ফিশিং

পরিচিত সেজে ফোনকল দিয়ে আর্থিক সাহায্য চাওয়া কিংবা কোন মোবাইল ব্যাংকের এজেন্ট সেজে ব্যক্তিগত তথ্য জেনে নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে – এ ধরনের কোনো ঘটনা কখনো শুনেছো? তোমার উত্তর যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে তাহলে তুমি হয়তো ‘ফিশিং’ নামে পরিচিত জালিয়াত চক্রের এই কার্যক্রম সম্পর্কে কিছুটা আঁচ করতে পারছো।

ইন্টারনেটে যে সকল জালিয়াতি অহরহ হয়ে থাকে, ফিশিং তার মধ্যে অন্যতম। ফিশিং হল একটি সাইবার অপরাধ যেখানে একটি অবৈধ (ক্ষতিকর, জালিয়াত) চক্র, প্রতিষ্ঠান কিংবা মানুষ ইমেইল, টেলিফোন বা বার্তার মাধ্যমে তোমার পরিচিত হিসেবে নিজেকে জাহির করে এবং তোমার ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংকিং এবং ক্রেডিট কার্ডের বিশদ বিবরণ এবং পাসওয়ার্ডের মতো সংবেদনশীল তথ্য প্রদানের জন্য তোমাকে প্রলুব্ধ করবে।

জালিয়াত চক্র পরবর্তীতে এইসকল তথ্য তোমার গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টসমূহে প্রবেশ করতে ব্যবহার করবে এবং এর ফলে তুমি একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য বা কনটেন্ট চুরির পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে পারো।

ফিশিং চেনার উপায়: ফিশিং থেকে বাঁচতে হলে ফিশিং চক্র কিভাবে এই জালিয়াতি করে থাকে তা বুঝতে পারা জরুরি। বিভিন্ন উপায়েই ফিশিং করা হয়ে থাকে। যেমনঃ

১। অবিশ্বাস্য ও লোভনীয় অফার - লোভনীয় অফার এবং মনোযোগ আকর্ষণকারী বিবৃতি খুবই দ্রুত মানুষেরর দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো একটি ফোনকল, বার্তা বা ইমেইলের মাধ্যমে জানানো হলো যে, তুমি একটি আইফোন, একটি লটারি বা অন্য কোনো অসাধারণ পুরস্কার জিতেছো। এ ধরনের চমকপ্রদ শিরোনাম অনেক সময়ে তোমাকে ক্ষতিকর লিঙ্কে প্রবেশ করতে প্ররোচিত  করতে পারে। কিংবা জীনের বাদশা সেজে অঢেল ধনসম্পদের মালিক বানিয়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে হাদিয়া হিসেবে কিছু টাকা পাঠানোর কথা বলে ধীরে ধীরে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় অসাধু চক্র।

২। জরুরী মুহূর্তের অবতারণা - সাইবার অপরাধীদের মধ্যে একটি প্রিয় কৌশল হল তোমাকে জরুরী মুহূর্তের আবহ প্রদান করে পরিস্থিতি নির্বিচারে কাজ করতে বাধ্য করা। যেমনঃ খুবই আকর্ষণীয় ও সীমিত সময়ের জন্য কোনো অফার এর বিজ্ঞাপন দেওয়া। এর মাধ্যমে ধারণা দেওয়া হবে যে, প্রতিক্রিয়া জানাতে তোমার হাতে মাত্র কয়েক মিনিট আছে। এই ধরনের ইমেইলগুলি উপেক্ষা করাই ভাল৷

৩। হাইপারলিঙ্ক – ইমেইলে অনেক সময়ে একটি সাধারণ হাইপারলিঙ্ক সংযোগ করার মাধ্যমেও ফিশিং করা হয়ে থাকে। লিঙ্কটি দেখে স্বাভাবিক মনে হলেও আসলে এটি ফিশিং এর মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারে। এক্ষেত্রে, প্রকৃত URL না দেখিয়ে অথবা একটি ভুল বানান সহ একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক পাঠিয়ে ফিশিং করা হয়ে থাকে। (উদাহরণস্বরূপ www.bankofarnerica.com – এখানে 'm' একটি 'r' এবং একটি 'n', দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে।)

 

৪। সংযুক্ত ফাইলসমূহের মাধ্যমে – তুমি কখনোই একটি অপরিচিত অথবা অযাচিত উৎসের ইমেইল খুলবে না। এছাড়াও যদি ইমেইলের সংযুক্তি অংশে কোনো অযাচিত বা অপ্রয়োজনীয় ফাইল দেখতে পাও যা তুমি প্রত্যাশা করোনি, তাহলে এটি খুলবে না! এগুলির সাহায্যে প্রায়শই র‍্যানসমওয়্যার বা ভাইরাসের মতো ক্ষতিকর বস্তু কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে।