এই সময়ে অনেক কম বয়সেই শিশুরা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করছে। শিশুদের জন্য ডিভাইস নির্বাচনের জন্য আলাদা কিছু বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। কেননা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ডিভাইস নির্বাচন আর শিশুদের জন্য ডিভাইস নির্বাচন এক নয়। শিশুদের ব্যবহার, মনস্তত্ত্ব, আচরণ এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে ডিভাইস বাছাই না করলে সে ডিভাইস ব্যবহার শিশুর জন্য সুবিধাজনক নাও হতে পারে। শিশুকে ডিভাইস দেয়ার সঠিক বয়স কোনটি?এই বিষয়টা আসলে শিশুর মানসিক পরিপক্বতার উপরে নির্ভর করে। অনেক শিশু কম বয়সেই ডিভাইসের ব্যাপারে জানে, নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু অনেকেই আছে যারা এই কাজগুলোতে পারদর্শী নয়। অবস্থা যাই হোক, কোন অবস্থাতেই শিশুকে ২ বছর বয়সের আগে ডিভাইস দেওয়া যাবে না। ২ বছরের পরেও ডিভাইস দেয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে এই ডিভাইসটি শিশুটির প্রয়োজন কি না। প্রয়োজন না হলে শিশুকে ডিভাইসের সংস্পর্শে আনার কোন প্রয়োজন নেই। শিশু যেমনই বা যে বয়সেরই হোক ডিভাইস আসক্তি তৈরি হতে পারে যেমনটা বড়দের হয়। আবার শিশুর একাডেমিক প্রয়োাজনের আগে ডিভাইস ব্যবহারের প্রয়োজন হলে শুধু বড়দের সাথে বসে কিছুক্ষণের জন্য (অবশ্যই ২ বছরের আগে নয়) ব্যবহার করতে পারে। সেক্ষেত্রে ২ বছর বয়সের পর দৈনিক সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট এবং ৫ বছর বয়সের পর ৬০ মিনিট দেখতে বা ব্যবহার করতে পারে। শিশুকে ডিভাইস দেয়ার আগে নিজেকে এই প্রশ্নগুলো করুন তাহলে ডিভাইস দেয়ার সময় হয়েছে কিনা তা বুঝতে পারবেন – ১। ডিভাইস দেয়ার উপযুক্ত বয়স কোনটি? এই বয়স হয়েছে কী? ২। অনলাইনের ঝুঁকি থেকে নিরাপদে থাকতে পারবে তো?৩। কোন কোন কাজে ডিভাইসটি ব্যবহার করবে?৪। ডিভাইসটি কি আসলেই প্রয়োজন?৫। ডিভাইস আসক্তির জন্য পড়াশোনা ও ব্যক্তিজীবনের ক্ষতি হবে না তো? শিশুদের জন্য ডিভাইস নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয় কোন ধরনের ডিভাইস দিবেন? (যেমন - কম্পিউটার, ফোন, ট্যাব)এগুলোর মধ্যে কোন ডিভাইস দিবেন সেটি প্রয়োজনের উপরে নির্ভর করে। শিশুর কাছে জানতে চান তার কোন কাজের জন্য ডিভাইস প্রয়োজন অথবা অভিভাবক হিসেবে আপনি যখন বুঝতে পারবেন যে তার কোন নির্দিষ্ট কাজের জন্য ডিভাইস প্রয়োজন তখন সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন। যদি তার কোডিং, প্রোগ্রামিং বা ডিজাইন করার মত জটিল কাজ করার প্রয়োজন হয় তাহলে তাকে কম্পিউটার কিনে দিতে পারেন। অন্যথায় মোবাইল ফোন বা ট্যাবলেট কিনে দিতে পারেন। ই-বুক পড়া, গেইম খেলা, কার্টুন দেখার মত কাজগুলোর জন্য ট্যাব ভালো অপশন। অভিভাবকরা সাধারণত এমন অ্যাপ চান যেগুলো শিক্ষামূলক, বাচ্চার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজন হবে। কিন্তু শিশুদের প্রধান আগ্রহ হচ্ছে বিনোদন ও খেলা কেন্দ্রিক অ্যাপের দিকে। এই দুই চাওয়াকে মাথায় রেখে ডিভাইসের অ্যাপ নির্বাচন প্রয়োজন। ডিভাইসের ধরন প্রয়োজন অনুযায়ী আলোচনা করে ঠিক করে নিবেন। ডিভাইসটি পানি নিরোধক (water-resistant) কিনাশিশুদের ব্যবহৃত ডিভাইস পানিতে পড়েযাবার সম্ভাবনা থাকে বা ডিভাইসের উপরে তরল কিছু পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সেজন্য শিশুদের ডিভাইস পানি নিরোধক হওয়াটা জরুরি। ডিভাইস যদি পানি নিরোধক না হয় সেক্ষেত্রে ডিভাইসের কভারটা পানি নিরোধক দেখে কিনুন। ডিভাইসটি টেকসই কিনাশিশুদের হাত থেকে ডিভাইস পরে যাওয়া বা কোথাও আঘাত লেগে ভেঙে যাবার প্রবণতা থাকে। সেজন্য টেকসই হবে এমন ডিভাইস নির্বাচন করুন। পাশাপাশি ডিভাইসে ভালো ব্যাক-কভার এবং স্ক্রিনে স্ক্রিন প্রটেক্টর লাগিয়ে দিলে হাত থেকে পরে গেলেও ভাঙার সম্ভাবনা কম থাকে। ডিভাইসের স্টোরেজশিশুদের জন্য কেনা ডিভাইসগুলোতে স্টোরেজ বেশি হওয়া প্রয়োজন। কেননা তারা অনেক অ্যাপ ইন্সটল করে ডিভাইসের স্টোরেজ দ্রুতই ফুল করে দিতে পারে। পাশাপাশি ছবি, ভিডিও, গেইম মেমোরিতে রাখার জন্য পর্যাপ্ত স্টোরেজের প্রয়োজন হয়। ডিভাইসের সাইজ কেমন হবে?ডিভাইসের সাইজ খুব বেশি বড় বা ছোট না হওয়াই ভালো। বেশি বড় হলে ডিভাইস ব্যবহার করা শিশুর জন্যে অসুবিধাজনক হয়ে যায়। আবার বেশি ছোট হলে চোখের উপরে বেশি চাপ পরে যায়। সেজন্য ডিভাইসের আকার কেমন হবে তা বিবেচনা করে কেনা উচিত। ডিভাইসের নিরাপত্তা ব্যবস্থাডিভাইসে স্ক্রিন লক এর ব্যবস্থা রাখুন। একই সাথে প্রয়োজনীয় এন্টিভাইরাস ইন্সটল করে নিন। ডিভাইসের সাথে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অ্যাপ যুক্ত করা সম্ভব কিনা তা জেনে নিন। কেননা শিশুদের ডিভাইসে নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য এসব অ্যাপের মাধ্যমে মনিটরিং করা প্রয়োজন হবে। একটি বিকল্পধরুন আপনার সন্তানকে ইন্টারনেট মাধ্যম ব্যবহার করা যায় এমন কোন ডিভাইস দিতে চাচ্ছেন না। আপনার উদ্দেশ্য আসলে তার পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় ই-বুক পড়ার জন্য একটি ডিভাইস কেনা। সেক্ষেত্রে ভালো অনেক ই-বুক রিডার বাজারে পাবেন যেগুলো ই-বুক পড়ার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
আরও জানুনঅপ্রয়োজনীয় অ্যাপ্স বাদ দেয়ামোবাইল ফোন কেনার পর দেখবেন অনেক অ্যাপ্স আগে থেকেই ফোনে ইন্সটল করা থাকে। এসব অ্যাপ্স এর অনেকগুলোই আমাদের প্রয়োজন পড়ে না। এসব অ্যাপ্স এর মধ্যে যেগুলা প্রয়োজন হয় সেসব ছাড়া বাকিগুলা বাদ দিয়ে দেয়াই উচিত। নাহলে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ্স দিয়ে ফোনের স্টোরেজ ভরে থাকবে, প্রয়োজনীয় অ্যাপ্স ইন্সটল করার সুযোগ পাবেন না।চলুন জেনে নেয়া যাক যে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ্স বাদ দেয়ার জন্য কী করবেন?- অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সেটিংস এ গিয়ে apps অপশনে যান।- যে অ্যাপ বাদ দিতে চান এটাতে ক্লিক করুন- এখানে ফোর্স স্টপ অথবা ডিজেবল/আনইন্সটল নামে দুইটি অপশন দেখতে পাবেন- ডিজেবল/আনইন্সটল এ ক্লিক করুন- Yes/disable সিলেক্ট করুন- অ্যাপটি আনইন্সটল হয়ে যাবে।কিছু সিস্টেম অ্যাপ আছে যা আপনার অপ্রয়োজনীয় কিন্তু সেসব অ্যাপ বাদ দেয়ার সুযোগ রাখা হয় নি। এসব অ্যাপ অপ্রয়োজনীয় হলেও বাদ দেয়া যায়না অনেক সময়। ব্রাইটনেস কন্ট্রোলকম্পিউটার বা মোবাইলের ব্রাইটনেস কন্ট্রোল করা না হলে তাতে কাজ করতে যেমন অসুবিধা হয়, তেমনি এই কারণে চোখেরও ক্ষতি হয়। আপনার ডিভাইসে কীভাবে ব্রাইটনেস কন্ট্রোল করবেন চলুন জেনে নেই সে সম্পর্কে।কম্পিউটারের ব্রাইটনেস কন্টোল ১। কম্পিউটারের কীবোর্ডে থাকা ফাংশন কী গুলো খেয়াল করুন। এর মধ্যে কোনটাতে লাইট চিহ্ন থাকলে এই বোতাম চেপে ব্রাইটনেস বাড়ানো-কমানো যাবে।২। উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে আরেকটি সুবিধা হল ব্যাটারি আইকন থেকেও ব্রাইটনেস কমানো-বাড়ানো যাবে। সেজন্য ব্যাটারি আইকনে ক্লিক করলেই ব্রাইটনেস পরিবর্তনের অপশন আসবে।৩। স্টার্ট মেনুর পাশে থাকা সার্চ আইকনে ব্রাইটনেস সেটিংস লিখে সার্চ করলেই এই সেটিংস ওপেন হয়ে যাবে। সেখান থেকে ব্রাইটনেস পরিবর্তন করতে পারবেন।৪। ল্যাপটপের চার্জ যখন ২০% এর নিচে চলে আসে তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাটারি সেইভার অন হয়ে ব্রাইটনেস কমে যায়। ব্যাটারি সেইভার অন হবার সময় নির্দিষ্ট করে দিয়ে আপনি এইটাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।ফোনের ব্রাইটনেস কন্ট্রোল ১। ফোনের ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণের জন্য সেটিংস অপশনে যেতে পারেন অথবা ফোনের স্ক্রিনের উপরের দিকে যেখানে শর্টকাট কী গুলো থাকে সেখানে ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণের অপশন থাকে। এই দুই জায়গা থেকেই ফোনের ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আবার ব্যাটারি সেইভার অন হলে তখন ব্রাইটনেস স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কমে যায়, চার্জ দিলে বেড়ে যায়।