Issue area সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করার উপায়

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে মানুষ কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন ইত্যাদি ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত হয়ে একটি সামাজিক সম্প্রদায় তৈরি করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে এবং ছবি, ভিডিও ও বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে থাকে। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইমো, টিকটক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, হোয়াটস্‌ আপ, লিংকড্‌ ইন ইত্যাদি হলো কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উদাহরণ। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে এসব সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগ করা যায়। বর্তমানে শুধু যোগাযোগের ক্ষেত্রেই নয়, বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বার্তা আদান প্রদান, ছবি, ভিডিও শেয়ার করার জন্যও এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করতে আমাদের উক্ত মাধ্যমগুলোর জন্য নির্দিষ্ট অ্যাপ প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে হবে। যেমন- ফেসবুক ব্যবহারের জন্য Facebook নামক অ্যাপটি, ইমো ব্যবহার করার জন্য Imo নামক অ্যাপটি, হোয়াটস্‌ অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য Whatsapp নামক অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। এছাড়াও আমরা সামাজিক মাধ্যমগুলোর ওয়েব সাইটে প্রবেশ করে যোগাযোগ করতে পারি। যেমন- ফেসবুকের ওয়েবসাইট হলো- http://www.facebook.comহোয়াটস্‌ অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগের জন্য ওয়েব সাইট হলো- https://web.whatsapp.com/ইন্সটাগ্রামের ওয়েবসাইট হলো- https://www.instagram.com/যোগাযোগের জন্য সর্বপ্রথম আমাদেরকে এই মাধ্যমগুলোর একটি অ্যাকাউন্ট থাকা লাগবে। ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট থাকলে যেমন আমরা অন্যান্য অ্যাকাউন্টের সাথে টাকা লেনদেন করতে পারি তেমনি ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাউন্ট থাকলে আমরা অন্যান্য একাউন্টের মানুষটির সাথে যোগাযোগ করতে পারি। দুইটি উপায়ে আপনি এই সামাজিক মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন ।১) মোবাইল ফোন নম্বরের মাধ্যমে (যেমন – হোয়াটস্‌ অ্যাপ, ইমো, ভাইবার, মেসেঞ্জার)২) ইমেইল একাউন্টের মাধ্যমে(যেমন- ফেইসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, লিংকড ইন) এই বিভিন্ন ধরনের সামাজিক মাধ্যমগুলো আমরা বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ করতে ব্যবহার করে থাকি। এসকল ক্ষেত্রে মোবাইলের ‘মেসেজ’ অপশনের মত এই মাধ্যমগুলোতেও অন্যদের মেসেজ দেওয়ার জন্য একটি অপশন থাকে। সেই অপশনটি থাকতে পারে Chats অথবা Messages নামে। সেই অপশনটিতে গিয়ে আপনি যাকে মেসেজ পাঠাতে চান তার নাম লিখে সার্চ করলে তার নামের একটি Chat box চলে আসবে এবং সেখানে আপনি আপনার মেসেজ লিখে তাকে পাঠিয়ে দিতে পারবেন। একই ভাবে অন্য কেউ আপনাকে মেসেজ পাঠালে সেই Messages বা Chats অপশনে গেলেই আপনি তা দেখে সেটির উত্তর বা রিপ্লাই করতে পারবেন। এছাড়া আপনি আপনার মেসেজের সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ছবি বা ফাইলও পাঠাতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার ডিভাইস থেকে ফাইলটি সিলেক্ট করে নিয়ে ওই সামাজিক মাধ্যম দিয়ে পাঠিয়ে দিতে পারবেন।এভাবে সামাজিক মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে আমরা দেশ-বিদেশে সবার সাথে যোগাযোগ করতে পারি।  

আরও জানুন
Issue area সামাজিক মাধ্যমে (মোবাইল ফোন কল, বার্তা আদান প্রদান, ইমেইল, মেসেঞ্জার কিংবা হোয়াটসএপ ইত্যাদি) যোগাযোগের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য আচরণ

অতি সহজ উপায়ে কম সময়ের মধ্যে যোগাযোগ সম্ভব বিধায় বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে। আধুনিক যুগে মানুষজন যোগাযোগের জন্য মূলত এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ওপরই নির্ভরশীল। বিভিন্ন বয়স, ধর্ম, জাতি ও পেশার মানুষ এই মাধ্যমের দ্বারাই একে অপরের সাথে যুক্ত। এই জন্য এই মাধ্যমগুলোতে যোগাযোগের ক্ষেত্রে উপযুক্ত  আচরণগুলো জেনে নিতে হবে যা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত।সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য আচরণ:১) বন্ধু, পরিচিতজন, সহপাঠী, সহকর্মী , আত্মীয়-স্বজন সকলের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সম্বোধন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যার সাথে যোগাযোগ করছেন সেই অনুযায়ী সম্বোধন করুন। কেবল মাত্র নিজের প্রয়োজনে যোগাযোগ না করে সাধারণ খোঁজ খবর নেওয়ার জন্যও সকলের সাথে যোগাযোগ রাখা উচিত। ২) বয়স্ক বা গুরুত্বপূর্ণ কারও সাথে যোগাযোগের সময় ভাষার সংক্ষিপ্ত রুপ যেমন LoL, ASAP এই টাইপের বিষয়গুলো বর্জন করা উচিত।৩) ব্যক্তিগত যোগাযোগ কিংবা সাধারণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে কারো বিরক্তি উদ্রেক করছেন কিনা খেয়াল করুন। ব্যক্তিগত মেসেজ দেয়ার ক্ষেত্রে সম্মান রেখে কথা বলুন এবং ফোন দেয়ার পূর্বে প্রয়োজনে অনুমতি নিয়ে নিন। মেসেঞ্জার বা অন্য কোন মাধ্যমে সরাসরি কল করার আগে অনুমতি নিয়ে নিন। অপ্রয়োজনীয় ফোন দিবেন না। যোগাযোগের ক্ষেত্রে সময়ের বিষয়টা মাথায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন অফিশিয়াল কোন প্রয়োজনে যোগাযোগ করলে অফিস সময়ে যোগাযোগ করা ভালো। আবার রাত ১২টায় স্বল্পপরিচিত কাউকে অনলাইনে দেখেই আমরা বার্তা পাঠিয়ে দিই, যা উচিৎ নয়। ৪) অফিসিয়াল বা ফরমাল কাজের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চেয়ে ইমেইল বেশি উপযুক্ত মাধ্যম। তাই এসব ক্ষেত্রে মেসেঞ্জার, সোশ্যাল মিডিয়া বা এ ধরনের মাধ্যম পরিহার করে ইমেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা উচিত।৫) পছন্দের কোন ছবি কিংবা উক্তি অথবা মজার কোন ভিডিও আমরা যখন তখন যাকে তাকে মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে দিই। ঐ ব্যক্তির সাথে নিজের সম্পর্কের ধরণ কেমন সেসব চিন্তা না করেই অনেকসময় এরকম আচরণ করে বসি আমরা, যা অনেকেরই বিরক্তির উদ্রেক করে। একইভাবে বিভিন্ন মেসেঞ্জার গ্রুপেও এধরণের কনটেন্ট শেয়ার করার সময় ভেবে চিন্তে করতে হবে।  ৬) খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া একবার একজনকে কল করে না পেলে দ্বিতীয়বার কল করা উচিত নয় বরং কলের জন্য অপেক্ষা করা উচিত। কেননা সে কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকতে পারে। আবার, একইভাবে কেউ যদি কলটি কেটে দেয়, তাহলে তাকে আবার কল দিয়ে বিরক্ত করা যাবে না। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগের সময় এমন আচরণ প্রকাশ করব যাতে মাধ্যমগুলোর সকল ব্যবহারকারী বিনা সংকোচে এই মাধ্যম গুলো ব্যবহার করতে পারে। খেয়াল রাখবেন, এই ডিজিটাল পরিমণ্ডলে আমরা যাতে কারো জন্য অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না করে ফেলি।

আরও জানুন
Issue area অনলাইন যোগাযোগে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ভিন্নতা/বৈচিত্রের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও এক্ষেত্রে করণীয় বিষয় সমূহ

