়ার্ডের মতো সংবেদনশীল তথ্য প্রদানের জন্য তোমাকে প্রলুব্ধ করবে।জালিয়াত চক্র পরবর্তীতে এইসকল তথ্য তোমার গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টসমূহে প্রবেশ করতে ব্যবহার করবে এবং এর ফলে তুমি একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য বা কনটেন্ট চুরির পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে পারো।ফিশিং চেনার উপায়: ফিশিং থেকে বাঁচতে হলে ফিশিং চক্র কিভাবে এই জালিয়াতি করে থাকে তা বুঝতে পারা জরুরি। বিভিন্ন উপায়েই ফিশিং করা হয়ে থাকে। যেমনঃ১। অবিশ্বাস্য ও লোভনীয় অফার - লোভনীয় অফার এবং মনোযোগ আকর্ষণকারী বিবৃতি খুবই দ্রুত মানুষেরর দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো একটি ফোনকল, বার্তা বা ইমেইলের মাধ্যমে জানানো হলো যে, তুমি একটি আইফোন, একটি লটারি বা অন্য কোনো অসাধারণ পুরস্কার জিতেছো। এ ধরনের চমকপ্রদ শিরোনাম অনেক সময়ে তোমাকে ক্ষতিকর লিঙ্কে প্রবেশ করতে প্ররোচিত  করতে পারে। কিংবা জীনের বাদশা সেজে অঢেল ধনসম্পদের মালিক বানিয়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে হাদিয়া হিসেবে কিছু টাকা পাঠানোর কথা বলে ধীরে ধীরে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় অসাধু চক্র।২। জরুরী মুহূর্তের অবতারণা - সাইবার অপরাধীদের মধ্যে একটি প্রিয় কৌশল হল তোমাকে জরুরী মুহূর্তের আবহ প্রদান করে পরিস্থিতি নির্বিচারে কাজ করতে বাধ্য করা। যেমনঃ খুবই আকর্ষণীয় ও সীমিত সময়ের জন্য কোনো অফার এর বিজ্ঞাপন দেওয়া। এর মাধ্যমে ধারণা দেওয়া হবে যে, প্রতিক্রিয়া জানাতে তোমার হাতে মাত্র কয়েক মিনিট আছে। এই ধরনের ইমেইলগুলি উপেক্ষা করাই ভাল৷৩। হাইপারলিঙ্ক – ইমেইলে অনেক সময়ে একটি সাধারণ হাইপারলিঙ্ক সংযোগ করার মাধ্যমেও ফিশিং করা হয়ে থাকে। লিঙ্কটি দেখে স্বাভাবিক মনে হলেও আসলে এটি ফিশিং এর মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারে। এক্ষেত্রে, প্রকৃত URL না দেখিয়ে অথবা একটি ভুল বানান সহ একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক পাঠিয়ে ফিশিং করা হয়ে থাকে। (উদাহরণস্বরূপ www.bankofarnerica.com – এখানে 'm' একটি 'r' এবং একটি 'n', দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে।) ৪। সংযুক্ত ফাইলসমূহের মাধ্যমে – তুমি কখনোই একটি অপরিচিত অথবা অযাচিত উৎসের ইমেইল খুলবে না। এছাড়াও যদি ইমেইলের সংযুক্তি অংশে কোনো অযাচিত বা অপ্রয়োজনীয় ফাইল দেখতে পাও যা তুমি প্রত্যাশা করোনি, তাহলে এটি খুলবে না! এগুলির সাহায্যে প্রায়শই র‍্যানসমওয়্যার বা ভাইরাসের মতো ক্ষতিকর বস্তু কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে।

আরও জানুন
Issue area আর্থিক, সামাজিক ও মানসিক ক্ষয়ক্ষতি

 দৈনন্দিন জীবনে প্রায় প্রতিটি কাজেই ইন্টারনেটের ব্যবহার রয়েছে। তোমার পছন্দের মোবাইল গেমস নামানো বা খেলা থেকে শুরু করে বই পড়া, ক্লাসে যোগ দেওয়া, বাড়ির কাজ জমা দেওয়া, পছন্দের জামাকাপড়, প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি কিংবা খাবার কেনা, অন্যদের সাথে যোগাযোগ করাসহ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সকল কাজই ইন্টারনেটের সাহায্যে করা যায়। ইন্টারনেটের ব্যবহার জীবনকে সহজতর করেছে ঠিকই, তবে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার সাথে এর সামঞ্জস্যতা ঠিক না থাকলে বিভিন্ন ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়।