২। ফোনের ব্রাইটনেস সেটিংসয়ে অটো-ব্রাইটনেস অপশন আছে যা নির্বাচন করে রাখলে প্রয়োজনের সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্রাইটনেস বদল হয়ে যাবে।প্যারেন্টাল কন্ট্রোলশিশুদের ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিভাবকের কিছু বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এসব বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ আরোপকে বলে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল। প্যারেন্টাল কন্ট্রোল করার জন্য কিছু অ্যাপ আছে। আপনি চাইলে এসব অ্যাপ বা সফটওয়্যার দিয়ে সন্তানের ডিভাইস ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। আবার অ্যাপ ব্যবহার না করেও পারিবারিক কিছু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেও এই প্যারেন্টাল কন্ট্রোল করতে পারেন।অ্যাপ এর মাধ্যমে প্যারেন্টাল কন্ট্রোলপ্যারেন্টাল কন্ট্রোল অ্যাপ কী কাজ করে?প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অ্যাপের মাধ্যমে অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের ইন্টারনেট ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এসব অ্যাপ এর মাধ্যমে বাচ্চাদের জন্য অপ্রয়োজনীয়, ক্ষতিকর, বেআইনী ওয়েবসাইট ও ওয়েব কন্টেন্ট ব্লক করা যায়। সার্চ ইঞ্জিন, ব্রাউজার, ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট, মেসেজিং অ্যাপসহ আরও অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চাদের ডিভাইস ও ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্যারেন্টাল কন্ট্রোল এর মাধ্যমে আরও যা যা করা যায় তা হলো-১। সার্চ ইঞ্জিনে কী কী আসবে তা নিয়ন্ত্রণ করা২। বিশেষ কিছু ওয়েবসাইট, অ্যাপ, ভিডিও গেইম ব্লক করা৩। স্টোর থেকে কোন অ্যাপ ডাউনলোড বা কোন অনলাইন সেবা ক্রয়ের আগে অভিভাবকের অনুমতির ব্যবস্থা করা৪। বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা সেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাচ্চার বয়সের সীমা নির্ধারণ করে দেয়া৫। ডিভাইসে কী পরিমাণ সময় ব্যয় করতে পারবে সেই ব্যাপারে সীমা নির্ধারণ করে দেয়া। পারিবারিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্যারেন্টাল কন্ট্রোলডিজিটাল ডিভাইসের পিছনে কি পরিমাণ সময় দেয়া যাবে, কোন ক্ষেত্রে ডিভাইস ব্যবহার করবে বা এ ধরনের প্রয়োজন হলে কী করবে সে ব্যাপারে পরিবারের মধ্যে নিয়ম ঠিক করে দেয়া যেতে পারে। কিংবা আরও কিছু ব্যবস্থাপনা আছে যেগুলোর মাধ্যমে শিশুর ডিজিটাল ডিভাইস ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিভাবকের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায়। যেমন –১। দিনে কত ঘণ্টা সময় ডিভাইসের পিছনে ব্যয় করা যাবে সে ব্যাপারে নিয়ম করে দিতে পারেন। শুধু শিশুর জন্য না, এই নিয়ম পরিবারের সকল সদস্যের জন্যই নির্ধারণ করুন।২। এই নিয়মগুলো সঠিকভাবে আপনি নিজে মানুন এবং শিশুকেও মেনে চলতে উৎসাহ দিন।৩। শিশুরা খুবই অনুকরণপ্রিয় হওয়ায় তাদের সামনে ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন এবং নিয়মগুলো আপনি নিজেও মেনে চলুন। উদাহরণ স্থাপন না করলে শিশু এগুলো মানতে উৎসাহ পাবে না।৪। শিশু যে ডিভাইসটি ব্যবহার করবে তা বাসার এমন জায়গায় রাখুন এবং মনিটরটি এমনভাবে রাখুন যেন শিশু কখন ডিভাইস ব্যবহার করছে বা কী ধরনের কন্টেন্ট ব্রাউজ করছে তা সবাই দেখতে পারে। ৪। পরিবারের সবাই মিলে ডিজিটাল ডিভাইসবিহীন আনন্দদায়ক সময় কাটান, শিশুকে সময় দিন।৫। শিশুর সাথে ডিভাইস ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যাপারে খোলাখুলি আলোচনা করুন। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখুন যাতে সে এসব ব্যাপারে আপনার সাথে আলোচনা করতে ভয় না পায়। তাহলে আপনি খুব সহজেই শিশুর উপর কোন অ্যাপ ব্যবহার না করেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