ইন্টারনেট এর বিস্তারের সাথে সাথে ডিজিটাল পরিমণ্ডলে মানুষের বিচরণ দিন দিন বাড়ছে। বিভিন্ন সমাজের, বিভিন্ন মতের এবং বিভিন্ন পেশার মানুষ তাদের ভিন্ন ভিন্ন আদর্শ এবং মতামত  এই ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ করছেন। এতে করে খুবই স্বাভাবিক নিয়মেই তাদের কথা বার্তায় এবং আচরণে আমরা বিচিত্রতা দেখতে পাই। মানুষের সাথে মানুষের চিন্তা, চেতনা, বিশ্বাস, মতামত কিংবা আচরণের এই পার্থক্য অনেক সময় সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বিনষ্ট করে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। ডিজিটাল মাধ্যমে এই বৈচিত্র্যের প্রতি পারস্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধা বজায় রাখা খুব জরুরি। এজন্য বিভিন্ন মত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখার জন্যে আমাদের কী করা উচিত তা জেনে নিতে হবে। ১। বাস্তব জীবনে যেকোনো কিছু বলা বা করার ক্ষেত্রে শুরুতে আমরা ভেবে নিই যে সেই কথা বা কাজ অন্য কোন ব্যক্তির বিরক্তির কারণ বা ক্ষতির কারণ হবে কিনা। অনলাইন মাধ্যমেও ঠিক একই ভাবে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে এসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মনে রাখা জরুরী যে, এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমরা মানুষের কল্যাণে এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবো মানুষে মানুষে ভেদাভেদ তৈরিতে নয়। । তাহলে দেখবেন আমাদের আচরণের মধ্যে নেতিবাচকতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে।২। আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের বিশ্বাসের এবং মতের মানুষ পাশাপাশি বাস করে। আপনার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে অন্য সবার দৃষ্টিভঙ্গি মিলতেই  হবে এমন  ধারণা করাটা অনুচিত। সমাজে বৈচিত্র্য খুব স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। এই বৈচিত্র্য মেনে নিয়ে আমাদের সকলের মতামত, বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। এতে করে আপনি অনলাইন এবং অফলাইন সব জায়গাতেই তিক্ততা এড়িয়ে চলতে পারবেন।৩। অনলাইনে কোনো মন্তব্য প্রকাশের আগে একটু খেয়াল রাখবেন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ছোট করা হচ্ছে কিনা বা আপনার কথাতে কারো প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ পাচ্ছে কিনা। কেননা আপনার বক্তব্য যদি কোনো ব্যক্তির অনুভূতিতে আঘাত আনে তাহলে স্বভাবতই তিনি বিরক্ত হবেন এবং প্রতিক্রিয়াও দেখাতে পারেন। এমতাবস্থায় আপনি সহনশীল আচরণ প্রদর্শন করতে অপারগ হলে পারস্পরিক অসম্মানের ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে।৪। যে কোন মন্তব্য, ছবি, ভিডিও বা যে কোনো তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিবেন যাতে কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ রটানো, সম্মানহানী বা অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মত ব্যাপার আসলেই ঘটছে কিনা। এছাড়া, কারো ব্যক্তিগত বিষয় যা সে প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক এমন বিষয় যাতে প্রকাশিত না হয় সে ব্যাপারেও সচেতন থাকা দরকার।৫। কোনো ইস্যুতে মতের মিল না হওয়া এবং তার জন্যে তর্ক বিতর্ক হওয়া খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। এক্ষেত্রে আপনি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে পরিচিত বা অপরিচিত কারো সাথে দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। কেননা ব্যক্তিগত আক্রমণ বা জাতি-ধর্ম-বর্ণ-মতের প্রতি আক্রমণ না করে যুক্তি দিয়ে সুন্দরভাবে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করলে পারস্পরিক সম্মান বজায় থাকবে।৬। আপনার নিজের ধর্ম, মত, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিচয়ের জায়গা থেকে কিছু প্রচার করার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই অন্য কোন বিশ্বাসের মানুষকে না বুঝে আঘাত দেয়া হয়ে যায়। এমন অনেক উদাহরণ আপনার চারপাশে আপনি দেখতে পাবেন। এজন্য এই ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকা দরকার ।৭। আপনি অবশ্যই ভদ্র ও শোভন উপায়ে এবং রাষ্ট্রীয় আইন মেনে আপনার ধর্ম, আদর্শ বা সংস্কৃতি প্রচার করতে পারেন। এতে করে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় থাকে। অন্যথায় তিক্ততা বাড়বে, অসম্মান বাড়বে এবং সংঘাত বাড়বে। আমাদের মনে রাখা উচিৎ কারো চিন্তা, আদর্শ বা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কথা বললে যে কারোরই খারাপ লাগতে পারে।৮। অন্য কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ব্যাপারে কথা বলার ব্যাপারে সচেতন থাকবেন। আপনার সাথে তার সম্পর্ক বিবেচনা করে আচরণ প্রদর্শন করবেন। ইনবক্সে বা কমেন্টে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করে কাউকে বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকুন।৯। পরিচিত বা ঘনিষ্ঠ কেউ না হলে সম্বোধনের ক্ষেত্রে ‘আপনি’ ব্যবহার করবেন। অপরিচিতদের ক্ষেত্রে কখনো ‘তুমি’ বা ‘তুই’ সম্বোধন করে কথা বলা উচিত না।১০। কোনো ব্যক্তির সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে তার ধর্ম, সংস্কৃতি, জাতিগত পরিচয়, ভাষা, লিঙ্গ, শারীরিক বা অন্য কোন প্রতিবন্ধকতা ইত্যাদির জন্য কোন বৈষম্য না করে সবাইকে সমানভাবে দেখা এবং সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। কারও বৈচিত্র্য বা ভিন্নতার জন্য কোন ধরনের আক্রমণ, বিদ্বেষ বা বৈষম্য করা অনুচিত। এছাড়া কথায় অন্যের ধর্ম, লিঙ্গ, জাতি বা শারীরিক বৈশিষ্ট্য/পরিচয়কে সামনে নিয়ে আসা উচিত নয়।  পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় না রাখতে পারলে ডিজিটাল মাধ্যম বা বাস্তব জীবনে কোথাও স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখা সম্ভব না। বিশেষ করে ডিজিটাল মাধ্যমে আরো সচেতন থাকা উচিত কারণ এখানে মানুষটাকে আপনি সামনাসামনি দেখছেন না, সেজন্য আপনার এই আচরণ বা মন্তব্যের কারণ কী তা বোঝা সহজ নয়। এজন্য যে কোনো ধরনের অনলাইনে যোগাযোগে আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সম্মান বজায় রেখে আচরণ প্রদর্শন করা উচিৎ।

আরও জানুন
Issue area সামাজিক মাধ্যমে করণীয় ও বর্জনীয়

বর্তমানে ইন্টারনেটের ব্যবহার মানুষের জীবনে একটি নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যাপার। সহজে যোগাযোগ থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্কিং এমনকি জীবিকার মত ব্যাপার গুলোর জন্যও অনলাইনের উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা ও দেখা দিচ্ছে। স্কুল কলেজের বিভিন্ন কাজ জমা দেওয়া থেকে শুরু করে শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর (যেমন – হোয়াটস্‌ অ্যাপ, ভাইবার ,মেসেঞ্জার ) ব্যবহার বাড়ছে। এজন্য আপনাদের ভালভাবে জানতে হবে এই মাধ্যমে কী করা উচিত এবং কী করা উচিত না। জেনে বুঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো ব্যবহার করলে অনেক ঝামেলা এড়িয়ে চলা যায়। করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় গুলো -১। শ্রদ্ধাশীল হোন।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কারো সাথে আলাপের ক্ষেত্রে আমরা হয়তো সামনাসামনি আলাপ করছি না, কিন্তু প্রতিটা অনলাইন একাউন্ট পিছনে একজন মানুষই আছে এবং আমাদের মনে রাখা উচিত, আমরা সকলেই ভিন্ন ভিন্ন মানসিক অবস্থা, ভিন্ন ভিন্ন মতবাদ ধারণ করি। এজন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রেখে যোগাযোগ করুন।২। আপনার মন্তব্য কী বোঝাচ্ছে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।বাস্তব জগতে কথা বলার সময় যোগাযোগের বড় একটা অংশ হিসেবে কাজ করে বাচনভঙ্গি। অনেক কিছুই আমরা মুখে না বললেও বাচনভঙ্গি দেখে বুঝে নেই। আবার সরাসরি যোগাযোগের ক্ষেত্রে কেউ কিছু না বুঝলে পুনরায় তা বুঝে নেওয়ার সুযোগ থাকে ৷ কিন্তু অনলাইনে কোন একটা লেখা বা কথায় এই বাড়তি ব্যাপার গুলো থাকেনা। সেজন্য চেষ্টা করা উচিত যাতে বোধগম্য ভাষায় বলা যায়। নাহলে আপনার কথা ভুল বুঝে কেউ কষ্ট পেতে পারেন বা রেগে যেতে পারেন।৩। ঠাট্টা বিদ্রূপ করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।সামনাসামনি যোগাযোগ না হবার কারণে রম্য বা মজা করে বলা কথা অনেকে বুঝতে পারেন না। আবার অনেক সময় ইমোটিকন বা ‘LOL’ এই ধরণের কোড দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা বললেও আসলে রম্য বোঝানো হয়, যা অনেকেই বুঝতে পারেন না। সেজন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মজা করার ক্ষেত্রে সচেতন থাকা উচিত। আপনি যা লিখছেন তা আবারো ভালোমতো পড়ে দেখে নিন যে আপনার মজা করে লিখা কথাটি সবাই আসলেই বুঝবে কিনা।৪। অপরিচিত ব্যক্তির থেকে আপনার তথ্য নিরাপদ রাখুন।অনলাইনের প্রাইভেসি সেটিংস(Privacy Settings) এর মাধ্যমে আপনি নিজের তথ্য গোপন রাখতে পারবেন। ব্যক্তিগত তথ্য (যেকোনো পাসওয়ার্ড, বাসার ঠিকানা, ছবি ইত্যাদি) পাবলিক করে রাখলে; অর্থাৎ সবার সাথে শেয়ার করলে বিভিন্ন ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন। যেমন- আপনি যদি আপনার নিজের ছবি পাবলিক করে শেয়ার করেন সেক্ষেত্রে অপরিচিত কেউ চাইলে আপনার ছবিটি নিয়ে ফেক একাউন্ট খুলতে পারে। সেজন্য আগেভাগেই সতর্ক থাকা ভালো। ৫।ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট এবং গ্রুপের আমন্ত্রণ গ্রহণের আগে ভালোমতো দেখে নিন।সামাজিক মাধ্যমে নতুন কোন রিকুয়েস্ট আসলে সে ব্যক্তির একাউন্ট ভালোমতো দেখে নিন যে এই ব্যক্তিকে আপনি চেনেন কিনা, বা তাকে ফ্রেন্ড লিস্টে রাখতে আপনি স্বাছন্দ্যবোধ করবেন কিনা। গ্রুপ বা পেইজের আমন্ত্রণ গুলোর ব্যাপারে ও খেয়াল রাখবেন যে এগুলো আপনার প্রয়োজনীয় কিনা। যদি না হয় তাহলে গ্রহণ না করাই ভালো।৬। কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভালোমতো পড়ে এবং বুঝে নিন। অনলাইন ওয়েবসাইট ও অ্যাপের নিয়ম বা কমিউনিটি সট্যান্ডার্ড ভালো করে জেনে নিন। বেশিরভাগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর নিজস্ব কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড বা গ্রাহকদের অনলাইন আচরণের নির্দেশনা থাকে। নির্দেশনা গুলো ভালোমতো পড়ে সে অনুযায়ী আচরণ প্রদর্শন করবেন। ৭। সহানুভূতিশীল হোন।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের মানুষের মুখোমুখি হবেন। মনে রাখবেন, সবাই ভালোমতো জেনে বুঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তা কিন্তু না। সেক্ষেত্রে কেউ যদি অযাচিত কোন কথা বলে বা লেখে তাহলে তাদেরকে ভালোভাবে বোঝান। তারপরও না বুঝলে ওই সাইটের নিয়ম মেনে রিপোর্ট করুন বা ব্যবস্থা নিন। খুব বেশি আক্রমণাত্মক বা অপমানজনক আচরণ করবেন না।৮। কারো বিরক্তির কারণ হচ্ছেন কিনা খেয়াল রাখুন।ব্যক্তিগত যোগাযোগ কিংবা সাধারণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে কারো বিরক্তি উদ্রেক করছেন কিনা খেয়াল করুন। ব্যক্তিগত মেসেজ দেয়ার ক্ষেত্রে সম্মান রেখে কথা বলুন এবং মেসেজ দেয়ার আগে প্রয়োজনে প্রাপকের অনুমতি নিয়ে নিন। মেসেঞ্জার বা অন্য কোন মাধ্যমে সরাসরি কল করার আগে অনুমতি নিয়ে নিন। অপ্রয়োজনে ফোন দিবেন না।৯। অফিসিয়াল বা ফরমাল যোগাযোগে ইমেইল ব্যবহার করুন।অফিসিয়াল বা ফরমাল কাজের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চেয়ে ইমেইল বেশি উপযুক্ত মাধ্যম। তাই এ ধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর পরিবর্তে ইমেইল ব্যবহার করা উচিত।১০। তথ্যের সত্যতা যাচাই না করে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।আমরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আমরা নানা রকম তথ্য পেয়ে থাকি। সব তথ্যই কিন্তু সঠিক নয়। অনেকেই মজা করার জন্য, আবার কেউ কারো ক্ষতি সাধনের জন্য, আবার কেউ কেউ নিশ্চিত না হয়েই বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে থাকে। এজন্য আমরা তথ্যের সত্যতা যাচাই না করে কোনো সামাজিক মাধ্যমেই তা শেয়ার করব না। এতে করে অনেকের মধ্যেই বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে।

আরও জানুন
Issue area সাইবার বুলিং এর ক্ষতিকর প্রভাব, এর থেকে বিরত থাকা ও প্রতিরোধে করণীয়

ব্যক্তিগত তথ্য, নিজস্ব বিশ্বাস কিংবা স্পর্শকাতর ঘটনা ইত্যাদি ব্যবহার করে কাউকে হেনস্তা, বিব্রত বা অপমানিত করাকে বুলিং বলে। আর মোবাইল ফোন, কম্পিউটার এবং ট্যাবলেটের মতো ডিজিটাল ডিভাইসের সাহায্যে যদি বুলিং সংঘটিত হয় তখন তাকে আমরা সাইবার বুলিং বলি। সাইবার বুলিং ক্ষুদে বার্তা, চ্যাটিং বা কথোপকথন এবং অ্যাপের মাধ্যমে হতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া, ফোরাম বা গেমিং-এর মাধ্যমেও সাইবার বুলিং ঘটতে পারে। ছোট বড় সকল বয়সী মানুষে ওপর সাইবার বুলিং নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সহপাঠীদের দ্বারা সাইবার বুলিং এর শিকার হয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা যেমন স্কুলে যেতে চায় না ঠিক তেমনি ভাবে প্রাপ্ত বয়স্করাও যদি কর্মস্থলে তাদের সহকর্মীদের দ্বারা সাইবার বুলিং এর শিকার হন তাদেরও কাজের প্রতি অনীহা চলে আসে।বিভিন্ন ধরণের কাজকে সাইবার বুলিং এর অন্তর্গত বিবেচনা করা যায়। যেমন – ইন্টারনেট ব্যবহার করে কারো সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বলা, ক্ষতিকারক মন্তব্য করা, মিথ্যা তথ্য ছড়ানো ইত্যাদি। এতে যার সম্বন্ধে তথ্যটি শেয়ার করা হচ্ছে সে বিব্রত বা অপমানিত বোধ করতে পারে। আবার বিখ্যাত খেলোয়াড়, অভিনেতা, ব্যবসায়ী কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সারদের পোস্টে অনেক সময়েই আমরা আক্রমণাত্মক মন্তব্য দেখে থাকি। এগুলো এক ধরণের সাইবার বুলিং। অনেক সময়েই কোনো কাছের বন্ধুর ছবিতে বা পোস্টে তার কোনো ব্যক্তিগত ও স্পর্শকাতর মুহূর্তের ছবি, ঘটনা ইত্যাদি পোস্ট করে বন্ধুটিকে বিব্রত করে ফেলা হয়। এটিও এক ধরণের সাইবার বুলিং। আমরাও নিজের অজান্তেই অনেক সময়ে ঠাট্টার ছলে সাইবার বুলিং এর সাথে জড়িয়ে পড়ি। এজন্য এই বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে। সাইবার বুলিং এর বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো –১। আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া- সাধারণত সাইবার বুলিং এর শিকার হওয়া ব্যক্তি আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগে থাকে।২। সামাজিক আচরণে পরিবর্তন- বন্ধুদের সাথে মেলামেশা বা সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলে।৩। বিষন্নতা- সাইবার বুলিং এর শিকার ব্যক্তি সামাজিক মেলামেশা থেকে বিরত থেকে একাকিত্বকে আলিঙ্গন করে। ফলে বিষন্ন মনোভাবাপন্ন হয়ে থাকে। ৪। হীনমন্যতা- বিভিন্ন কাজের প্রতি অনীহা বা হীনমন্যতা দেখা দেয়। ফলে কাজে মনোনিবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ে।৫। মাদকাসক্তি- বিষন্নতার কারণে অনেক সময়ে অসৎ সঙ্গীদের সাথে মেলামেশা বাড়ে। যার ফলে মাদকাসক্ত হয়ে পড়তে পারে।৬। আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।সাইবার বুলিং থেকে বিরত থাকার জন্য এবং এটি প্রতিরোধে করণীয় কাজগুলো নিম্নরূপ-সাইবার বুলিং দুই ভাবে প্রতিরোধ করা যায়। যেমন-১। প্রযুক্তি ব্যবহার করে২। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে - নিজে এবং আশেপাশে সবাইকে সাইবার বুলিং করতে নিরুৎসাহিত করে।প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাইবার বুলিং প্রতিরোধ করার উপায়-- প্রথমত সম্পূর্ণ অপরিচিত কোন ব্যক্তির সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত হবার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এরপর, যদি নিজের সাথে কখনো সাইবার বুলিং এর ঘটনা ঘটলে স্পষ্ট করে নিষেধ করতে হবে যাতে উত্যক্তকারী নিজেকে সংশোধনের সুযোগ পান। যদি এরপরেও তিনি সংশোধন না হন, তবে তাকে আনফলো কিংবা আনফ্রেণ্ড করে দেয়া যায়।   - ব্লক/রিপোর্ট করে- ইন্টারনেটে কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে সাইবার বুলিং এর শিকার হলে সাথে সাথে সেই অ্যাকাউন্টকে ব্লক করে দিয়ে অথবা যথাযথ কর্তৃপক্ষ (যেমন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুক এর সিকিউরিটি টিম) এর নিকট অ্যাকাউন্টটি রিপোর্ট করে দেওয়ার মাধ্যমে সাইবার বুলিং প্রতিরোধ করা যায়।- কোনো মাধ্যম থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে হিংসাত্মক অথবা বিব্রতকর তথ্য, ঘটনা ইত্যাদি ছড়িয়ে দিলে তাকে ব্লক বা রিপোর্ট করার পাশাপাশি মিউট বা রেস্ট্রিক্ট করলে সেই অ্যাকাউন্ট বা মাধ্যম থেকে কোনো তথ্য আপনার কাছে আর আসবে না।-উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ফেসবুক, টুইটার বা ইন্সটাগ্রাম যেকোনো কমেন্ট বা মন্তব্যকে যাচাই করে থাকে। যাচাইকৃত তথ্যকে আধুনিক প্রযুক্তি (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) যদি হিংসাত্মক হিসেবে শনাক্ত করে তাহলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই মুছে দেওয়া হয়। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সাইবার বুলিং প্রতিরোধ করার উপায়-- শ্রেণীকক্ষে শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের সাথে সাইবার বুলিং এর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে সাইবার বুলিং সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি সাইবার বুলিং না করার মনোভাব তৈরি হবে।-   পারিবারিক পর্যায়ে সাইবার বুলিং সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে পিতামাতা অথবা বড়রা ছোটদের সাথে সাইবার বুলিং এর বিভিন্ন প্রভাব, সাইবার বুলিং এর শিকার হলে করণীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে ব্যক্তি পর্যায়ে সাইবার বুলিং বিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।-  সামাজিকভাবে সাইবার বুলিং প্রতিরোধ করতে সাইবার বুলিং সংক্রান্ত সভা-সেমিনার আয়োজন করা যেতে পারে। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অজান্তেই অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে কীভাবে সাইবার বুলিং এর সাথে জড়িয়ে পড়ছে তা জানানোর পাশাপাশি এর প্রভাবে সমাজের কী ক্ষতি হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। এর ফলে একটি সাইবার বুলিং বিরোধী সচেতন প্রজন্ম তৈরি করা সম্ভব হবে।