ইন্টারনেট নির্ভর জীবন যাপন অনেক সময়ে আসক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে তুমি ও কিন্তু আর্থিক, সামাজিক ও মানসিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে পারো। এগুলো থেকে বাঁচতে হলে প্রথমে এইসব ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানা জরুরি। যেমন-সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি: একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে তুমি যে সকল সামাজিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে পারো তার মধ্যে প্রধান হলো –১। ইন্টারনেটে সচেতনতার সাথে বিভিন্ন পরিষেবা গ্রহণ না করলে তথ্য চুরি হতে পারে। এই সব তথ্য ব্যবহার করে দুষ্কৃতকারী তোমার পরিচয় নকল করতে পারে। আর, পরিচয় নকলকারীর মাধ্যমে কোনো আপত্তিকর অথবা বিভ্রান্তি মূলক তথ্য ছড়ানোর কারণে তুমি হয়রানির শিকার হতে পারো।২। বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার করলে তোমার স্পর্শকাতর, ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে।১। অতিরিক ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা বাস্তব জগত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভার্চুয়াল জগতের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পরতে পারি। ইন্টারনেটে আমাদের ব্যক্তিগত অনেক বিষয় উন্মুক্ত করে দিতে পারি যা ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে বিব্রতকর হতে পারে। ২। ইন্টারনেটের অতি ব্যবহার করতে গিয়ে এর ওপর নির্ভরতা বেড়ে যেতে পারে, ফলে পড়াশোনায় অমনোযোগ এবং অনীহা তৈরি হতে পারে। ৩। তুমি যদি যোগাযোগের জন্য অধিক মাত্রায় ইন্টারনেট নির্ভর হও তাহলে, তোমার ব্যক্তিপর্যায়ের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ও সামাজিক মেলামেশায় অসামঞ্জস্যতা দেখা দিতে পারে। ফলে বাস্তব জগতে যোগাযোগ, বন্ধুত্ব এবং সামাজিক সম্পর্কের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে এবং তা সামাজিক বিকাশকে বাঁধাগ্রস্ত করতে পারে। ৪। ইন্টারনেটে আসক্তির ফলে তুমি 'বাস্তব বিশ্ব' থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারো এবং তোমার বন্ধু ও পরিবারের সাথে যোগাযোগ কমে যেতে পারে। শারীরিক ও মানসিক ক্ষয়ক্ষতি: একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে তুমি যে সকল মানসিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে পারো তার মধ্যে প্রধান হলো–১। অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে ইন্টারনেট আসক্তি তৈরি হয়। এর ফলে শারীরিক পরিশ্রম কমে গিয়ে শারীরিক দুর্বলতা ও ঘাড়ে পিঠে ব্যথার মতো সমস্যা তৈরি হয়। ২।  এছাড়া অতিমাত্রায় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের ফলে রাতে নির্বিঘ্ন ঘুমে ব্যঘাত ঘটতে পারে।৩। হতাশা, উদ্বেগ এবং দুঃখ- ইন্টারনেটে অত্যধিক সময় ব্যয় করার ফলে বাস্তবতার সাথে তুমি যোগাযোগ হারিয়ে ফেলতে পারো এবং কাল্পনিক জগতের প্রতি ঝোঁক বাড়তে পারে। যার ফলে হতাশা-উদ্বেগের মতো ব্যাপারগুলো তোমার নিত্যসঙ্গী তে পরিণত হতে পারে।৪। অসহিষ্ণুতা- অর্থাৎ, মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকতে পারে।