তোমরা নিশ্চয়ই ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন শব্দ দুইটি আগে শুনেছো। কেউ কেউ হয়তো বাড়িতে এগুলো ব্যবহারও করছো। এখনকার সময়ে মানুষ এই ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোন প্রতিদিনই কোন না কোন ভাবে ব্যবহার করছে। কারণ এগুলোর ব্যবহার মানুষের জীবনকে করেছে অনেক সহজ। আর তাই তো ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের প্রতি মানুষের ঝোঁক দিন দিন বেড়েই চলেছে।
চলো, শুরুতেই জেনে নেয়া যাক, ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন বলতে আসলে আমরা কি বুঝি। ইন্টারনেট হচ্ছে তথ্যের এক বিশাল ভাণ্ডার। এটি চোখে দেখা যায় না। পৃথিবীর সকল কম্পিউটার বিশেষ প্রক্রিয়ায় তারের মাধ্যমে একটি অন্যটির সাথে যুক্ত হয়ে এই ইন্টারনেট তৈরি করেছে। অন্যদিকে স্মার্টফোন হচ্ছে এক বিশেষ ধরণের মোবাইল ফোন যা দিয়ে যোগাযোগ করার সাথে সাথে আরো বিভিন্ন ধরণের জটিল কাজ করা যায় যেগুলো সাধারণ মোবাইল ফোন দিয়ে করা যায় না। যেমনঃ ইন্টারনেট ব্যবহার করা, ইমেইল পাঠানো, ইউটিউবে ভিডিও দেখা, দিক নির্ণয় করা, লেখা কম্পোজ করা, রিমোট হিসেবে ব্যবহার করা ইত্যাদি।
স্মার্টফোনে বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য রয়েছে নানা রকম অ্যাপ/অ্যাপ্লিকেশন। এই বিভিন্ন ধরনের অ্যাপের চাহিদা মানুষের কাছে যেমন বেড়ে চলেছে, ঠিক তেমনি বাড়ছে এগুলো ব্যবহারের ঝুঁকি। যে কোন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার আগে যদি আমরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন না করি তাহলে মোবাইলে সংরক্ষিত সকল তথ্য (যেমনঃ ছবি, ফোন নম্বর ইত্যাদি) চুরি হওয়া ছাড়াও মোবাইলে ব্যবহৃত বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট (যেমন- ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ইমেইল) হ্যাক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আমরা অবশ্যই অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় এই সাবধানতাগুলো মেনে চলবো
(১) গুগল প্লে স্টোরে অথবা অ্যাপ স্টোরে আমাদের প্রয়োজন মত অ্যাপের নাম দিয়ে সার্চ দিলে একই নামে অনেকগুলো অ্যাপ সামনে আসতে পারে। এই অবস্থায় আমরা বাবা-মায়ের বা অভিজ্ঞ কারও সাহায্যে যদি অ্যাপটিতে অন্যান্য ব্যবহারকারীদের মতামত (রিভিউ) এবং অ্যাপের বিবরণ (ডিসক্রিপশন) পড়ি তাহলে সহজেই বুঝতে পারব কোনটি আসল। তবে অনেক অ্যাপে মিথ্যা ও ভুল রিভিউ থাকতে পারে। তাই রিভিউ পড়ার সময় অবশ্যই আমাদের বাবা-মায়ের বা এ বিষয়ে ভালো বোঝে এমন নিকটজনের সহায়তা নিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে হবে যে কোন রিভিউগুলো সত্য আর কোনগুলো মিথ্যা।
(২) আমরা যে কোন অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় অবশ্যই বাবা-মায়ের বা অভিজ্ঞ নিকটজনের সাহায্য নিয়ে মোবাইলে আপডেটেড অ্যান্টি-ভাইরাস সচল করে নিবো।
(৩) ফ্রি অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় অন্য সফটওয়্যার বা ফাইল ডাউনলোড হয়ে যেতে পারে। তাই দরকার নেই এমন সফটওয়্যার ও ফাইল আমরা বাবা-মায়ের বা অভিজ্ঞ নিকটজনের সাথে আলোচনা করে ডিলিট করে দিবো। কোন অবস্থাতেই সেগুলো মোবাইলে ইন্সটল করব না।
(৪) যে কোন অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে গুগল প্লে স্টোরের বা অ্যাপ স্টোরের বিবরণ (ডিসক্রিপশন) পেইজে “এডিটরস চয়েস” অথবা “টপ ডেভেলপার” এ ধরনের লেখা থাকলে অ্যাপটি আসল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই আমরা এই দিকে খেয়াল রাখবো। এছাড়াও অ্যাপটি যে ডেভেলপার (কোম্পানি/ব্যক্তি) তৈরি করেছেন, তাদের ওয়েবসাইটে বড়দের সহযোগিতায় লগইন করে অ্যাপটি আসল কিনা সে ব্যাপারে আরো নিশ্চিত হতে পারবো।
(৫) কোন অ্যাপ মোবাইলে ইন্সটল করার সময় ঠিক যে কাজের জন্য অ্যাপটি ডাউনলোড করা হয়েছে তা বাদে অপ্রয়োজনীয় তথ্যে প্রবেশ করতে চায় (যেমনঃ কোন ক্যালেন্ডার অ্যাপ ইন্সটল করার সময় যদি অপ্রয়োজনীয়ভাবে মোবাইলের ক্যামেরা, মাইক্রোফোন বা ছবিতে প্রবেশ করতে চায়) তাহলে সেই অ্যাপটি নকল ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমরা এ ধরনের অ্যাপ আনইন্সটল করা থেকে বিরত থাকবো।