আরও জানুন
Issue area অভিভাবকদের প্রয়োজনে অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের উপায়

আগের যুগে মানুষ যোগাযোগ করার কাজে ব্যবহার করত চিঠি বা কবুতর। যোগাযোগে সময়ও লাগত প্রচুর। কিন্তু এখন মোবাইলের বাটন/স্ক্রিনে একটি চাপ দিয়েই যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে মুহুর্তের মধ্যেই। অর্থাৎ যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এই যোগাযোগ প্রযুক্তিতে এসেছে আমূল পরিবর্তন। বর্তমানে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বেশ বড় একটি জায়গা দখল করে নিয়েছে অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। এগুলোর মধ্যে কয়েকটির সাথে আমরা সকলেই কম-বেশি পরিচিত। উদাহরণস্বরূপ – ফেইসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ইমো, ভাইবার ইত্যাদি। এসব মাধ্যমে যেমন দুইজন মানুষ কেবল নিজেদের মধ্যেই যোগাযোগ করতে পারেন ঠিক তেমনি একই সাথে কয়েকজন মিলে গ্রুপেও যোগাযোগ করা যায়।সব কয়টি অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমেই গ্রুপ তৈরি করার প্রক্রিয়া প্রায় একই। ফেইসবুক মেসেঞ্জারে যোগাযোগের জন্য গ্রুপ খোলার ক্ষেত্রে আপনি নিচে উল্লিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন –(১) গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে মেসেঞ্জার অ্যাপটি ইন্সটল করুন এবং মেসেঞ্জারের মাধ্যমে আপনার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে লগ ইন করুন।(২) মেসেঞ্জারের হোমপেইজের উপরে ডান কোণে একটি ‘পেনসিল’ আইকন দেখতে পাবেন। সেটিতে ট্যাপ করুন।(৩) নতুন পেইজ থেকে ‘ক্রিয়েট এ নিউ গ্রুপ’ অপশন নির্বাচন করুন।(৪) এবার ‘অ্যাড পার্টিসিপেন্টস’ অপশন সামনে আসবে। আপনি যাদের নিয়ে গ্রুপটি গঠন করতে চান তাদের নাম নির্বাচন করুন। উল্লেখ্য যে, একটি গ্রুপ তৈরি করতে হলে আপনাকে ন্যূনতম ৩ জন সদস্য নির্বাচন করতে হবে। সদস্য নির্বাচন সম্পন্ন হলে উপরে ডান কোণায় ‘অ্যাড’ অপশন চাপুন। (৫) পরবর্তী ধাপে আপনার নতুন তৈরিকৃত গ্রুপের নাম লিখুন।(৬) সর্বশেষে ‘ক্রিয়েট’ অপশন ট্যাপ করুন।মেসেঞ্জার গ্রুপ ব্যবহার করে খুব সহজেই একটি গ্রুপের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব। কারণ এক্ষেত্রে সবাই একই সাথে একই সময়ে যুক্ত হতে পারে। নিচের ধাপগুলোর মাধ্যমে আপনি গ্রুপের সবার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন -(১) কাঙ্খিত গ্রুপের নাম ট্যাপ করে গ্রুপটি ওপেন করুন।(২) টেক্সট বক্সে আপনার মেসেজ টাইপ করুন।  (৩) ছবি/ভিডিও/ভয়েস মেসেজ পাঠাতে চাইলে টেক্সট বক্সের পাশে ক্যামেরা/গ্যালারি/মাইক আইকন ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় ছবি/ভিডিও/অডিও যুক্ত করুন ।(৪) এরপর টেক্সট বক্সের ডান পাশে সেন্ড অপশন চেপে মেসেজটি পাঠিয়ে দিন। গ্রুপের সকল সদস্য আপনার মেসেজ দেখতে পাবেন এবং রিপ্লাই করতে পারবেন।(৫) গ্রুপের সদস্যদের সাথে ভয়েস/ভিডিও কলের মাধ্যমে যুক্ত হতে চাইলে উপরে ডান কোণায় ফোন (ভয়েস কল) অথবা ভিডিও ক্যামেরা (ভিডিও কল) আইকন চাপুন। তাহলে সকল সদস্যদের কাছে আপনার কল চলে যাবে এবং সবাই একত্রে কলের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই ফোনের ইন্টারনেট কানেকশন সচল থাকতে হবে।

আরও জানুন
Issue area অনলাইন নৈতিকতা সম্পর্কে ধারণা

অনলাইন মাধ্যমগুলোতে আমাদের বিচরণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা এখন অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়ছি। যোগাযোগের উদ্দেশ্যে আমরা প্রতিনিয়ত অনলাইন মাধ্যমগুলো ব্যবহার করছি। আমরা যাতে অনলাইনে এমন কিছু করে না বসি যা পরবর্তীতে সমস্যার সৃষ্টি করবে, সেদিকে আমাদের বিশেষ সচেতনতা প্রয়োজন। তাই অনলাইন নৈতিকতা সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।অনলাইনে যুক্ত থাকা অবস্থায় আমাদের যে ধরনের আচরণ করা উচিৎ, তার যাবতীয় নির্দেশনাই অনলাইন নৈতিকতা হিসেবে পরিচিত। এগুলো সাধারণত একটি দেশের আইন এবং ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। অনলাইন নৈতিকতা নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়ে থাকে। যথা –ক) ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তাখ) ব্যক্তি স্বাধীনতার যথোচিত ব্যবহারগ) ব্যক্তি মর্যাদানিম্নে এর মূল দিকসমূহ ব্যাখ্যা করা হলো -(১) রাষ্ট্রদ্রোহী পোস্ট/বক্তব্য প্রচার না করারাষ্ট্রের প্রতি অসম্মানজনক কিংবা রাষ্ট্রদ্রোহীতামূলক/রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কোন ধরনের পোস্ট/বক্তব্য অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা থেকে নিজে বিরত থাকুন এবং অন্যকেও বিরত রাখুন। যদি এমন কোন পোস্ট/বক্তব্য আপনার নজরে আসে তাহলে তা রিপোর্ট করুন। (২) নিজের বা অন্য কারো ব্যক্তিগত তথ্য যাতে ঝুঁকির সম্মুখীন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখাঅনলাইন মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সবসময় নিজের অথবা অন্য কারো ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। নিজের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী সবসময় নিরাপদ রাখার চেষ্টা করুন। সেই সাথে অন্য কোন ব্যক্তির তথ্যও যদি আপনার কাছে থেকে থাকে তাহলে সেগুলোও নিরাপদ রাখতে সচেষ্ট হবেন।(৩) অন্যের জন্য সম্মানহানীকর এমন কাজ না করাঅনলাইনে কোন মানুষের জন্য মানহানীকর কিছু করা যাবে না। সকলের সম্মান বজায় রাখার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখবেন, আপনি কারো সম্মান রক্ষা করলে সেও আপনার সম্মান রক্ষা করবে। (৪) সকল শ্রেণি-পেশা-বয়সের মানুষের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করাঅনলাইনে বিভিন্ন রকমের মানুষের সাথে আমাদের প্রতিনিয়ত পরিচয় ঘটে অথবা যোগাযোগ করার দরকার হয়। তাই কখনোই কাউকে ছোট মনে করবেন না। বড়-ছোট, ধনী-গরিব সবাইকেই যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবেন।(৫) কারো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে অনলাইন মাধ্যমসমূহ ব্যবহার না করাআপনার কোন কাজে যাতে কেউ কখনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে অবশ্যই সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। ইচ্ছাকৃতভাবে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে অন্যের ক্ষতি সাধনের লক্ষ্যে অনলাইন মাধ্যমগুলো ব্যবহার করবেন না।

আরও জানুন
Issue area ডিজিটাল পরিমণ্ডলে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা

অনলাইন মাধ্যম গুলোতে আমাদের বিচরণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা এখন অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়ছি। যোগাযোগের উদ্দেশ্যে আমরা প্রতিনিয়ত অনলাইন মাধ্যম গুলো ব্যবহার করছি। বিভিন্ন ধরনের সেবা গ্রহণ করছি। এজন্য আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আমরা যাতে অনলাইনে এমন কিছু করে না বসি যা পরবর্তীতে সমস্যার সৃষ্টি করবে। তাই ডিজিটাল পরিমণ্ডলে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মূল্যবোধ এবং অনলাইন নৈতিকতা সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।পারস্পরিক শ্রদ্ধা -ডিজিটাল মাধ্যমে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রাখাটা খুবই জরুরি। ‘পরমতসহিষ্ণুতা’ বলে একটা শব্দ আমরা হয়ত অনেকেই জানি। এই শব্দের অর্থ হচ্ছে অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। এই সমাজে সকলেই ভিন্ন ব্যক্তিত্ব, ভিন্ন বিশ্বাস ও চিন্তা নিয়ে বেড়ে ওঠে। সকলের ভিন্নমতকে শ্রদ্ধা করতে পারলে, তর্ক-বিতর্ক-দ্বিমত করার পরেও পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রাখতে পারলে অনেক সমস্যা এমনিতেই সমাধান হয়ে যায়। অনেক জটিলতা এড়িয়ে চলা যায়।মূল্যবোধ- মূল্যবোধ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে একটি পথ প্রদর্শকের মতো সহায়তা করে। এর মাধ্যমে আমরা সমাজের ভালো কাজগুলো সমর্থন করার শক্তি পাই এবং অন্যান্য অশ্লীল ও কুরুচি পূর্ণ কাজকে প্রত্যাখ্যান করতে পারি। ডিজিটাল পরিমণ্ডলে বিচরণকালে আমাদের এই পারস্পরিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে হবে। অনলাইন নৈতিকতা -অনলাইনে যুক্ত থাকা অবস্থায় আমাদের যে ধরনের আচরণ করা উচিৎ, তার যাবতীয় নির্দেশনাই অনলাইন নৈতিকতা হিসেবে পরিচিত। এগুলো সাধারণত একটি দেশের আইন এবং ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। অনলাইনে যোগাযোগ এবং বিভিন্ন সেবা গ্রহণকালে আমাদের অনলাইন মাধ্যমসমূহে নৈতিকতা মেনে চলতে হবে। ডিজিটাল পরিমণ্ডলে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা রক্ষার্থে করণীয়(১) আপনার কোনো ব্যবহার যেটা অন্যের বিরক্তির কারণ হতে পারে, সেই ধরণের ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে। এজন্য ডিজিটাল পরিমণ্ডলে যে কোনো আচরণ প্রদর্শনের পূর্বে ভেবে নিন।(২) রাষ্ট্রের প্রতি অসম্মানজনক কিংবা রাষ্ট্রদ্রোহী কোন ধরনের পোস্ট/বক্তব্য অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা থেকে নিজে বিরত থাকুন এবং অন্যকেও বিরত রাখুন। যদি এমন কোন পোস্ট/বক্তব্য আপনার নজরে আসে তাহলে তা রিপোর্ট করুন। (৩) অনলাইন মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সবসময় নিজের অথবা অন্য কারো ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। নিজের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী সবসময় নিরাপদ রাখার চেষ্টা করুন। সেই সাথে অন্য কোন ব্যক্তির তথ্যও যদি আপনার কাছে থেকে থাকে তাহলে সেগুলোও নিরাপদ রাখতে সচেষ্ট হবেন। এছাড়া কারো ব্যক্তিগত বিষয় যা সে প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক এমন বিষয় প্রকাশিত না হয় সে ব্যাপারেও সচেতন থাকা দরকার। (৪) সমাজের বৈচিত্র্য মেনে নিয়ে সকল ধরনের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনি অনলাইন-অফলাইন সবখানেই তিক্ততা এড়িয়ে চলতে পারবেন।(৫) অনলাইনে কিছু লেখা বা বলার ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখবেন যে আপনি যা লিখছেন বা বলছেন তাতে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ছোট করা হচ্ছে কিনা, কারো ব্যাপারে কটু মন্তব্য বা বিদ্বেষ প্রকাশ পাচ্ছে কিনা। নতুবা আপনার লেখায় সেই বিশ্বাসের ব্যক্তি স্বভাবতই বিরক্ত হবে, প্রতিক্রিয়া দেখাবে। তার প্রতিউত্তরে আপনি যদি সহনশীল আচরণ করতে না পারেন তাহলে পারস্পরিক অসম্মানের ক্ষেত্র তৈরি হবে।(৬) অনলাইনে বিভিন্ন রকমের মানুষের সাথে আমাদের প্রতিনিয়ত পরিচয় ঘটে অথবা যোগাযোগ করার দরকার হয়। তাই কখনোই কাউকে ছোট মনে করবেন না। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাইকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবেন।(৭) ভিন্নমতের মানুষের সাথে দ্বিমতের  ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন যাতে কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা জাতি-ধর্ম-বর্ণ-মতের প্রতি আক্রমণ করা না হয়। এতে করে পারস্পরিক সম্মান নষ্ট হবে না। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে- যুক্তি দিয়ে সুন্দরভাবে আপনার বক্তব্য উপস্থাপন করা।(৮) আপনার নিজের ধর্ম, মত, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিচয়ের জায়গা থেকে অনলাইনে কিছু শেয়ার করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন যাতে অন্য কোন ধর্মের বা মতের মানুষ তাতে আঘাত না পায়।(৯) অন্য কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ব্যাপারে কথা বলার ব্যাপারে সচেতন থাকবেন। আপনার সাথে তার সম্পর্ক বিবেচনা করে আচরণ করবেন। ইনবক্সে বা কমেন্টে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার কোনো আচরণ কারো জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে যাচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

আরও জানুন