৫। এছাড়া অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহার নিঃসঙ্গতা, একাকীত্ব বোধ তৈরি করে। ফলে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও অবসাদ্গ্রস্ত হতে পারে।  আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি: একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে তুমি যে সকল আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে পারো তার মধ্যে প্রধান হলো-১। ইন্টারনেটে প্রতারক চক্র বিভিন্ন লোভনীয় অফার এর কথা বলে তোমার কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতে পারে।২। প্রতারক চক্র বিভিন্ন মোবাইল ব্যাঙ্কিং কোম্পানির কাস্টোমার সেবা দানকারী ব্যক্তি সেজে ফোন কল অথবা এসএমএস-এর মাধ্যমে পিন নম্বর সংগ্রহ করে থাকে। এভাবেই আমাদের দেশে বিকাশ, নগদ প্রভৃতি মোবাইল ব্যাঙ্কিং সেবাক্ষেত্রে প্রতারকরা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ৩। ইন্টারনেটে বা সামাজিক মাধ্যমে অসচেতনভাবে প্রকাশিত আর্থিক তথ্য, পিন, পাসওয়ার্ড বা কার্ড নাম্বার, ব্যাংকিং বা আর্থিক তথ্য অন্যের হাতে পড়ে গেলে তা ব্যবহার করে অর্থ হাতিয়ে নিতে পারে। উপরোক্ত ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও ইন্টারনেট এর অধিক এবং অসচেতন ব্যবহার আমাদের বিভিন্ন বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই, ইন্টারনেটের উপর অত্যাধিক মাত্রায় নির্ভরশীল না হয়ে বাস্তব-স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ইন্টারনেটের সুষম ও সচেতন ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। 

আরও জানুন
Issue area ইন্টারনেট ব্যবহারে সতর্কতা এবং বর্জনীয় সমূহ

রাজধানী ঢাকার একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাশেদ। ছবি আঁকতে তার ভীষণ ভালো লাগে। গত কিছুদিন ধরে মায়ের কাছে বায়না ধরেছে একটি আর্ট স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার জন্য। রাশেদের মা তার ছেলের এই ইচ্ছা পূরণ করতে আগ্রহী। কিন্তু, সমস্যা হলো, কর্মজীবি মায়ের পক্ষে রাশেদকে নিয়মিত আর্ট স্কুলে পৌঁছে দেওয়া কষ্টকর। এই সমস্যা সমাধানের জন্য রাশেদের মা তাকে একটি অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন যারা দক্ষতার সাথে চারুকলা ও চিত্রাঙ্কন প্রশিক্ষণ দেয়।অনলাইন ক্লাস গুলোতে অংশ নেওয়া, ক্লাস সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানা এবং বাড়ির কাজ জমা দেওয়ার জন্য রাশেদকে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে সংযুক্ত হতে হবে। যেমন - প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট অ্যাকাউন্টে সংযুক্ত হয়ে পূর্ব ধারণকৃত বিভিন্ন আর্ট ক্লাস দেখতে পাবে, জুম ব্যবহার করে নিয়মিত ক্লাসে অংশ নিতে পারবে, গুগল ক্লাসরুমের সাহায্যে বাড়ির কাজ জমা দিবে এবং হোয়াটস অ্যাপের সাহায্যে ক্লাস সংক্রান্ত যোগাযোগ রক্ষা করবে। অর্থাৎ এই আর্ট ক্লাসে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে রাসেলকে নিয়মিত ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা সমূহ ব্যবহার করতে হবে।