আরও জানুনএই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে ইন্টারনেট ব্যবহার খুব সাধারণ নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হলেও অনেকেই জানেন না কীভাবে ইন্টারনেটে যুক্ত হওয়া যায়। এই না জানা অস্বাভাবিক না। চলুন জেনে নেয়া যাক ইন্টারনেটে কীভাবে যুক্ত হবেন সে সম্পর্কে।যা যা লাগবে– ১। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার২। সিমকার্ড, মডেম, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ৩। প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ও অ্যাপস। যেমন- ইন্টারনেট ব্রাউজার, মেসেঞ্জার ইত্যাদি স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যুক্ত হবার উপায়১। স্মার্টফোনে সিম কার্ড লাগিয়ে সেই সিম কোম্পানির বিভিন্ন ডাটা প্যাকেজ কিনে ইন্টারনেটে যুক্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে সিম কোম্পানির ডাটা প্যাকেজ কীভাবে কিনতে হয় সেসব জানতে হবে। আবার আশেপাশের ফ্লেক্সিলোডের দোকানে এখন মিনিট কার্ডের মত করে ডাটা প্যাকেজের জন্য আলাদা কার্ড পাওয়া যায়। এই কার্ড রিচার্জ করে ডাটা প্যাকেজ নিতে পারবেন। ডাটা প্যাকেজের নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে (যেমন- ২৪ ঘণ্টা, তিনদিন, এক সপ্তাহ, এক মাস ইত্যাদি), এই মেয়াদের মধ্যে ব্যবহার না করলে বাতিল হয়ে যাবে। মেয়াদ এবং ডাটা শেষ হয়ে গেলে আবারো ডাটা প্যাকেজ কিনতে হবে। ২। ওয়াইফাই ব্যবহার করেও ইন্টারনেটে যুক্ত হতে পারবেন, সেক্ষেত্রে সিমের প্রয়োজন হবে না। তবে সেজন্য বাসায় বা অফিসে যেখানে আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন সেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগ থাকতে হবে। তবে সংযোগটি আপনি নিজে নিতে চাইলে এলাকাভেদে বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার আছে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে সংযোগের জন্য একটি রাউটার কিনতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্যাবল কিনতে হবে। ব্রডব্যান্ড কানেকশন নিলে প্রতি মাসে ডেটা প্যাকেজ অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ বিল দিতে হয়।কম্পিউটারের মাধ্যমে যুক্ত হবার উপায়১। ব্রডব্যান্ড/লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (ল্যান) এর মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড/ল্যান এর মাধ্যমে আপনি কম্পিউটার ব্যবহার করে ইন্টারনেটে যুক্ত হতে পারবেন। এলাকাভেদে বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার আছে যারা বাসা বা অফিসে এসব ব্রডব্যান্ড/ল্যান সংযোগ দিয়ে থাকে। তাদের সাথে যোগাযোগ করলেই সংযোগ দিয়ে যাবে। ২। সিম কার্ড এবং মডেমের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারবেন।মডেম হচ্ছে সিমে ডাটা প্যাকেজ কিনে কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারের অন্য বিশেষায়িত একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস। এই ডিভাইসে সিম যুক্ত করার জায়গা আছে, সিমে ডাটা প্যাকেজ কিনে তারপর সে সিমকে মডেমে লাগিয়ে কম্পিউটারের ইউএসবি পোর্টে যুক্ত করলেই ইন্টারনেট সংযোগ পেয়ে যাবেন। ৩। ওয়াইফাই দিয়ে যুক্ত হতে পারেনব্রডব্যান্ড সংযোগ নিলে ক্যাবলের মাধ্যমে ডেস্কটপ/ল্যাপটপ দুই ধরনের কম্পিউটারেই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে রাউটার ব্যবহার করলে ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ল্যাপটপকে ইন্টারনেটে যুক্ত করতে পারবেন। কিন্তু ডেস্কটপে আলাদা অ্যাডাপ্টার ছাড়া ওয়াইফাই সংযোগ পাওয়া যায় না। সেজন্য ডেস্কটপে ওয়াইফাই সংযোগ পেতে হলে আলাদা অ্যাডাপ্টার যুক্ত করে নিতে হবে। ৪। ফোনের হটস্পট দিয়ে যুক্ত হতে পারেনঅনেক সময় বাসার বা অফিসের বাইরে থাকার কারণে ব্রডব্যান্ড বা ওয়াইফাই এলাকার মধ্যে না থাকা অবস্থাতেও আমাদের অনেক কাজ করতে হতে পারে। সেসব ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনে ডাটা প্যাকেজ কিনে সেই ফোনে ডাটা কানেকশন অন করতে হবে। সেক্ষেত্রে ফোনের সেটিংস অপশনে গিয়েপোর্টেবল হটস্পট অন করতে হবে। এই হটস্পট অন করার ফলে মোবাইলের নেটওয়ার্কটা কম্পিউটারের কাছে ওয়াইফাইয়ের মত কাজ করবে। হটস্পটে যুক্ত করার জন্য হটস্পটে প্রবেশ করে পাসওয়ার্ডটি দেখে নিবেন। তারপর কম্পিউটারের ওয়াইফাই অন করে এই পাসওয়ার্ড দিয়ে ফোনের হটস্পটের সাথে যুক্ত করে নিলে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। সাইবার ক্যাফের মাধ্যমেযদি আপনার কাছে ফোন বা কম্পিউটার নাও থেকে থাকে তাহলেও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা দেয়ার জন্য বিভিন্ন সাইবার ক্যাফে আছে। এসব ক্যাফেতে ঘণ্টা হিসেবে কম্পিউটার ভাড়া দেয়। এই কম্পিউটারের মাধ্যমেও আপনি ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে কাজ করতে পারবেন। সবার হাতে হাতে যখন ফোন , ল্যাপটপ এতটা সহজলভ্য ছিলো না সেই সময় সাইবার ক্যাফের ধারণাটা বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় ছিলো। তবে সাইবার ক্যাফেতে ইন্টারনেট ব্যবহারের বেলায় আপনারঅ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার দিকে বেশি নজর দিতে হবে। যেহেতু এ ধরনের কম্পিউটার অনেক মানুষ ব্যবহার করে সেক্ষেত্রে সতর্ক না থাকলে আপনার বিভিন্ন তথ্য অন্য মানুষের কাছে চলে যেতে পারে।
আরও জানুনএই ডিজিটাল যুগে মানুষের জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়ে গেছে। আগের মত সব কাজের জন্য গিয়ে লাইন ধরতে হয় না, বিড়ম্বনাও কমেছে অনেক। ডিজিটাল পরিমণ্ডলের সুযোগ-সুবিধাগুলো আমাদের জীবনে খুবই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। চলুন এমন কিছু সুবিধা এবং ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেই। ১। সামাজিক যোগাযোগঅনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কড ইন ইত্যাদি ব্যবহার করে খুব সহজে এবং কম সময়ে অনেক মানুষের সাথে যোগাযোগ করা যায়। ২। ডিজিটাল লেনদেনবিভিন্ন ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যম থাকায় ক্যাশ টাকা দেয়ার পাশাপাশি ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগও আছে। ডিজিটাল লেনদেনের মধ্যে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং বহুল ব্যবহৃত দুইটি মাধ্যম। এভাবে অনেকেই নিজ বাড়িতে টাকা পাঠানো, সরাসরি বা অনলাইনে কেনাকাটা করা এই সব কাজই করতে পারছেন। ৩। অনলাইনে কেনাকাটাকেনাকাটার জন্য বাজারে না গিয়ে ই-কমার্স সাইটগুলো থেকে প্রায় সব জিনিসই কিনতে পারবেন। অর্ডার করলে বাসায় হোম ডেলিভারি দিয়ে যাবে। গৃহস্থালি পণ্য থেকে শুরু করে সকল ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য পর্যন্ত কেন সম্ভব এখানে। ৪। বাচ্চাদের অনলাইনে স্কুল-কলেজে ভর্তি ও বেতনবাচ্চাদের স্কুল-কলেজে ভর্তির আবেদন, ফর্ম ফিলাপ ইত্যাদি কাজ অনলাইনেই করা যাচ্ছে। এমনকি একাধিক স্কুল বা কলেজে একই জায়গা থেকেই আবেদন করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভর্তি হওয়া যাচ্ছে। ৫। পরীক্ষার ফলাফল দেখাবিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা যেমন পিইসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি এসব পরীক্ষার ফলাফল জানতে এখন আর স্কুল-কলেজে গিয়ে দেখার প্রয়োজন পরে না। অনলাইনে খুব সহজেই বিস্তারিত ফলাফল পেয়ে যাওয়া যায়। ৬। জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্ম নিবন্ধন জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন, পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধনের তথ্য হালনাগাদ করা বা