যেহেতু রাসেল আগে কখনোই ইন্টারনেটভিত্তিক পরিষেবা গ্রহণ করেনি, তাই রাসেলের মা তাকে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং কিছু কাজ বর্জনের জন্য পরামর্শ দেয়। যেমন-১। ব্যক্তিগত তথ্য সীমিত ও নিরাপদ রাখা: রাশেদের মা তাঁকে অপরিচিত কারো সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ছবি, ভিডিও, বাড়ির ঠিকানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পারিবারিক আয়, ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য প্রদান করতে নিষেধ করে।২। প্রাইভেসি সেটিংস চালু রাখা: রাশেদ যেহেতু হোয়াটস অ্যাপ, ইমেইল এর মতো যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করবে তাই মা রাশেদকে প্রাইভেসি সেটিংস চালু রাখতে পরামর্শ দেয়। প্রাইভেসি সেটিংস চালু রাখলে অপরিচিতদের কাছে ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। প্রাইভেসি সেটিংস চালু করার ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে মা তাকে সাহায্য করে এবং বলে প্রয়োজনে অভিজ্ঞ শিক্ষক, অভিভাবক বা নিকটজনদের সাহায্য নিতে হবে। ৩। নিরাপদ ব্রাউজিং: বিভিন্ন সময়ে অপরিচিত উৎস থেকে অনেক ধরনের লোভনীয় অফার (প্রস্তাব) আসে। এগুলো অনেক সময় ফাঁদে পরিণত হয়। যেমন, হ্যাকাররা বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে মানুষকে ক্ষতিকর লিঙ্কে ক্লিক করতে উৎসাহিত করে থাকে। তাই, নিরাপদ ব্রাউজিং নিশ্চিত করতে অপরিচিত উৎসের কোনো লিঙ্কে ক্লিক করা যাবে না।৪। কোনো কিছু ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে সাবধান থাকা: অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন কাজের জন্য রাশেদকে প্রয়োজনানুসারে অ্যাপ, তথ্য, ছবি, ভিডিও ডাউনলোড করতে হতে পারে। কোনো কিছু ডাউনলোড করার আগে রাশেদের অবশ্যই সেটি সম্পর্কে রিভিউ পড়ে নেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে রাশেদ তাঁর শিক্ষক, পিতামাতা অথবা পরিবারের কারো সাহায্য নিতে পারে।৫। কিছু শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা: কোনো তথ্য শেয়ার করার আগে রাশেদের উচিৎ হবে প্রথমে তথ্যের সত্যতা যাচাই করা এবং তথ্যের উৎস সঠিক ও নির্ভরযোগ্য কিনা তা খতিয়ে দেখা।৬। অপরিচিত কারো সাথে মেশার ক্ষেত্রে সতর্কতা: অপরিচিত বিভিন্ন মানুষের সংস্পর্শে আসার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো ইন্টারনেট। দুষ্টু মানুষেরা তাই ইন্টারনেটে নতুন নতুন প্রতারণার ফাঁদ পেতে রাখে। ইন্টারনেটে কোনো মানুষের সংস্পর্শে আসলে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির আগে তাই প্রথমে মানুষটির নির্ভরযোগ্যতা ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে রাশেদকে নিশ্চিত হতে হবে।৭। এন্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা: বিভিন্ন ইন্টারনেট ভাইরাসের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে রাশেদের অবশ্যই একটি এন্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। উল্লেখিত সতর্কতা পরামর্শের আলোকে রাশেদের জন্য বর্জনীয় কাজ গুলো হলো –১। ব্যক্তিগত তথ্য পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে কাউকেই অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রদান করা।২। নিজের ব্যক্তিগত তথ্য সর্বসাধারণের অনুপ্রবেশ আছে এমন স্থানে শেয়ার করা।৩। অনিরাপদ উৎস থেকে আসা কোনো লোভনীয় ফাঁদে পা দেওয়া। বিশেষ করে অনিরাপদ লিঙ্ক ও অ্যাটাচমেন্টে ক্লিক করা।৪। অপরিচিত, রেজিস্ট্রেশন বিহীন এবং সন্দেহজনক উৎস থেকে তথ্য, ছবি, ভিডিও বা অ্যাপ ডাউনলোড করা।৫। কোনো কিছু শেয়ার করার আগে তথ্যের সত্যতা এবং উৎসের যথার্থতা যাচাই না করা।৬। অনলাইনে অবাধ মেলামেশা/যোগাযোগ বা বন্ধুত্ব করা, অপরিচিতদের সাথে ঘনিষ্ঠতা রাখা, ইত্যাদি।

আরও জানুন
Issue area মোবাইল এপ্লিকেশন ডাউনলোড ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা

তোমরা নিশ্চয়ই ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন শব্দ দুইটি আগে শুনেছো। কেউ কেউ হয়তো বাড়িতে এগুলো ব্যবহারও করছো। এখনকার সময়ে মানুষ এই ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোন প্রতিদিনই কোন না কোন ভাবে ব্যবহার করছে। কারণ এগুলোর ব্যবহার মানুষের জীবনকে করেছে অনেক সহজ। আর তাই তো ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের প্রতি মানুষের ঝোঁক দিন দিন বেড়েই চলেছে।চলো, শুরুতেই জেনে নেয়া যাক, ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন বলতে আসলে আমরা কি বুঝি। ইন্টারনেট হচ্ছে তথ্যের এক বিশাল ভাণ্ডার। এটি চোখে দেখা যায় না। পৃথিবীর সকল কম্পিউটার বিশেষ প্রক্রিয়ায় তারের মাধ্যমে একটি অন্যটির সাথে যুক্ত হয়ে এই ইন্টারনেট তৈরি করেছে। অন্যদিকে স্মার্টফোন হচ্ছে এক বিশেষ ধরণের মোবাইল ফোন যা দিয়ে যোগাযোগ করার সাথে সাথে আরো বিভিন্ন ধরণের জটিল কাজ করা যায় যেগুলো সাধারণ মোবাইল ফোন দিয়ে করা যায় না। যেমনঃ ইন্টারনেট ব্যবহার করা, ইমেইল পাঠানো, ইউটিউবে ভিডিও দেখা, দিক নির্ণয় করা, লেখা কম্পোজ করা, রিমোট হিসেবে ব্যবহার করা ইত্যাদি। স্মার্টফোনে বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য রয়েছে নানা রকম অ্যাপ/অ্যাপ্লিকেশন। এই বিভিন্ন ধরনের অ্যাপের চাহিদা মানুষের কাছে যেমন বেড়ে চলেছে, ঠিক তেমনি বাড়ছে এগুলো ব্যবহারের ঝুঁকি। যে কোন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার আগে যদি আমরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন না করি তাহলে মোবাইলে সংরক্ষিত সকল তথ্য (যেমনঃ ছবি, ফোন নম্বর ইত্যাদি) চুরি হওয়া ছাড়াও মোবাইলে ব্যবহৃত বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট (যেমন- ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ইমেইল) হ্যাক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আমরা অবশ্যই অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় এই সাবধানতাগুলো মেনে চলবো(১) গুগল প্লে স্টোরে অথবা অ্যাপ স্টোরে আমাদের প্রয়োজন মত অ্যাপের নাম দিয়ে সার্চ দিলে একই নামে অনেকগুলো অ্যাপ সামনে আসতে পারে। এই অবস্থায় আমরা বাবা-মায়ের বা অভিজ্ঞ কারও সাহায্যে যদি অ্যাপটিতে অন্যান্য ব্যবহারকারীদের মতামত (রিভিউ) এবং অ্যাপের বিবরণ (ডিসক্রিপশন) পড়ি তাহলে সহজেই বুঝতে পারব কোনটি আসল। তবে অনেক অ্যাপে মিথ্যা ও ভুল রিভিউ থাকতে পারে। তাই রিভিউ পড়ার সময় অবশ্যই আমাদের বাবা-মায়ের বা এ বিষয়ে ভালো বোঝে এমন নিকটজনের সহায়তা নিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে হবে যে কোন রিভিউগুলো সত্য আর কোনগুলো মিথ্যা।(২) আমরা যে কোন অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় অবশ্যই বাবা-মায়ের বা অভিজ্ঞ নিকটজনের সাহায্য নিয়ে মোবাইলে আপডেটেড অ্যান্টি-ভাইরাস সচল করে নিবো।(৩) ফ্রি অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় অন্য সফটওয়্যার বা ফাইল ডাউনলোড হয়ে যেতে পারে। তাই দরকার নেই এমন সফটওয়্যার ও ফাইল আমরা বাবা-মায়ের বা অভিজ্ঞ নিকটজনের সাথে আলোচনা করে ডিলিট করে দিবো। কোন অবস্থাতেই সেগুলো মোবাইলে ইন্সটল করব না।