সংশোধন, এর ফি পরিশোধ ইত্যাদি কাজও সহজেই অনলাইনে করা যায়। ৭। চাকরির আবেদনপ্রায় সব ধরনের চাকরির আবেদনই এখন অনলাইনে করা সম্ভব হচ্ছে। আবেদনের ফি পরিশোধ, এডমিট কার্ড ডাউনলোড করা, পরীক্ষার কেন্দ্রের নাম জানা, ফল প্রকাশ হলে তা দেখা এবং পরবর্তী প্রস্তুতি নেয়ার মত সকল কাজই অনলাইনে করা যাচ্ছে। ৮। পাসপোর্ট, ভিসার জন্য আবেদনপাসপোর্টের আবেদনের জন্য পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইটেই আবেদন করা এবং ব্যাংকের মাধ্যমে আগাম ফি পরিশোধ করা যায়। ভিসার জন্য কাঙ্ক্ষিত দেশের এম্বাসিতে অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। আবেদন সম্পর্কিত সকল তথ্য, আবেদন করার পর বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি সব কিছু অনলাইনে মাধ্যম ব্যবহার করে করা যায়। ৯। ব্যবসাঅনলাইনে এবং অফলাইন সকল ধরনের ব্যবসাতেই এখন অনলাইনে মাধ্যম ব্যবহার হচ্ছে। অনলাইনে প্রচারণা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন চালানো, প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের সকল শাখার কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনলাইনে মাধ্যম ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া ব্যবসা পরিচালনার জন্য ট্রেড লাইসেন্স এর আবেদন বা পরবর্তীতে তা প্রক্রিয়াকরণের কাজও অনলাইনে করা যাচ্ছে। ১০। শিক্ষাশিশু-কিশোরদের শিক্ষার জন্য অনলাইনে অনেক ভালো ভালো মাধ্যম আছে। তারা ক্লাসে কিছু বুঝতে না পারলে এসব মাধ্যম ব্যবহার করে খুব সহজেই পড়া শিখতে পারবে। ইউটিউবে বিভিন্ন ক্লাসের পড়াশোনা নিয়ে প্রচুর টিউটোরিয়াল আছে। যেমন- কিশোর বাতায়ন, চমক হাসান, টেন মিনিট স্কুল, অন্যরকম পাঠশালাসহ আরও অনেক চ্যানেল আছে যারা পড়াশোনার বিষয় নিয়ে টিউটোরিয়াল তৈরি করে। এসব টিউটোরিয়াল দেখে বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারবে। আবার কোন কারণে স্কুল-কলেজে গিয়ে ক্লাস করা সম্ভব না হলে শিক্ষকের অনলাইনে ক্লাসেও যুক্ত হয়ে জেনে নিতে পারবে। ১১। চিকিৎসাচিকিৎসা খাতে অনলাইন মাধ্যমের ব্যবহার খুব পুরনো না হলেও এর ব্যবহার প্রচুর বাড়ছে। ডাক্তার ও হাসপাতালের খোঁজ নেয়া, অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়া, টেলিমিডিসিন সেবা নেয়া, ওষুধ কেনা, মেডিক্যাল টেস্ট সংক্রান্ত তথ্য এমন অনেক কাজই অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে করা যায়। ১২। তথ্য খুঁজে বের করাযেকোনো প্রয়োজনীয় তথ্য এখন খুব সহজেই সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে বের করা যায়। এসব সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে আছে গুগল, পিপীলিকা, Bing ইত্যাদি। ১৩। আইনি সহায়তাআইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের আইনি সহায়তা নেয়া যায়। অনলাইনে অভিযোগ জানানো থেকে শুরু করে আইন সম্পর্কে জানা পর্যন্ত অনেক কাজই অনলাইনে করা সম্ভব। ১৪। টিকেট কেনা প্লেন, বাস, লঞ্চ ও ট্রেনের টিকেট অনলাইনেই কেনা যাচ্ছে। স্টেশনে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কাটার প্রয়োজন পরছে না আর। এই প্রত্যেকটি টিকেট কাটার জন্য আলাদা ওয়েবসাইট আছে যেখানে গিয়ে টিকেট কিনতে পারবেন।
আরও জানুনশিশুর জন্য ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম কানুন অবশ্যই মেনে চলতে হবে। কোন বয়স থেকে শিশুর ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা উচিত, কোন বয়সে সর্বোচ্চ কতক্ষণ সময় ডিজিটাল ডিভাইসের সাথে কাটানো উচিত ইত্যাদি বিষয়গুলো জেনে তারপর শিশুর হাতে ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া যেতে পারে। ● মূলত প্রথম ৩ বছর পর্যন্ত শিশুর জন্য ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকা ভাল।● ডিভাইসের মাধ্যমে নয় শিশুকে মুখে ছড়া গান গল্প শোনানো তার বড় হয়ে ওঠার জন্য বেশি● ৩-৮ বছরের শিশুর জন্য মাঝে মাঝে ১০-১৫ মিনিটের জন্য বড়দের তত্বাবধানে গান, ছড়া, গল্প বা শিশু উপযোগী বিষয়গুলো দেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সারাদিনে ৩-৫ বছরের শিশুর জন্য সবোর্চ্চ ৪০ মিনিটের মধ্যে স্ক্রিনিং (মোবাইল, টিভি, ট্যাব, কম্পিউটার বা এ ধরনের যে কোন ডিভাইস হতে পারে) এর সময়সীমা রাখতে হবে।● ছোট শিশুর জন্য যে কোন কিছু স্ক্রিনে দেখার সময় সেটা থামিয়ে শিশুর সাথে ঐ বিষয় নিয়ে কিছুক্ষণ পর পরই কথা বলা ভাল। সেটা দ্বিমুখী যোগাযোগ নিশ্চিত করে।● ৫-৮ বছরের শিশুর যদি অনলাইনে ক্লাস করতে হয়, খেয়াল রাখা দরকার একটানা সবোর্চ্চ ৪০ মিনিটের বেশি সে যেন স্ক্রিনের সামনে না থাকে। প্রয়োজনে ১০-১৫ মিনিট বিরতির পর আবার ৪০ মিনিট থাকতে পারবে। সারাদিনে এই সময়সীমা ২ ঘন্টার মধ্যে থাকা ভাল।● যে কোন শিশুর জন্য প্রথম থেকে ডিভাইস ব্যবহার একটি নিয়মের মধ্যে রাখতে হবে। বড়দের সান্নিধ্যে ডিভাইস ব্যবহার করতে হবে।● শিশু বড়দের দেখেই শিখবে। বড়দেরও ডিভাইস ব্যবহারে সময়সীমা মেনে চলা ভাল এবং শিশুকে যখন সময় দেবেন তখন মনোযোগ ধরে রেখে তাকেই সময় দিতে হবে।সেসময় ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।মোবাইল, কম্পিউটারের সাধারণ ব্যবহারমোবাইল ও কম্পিউটার ছাড়া এই যুগে চলার কথা চিন্তাও করা যায় না। কিন্তু একটা সময় এই ডিভাইস দুটি এত সহজলভ্য ছিলো না। তবে বর্তমানে মোবাইল এবং কম্পিউটার আমাদের জীবনে বেশ বড় পরিবর্তন এনেছে। এই দুটি ডিভাইসের সাধারণ ব্যবহার সম্পর্কে শিশুদের কিছু ধারণা এমনিতেও হয়ে যায়, যেমন- এগুলো দিয়ে কার্টুন, নাটক, সিনেমা এসব দেখা যায়, ছবি তোলা যায়, ফোনে কথা বলা যায়। তারপরও শিশুদের বিকাশের সাথে সাথে তাকে এসব ডিভাইসের নতুন নতুন ব্যবহারের সাথে পরিচিত করে দেয়া উচিত। চলুন জেনে নেয়া যাক এ দুটি ডিভাইসের কিছু সাধারণ ব্যবহার যেগুলো শিশুকে শুরুতে জানিয়ে নিতে পারেন -১। ডিভাইস খোলা- বন্ধ করাগঠনের দিক দিয়ে কম্পিউটার দুই ধরনের ডেস্কটপ কম্পিউটার এবং ল্যাপটপ কম্পিউটার। ডেস্কটপ কম্পিউটার অন করার জন্য বৈদ্যুতিক সংযোগ দিতে হবে। সংযোগ দেয়ার পরে সিপিইউ এ থাকা পাওয়ার বাটন অন করতে হবে। তারপর মনিটরের পাওয়ার অন করলেই কম্পিউটারের স্ক্রিন অন হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই কম্পিউটারটি অন হয়ে যাবে।ল্যাপটপ কম্পিউটারের ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক সংযোগ ছাড়াও যদি ল্যাপটপে চার্জ থাকে তাহলে পাওয়ার বাটন চেপে ধরলে কম্পিউটার অন হয়ে যাবে।দুই ধরনের কম্পিউটারের ক্ষেত্রেই স্টার্ট আইকনে ক্লিক করে তারপর পাওয়ার আইকনে ক্লিক করলে তিনটি অপশন আসবে শাট ডাউন, স্লিপ এবং রিস্টার্ট। এখানের শাট ডাউন অপশনটি নির্বাচন করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই কম্পিউটারটি বন্ধ হয়ে যাবে।ফোনের পাশ দেয়া পাওয়ার বাটনে চাপ দিলে ফোন অন হয়ে যাবে। আবার এই পাওয়ার বাটনে চাপ দিলে বন্ধ করার অপশন আসে। এর মধ্যে রিস্টার্ট এবং টার্ন অফ ফোন এই দুইটি অপশন দেখতে পাবেন। টার্নড অফ ফোন অপশনে ক্লিক করলে ফোন অফ হয়ে যাবে।২। রিস্টার্টকম্পিউটার রিস্টার্ট করার জন্য কম্পিউটার স্ক্রিনের বাম পাশে নিচের কোনায় স্টার্ট আইকনে ক্লিক করে পাওয়ার আইকনে ক্লিক করতে হবে। পাওয়ার আইকনে ক্লিক করার পর স্লিপ, শাট ডাউন এবং রিস্টার্ট এই তিনটা অপশন আসবে। রিস্টার্ট অপশন নির্বাচন করলেই আপনার কম্পিউটার রিস্টার্ট হয়ে যাবে। রিস্টার্ট মানে হচ্ছে কম্পিউটার বন্ধ হয়ে আবার চালু হওয়া। এই বাটনে ক্লিক করলে কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে অফ হয়ে তারপর আবার অন হয়ে যাবে।ফোন রিস্টার্ট দেয়ার জন্য ফোনের পাওয়ার বাটনে চেপে ধরে রাখতে হয়। রিস্টার্ট/রিবুট অপশন আসলে সেটাতে ক্লিক করলে ফোন অটোমেটিক অফ হয়ে আবার অন হয়ে যাবে। অনেক সময় নতুন সফটওয়্যার ইন্সটল করার পরে, ডিভাইস হ্যাং হয়ে গেলে ডিভাইসকে রিস্টার্ট করার প্রয়োজন হয়।