(৪) যে কোন অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে গুগল প্লে স্টোরের বা অ্যাপ স্টোরের বিবরণ (ডিসক্রিপশন) পেইজে “এডিটরস চয়েস” অথবা “টপ ডেভেলপার” এ ধরনের লেখা থাকলে অ্যাপটি আসল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই আমরা এই দিকে খেয়াল রাখবো। এছাড়াও অ্যাপটি যে ডেভেলপার (কোম্পানি/ব্যক্তি) তৈরি করেছেন, তাদের ওয়েবসাইটে বড়দের সহযোগিতায় লগইন করে অ্যাপটি আসল কিনা সে ব্যাপারে আরো নিশ্চিত হতে পারবো।(৫) কোন অ্যাপ মোবাইলে ইন্সটল করার সময় ঠিক যে কাজের জন্য অ্যাপটি ডাউনলোড করা হয়েছে তা বাদে অপ্রয়োজনীয় তথ্যে প্রবেশ করতে চায় (যেমনঃ কোন ক্যালেন্ডার অ্যাপ ইন্সটল করার সময় যদি অপ্রয়োজনীয়ভাবে মোবাইলের ক্যামেরা, মাইক্রোফোন বা ছবিতে প্রবেশ করতে চায়) তাহলে সেই অ্যাপটি নকল ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমরা এ ধরনের অ্যাপ আনইন্সটল করা থেকে বিরত থাকবো। 

আরও জানুন
Issue area কখন অভিভাবকের সাহায্য চাইবো

ঘটনা ১: দিবা তার একটি সুন্দর ছবি অনলাইনে সবার সাথে শেয়ার করলো। ২ দিন পর তার বান্ধবী তুলি তাকে বললো যে সে অন্য নামের একটি একাউন্টে দিবার ছবিটি দেখেছে। দিবা খুবই ভয় পেয়ে গেলো এবং তাড়াতাড়ি বাসায় চলে গেল। ঘটনা ২: রাতুল চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। অনলাইনে ক্লাসগুলো করার জন্য তার বড় ভাইয়ের সাহায্য নিয়ে খুব সহজ একটি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ফেসবুকে একটি একাউন্ট তৈরি করলো, যাতে পরবর্তীতে সে পাসওয়ার্ডটি ভুলে না যায়। ২ সপ্তাহ পর হঠাৎ করে দেখলো সে তার একাউন্টে আর প্রবেশ করতে পারছে না। ঘটনা ৩: চৈতী তার বাবার মোবাইল ফোন নিয়ে তার ভাই-বোনদের সাথে ছাদে ঘুরতে গিয়েছিলো। খেলাধুলা করার সময় সে ফোনটি একটি টেবিলে রেখে দিয়েছিলো। বাসায় ফেরার সময় মোবাইল ফোনটি খোঁজ করলে সে ফোনটি আর খুঁজে পায় না। চৈতী তার বাবার ফোনটি হারিয়ে ফেলেছে। ঘটনা ১ এবং ঘটনা ২ এ দিবা এবং রাতুল অনলাইন ঝুঁকির শিকার হয়েছে। আর ঘটনা ৩ এ চৈতীর বাবার ফোন থেকে তথ্য চুরির একটি সম্ভাবনা থাকে। তোমার কখনো যদি মনে হয় তুমি অনলাইন ঝুঁকির (যেমন- একাউন্ট হ্যাকিং, ফিশিং, তথ্য চুরি) শিকার হয়েছো, তাহলে প্রথম কাজটি হবে তোমার অভিভাবককে জানানো। তারপর তাদের সাহায্য নিয়ে যা করণীয় তা করতে হবে।আমরা ইতিমধ্যে অনলাইনের বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকির কথা জেনেছি। এটাও জেনেছি যে কীভাবে আমরা সতর্ক থাকবো। তারপরও এমন অনেক অবস্তায় আমরা পড়তে পারি যেখানে তোমরা নিজেরা  সিদ্ধান্ত না নিয়ে তোমার অভিভাবকের সাথে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।এছাড়া অনেক সময় অনলাইনের বিভিন্ন কাজে আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। এ সমস্ত কাজ করার সময়ও অনেক ধরনের জটিলতা আসতে পারে। তখন সেসকল জটিলতার সমাধানে আমাদের সর্বপ্রথম অভিভাবকের সান্নিধ্যে আসা উচিত এবং তাদের এসব বিষয়ে জানিয়ে সহায়তা চাওয়া উচিত। এক্ষেত্রে কোনভাবেই গোপন করা বা এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। তাতে বিপদ/ঝুঁকির সম্ভাবনা আরও বাড়তে পারে।

আরও জানুন