৩। চার্জ দেওয়াকম্পিউটার ও ফোন চার্জ দেয়ার জন্য চার্জারকে বৈদ্যুতিক সংযোগের সাথে যুক্ত করে তারপর সে চার্জারকে ডিভাইসের যথাস্থানে যুক্ত করতে হবে। চার্জ হচ্ছে কিনা তা নোটিফিকেশনের মধ্যে জানিয়ে দেয়া হবে। আবার চার্জার যুক্ত করার স্থানের পাশে বাতি জ্বলে উঠলে বুঝতে পারবেন যে চার্জ হচ্ছে। ব্যাটারি কত পার্সেন্ট চার্জ হল তা ডিভাইসের স্ক্রিনের ব্যাটারি আইকনে দেখতে পারবেন।৪। ডিজিটাল- ডিভাইস-এর যত্ন করে ব্যবহার করাডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব যত্নের সাথে নাড়াচাড়া করতে হবে। এগুলো ব্যবহার করতে না জানলে সহজেই নষ্ট করে দিতে পারেন। সেজন্য এই ডিভাইসগুলো যত্ন করে ব্যবহার করা জরুরি।- খেয়াল করবেন এসব ডিভাইসের উপরে যাতে পানি না পরে বা এই ডিভাইস যেন পানিতে না ভিজে।- ধুলাবালি থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখবেন- নিয়মিত ফুল চার্জ করে ব্যবহার করুন৫। চার্জিং- ক্লিনিং-এর ক্ষেত্রে সতর্কতাএসব ডিভাইস চার্জিং ও পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত। সেগুলো হলো –- ভালো মানের চার্জার সম্ভব হলে অরিজিনাল চার্জার দিয়ে চার্জ দিতে হবে- যে পোর্টে বা মাল্টি-প্লাগে চার্জ দিচ্ছেন সেটাতে শর্ট সার্কিট জনিত সমস্যা আছে কিনা সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। নাহলে ডিভাইসের ক্ষতি হতে পারে।- ক্লিনিংয়ের ক্ষেত্রে ডিভাইসে যাতে কোন রকম তরল প্রবেশ না করে সেদিকে খেয়াল রাখবে।শিশুদের ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদেরকে ডিভাইসের ব্যবহারবিধি পালনে এবং ডিভাইসের যত্ন নিতে উৎসাহিত করুন। আপনি নিজে মানলে এবং শিশুকে সময়ে সময়ে অবহিত করলে তারাও আপনাকে অনুসরণ করবে।
আরও জানুনশিশুর জন্য ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম কানুন অবশ্যই মেনে চলতে হবে। কোন বয়স থেকে শিশুর ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা উচিত, কোন বয়সে সর্বোচ্চ কতক্ষণ সময় ডিজিটাল ডিভাইসের সাথে কাটানো উচিত ইত্যাদি বিষয়গুলো জেনে তারপর শিশুর হাতে ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া যেতে পারে। ● মূলত প্রথম ৩ বছর পর্যন্ত শিশুর জন্য ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকা ভাল।● ডিভাইসের মাধ্যমে নয় শিশুকে মুখে ছড়া গান গল্প শোনানো তার বড় হয়ে ওঠার জন্য বেশি● ৩-৮ বছরের শিশুর জন্য মাঝে মাঝে ১০-১৫ মিনিটের জন্য বড়দের তত্বাবধানে গান, ছড়া, গল্প বা শিশু উপযোগী বিষয়গুলো দেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সারাদিনে ৩-৫ বছরের শিশুর জন্য সবোর্চ্চ ৪০ মিনিটের মধ্যে স্ক্রিনিং (মোবাইল, টিভি, ট্যাব, কম্পিউটার বা এ ধরনের যে কোন ডিভাইস হতে পারে) এর সময়সীমা রাখতে হবে।● ছোট শিশুর জন্য যে কোন কিছু স্ক্রিনে দেখার সময় সেটা থামিয়ে শিশুর সাথে ঐ বিষয় নিয়ে কিছুক্ষণ পর পরই কথা বলা ভাল। সেটা দ্বিমুখী যোগাযোগ নিশ্চিত করে।● ৫-৮ বছরের শিশুর যদি অনলাইনে ক্লাস করতে হয়, খেয়াল রাখা দরকার একটানা সবোর্চ্চ ৪০ মিনিটের বেশি সে যেন স্ক্রিনের সামনে না থাকে। প্রয়োজনে ১০-১৫ মিনিট বিরতির পর আবার ৪০ মিনিট থাকতে পারবে। সারাদিনে এই সময়সীমা ২ ঘন্টার মধ্যে থাকা ভাল।● যে কোন শিশুর জন্য প্রথম থেকে ডিভাইস ব্যবহার একটি নিয়মের মধ্যে রাখতে হবে। বড়দের সান্নিধ্যে ডিভাইস ব্যবহার করতে হবে।● শিশু বড়দের দেখেই শিখবে। বড়দেরও ডিভাইস ব্যবহারে সময়সীমা মেনে চলা ভাল এবং শিশুকে যখন সময় দেবেন তখন মনোযোগ ধরে রেখে তাকেই সময় দিতে হবে।সেসময় ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।এই সামগ্রিক ডিজিটাইলাইজেশনের যুগে যারা ডিজিটাল মাধ্যম ভাল ব্যবহার করতে পারে, তারা অন্যদের থেকে অনেক এগিয়ে থাকে। এর প্রভাব পরবর্তীকালেও থাকে। সেজন্য ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার থেকে একেবারে বিরত থাকা এই সময়ে এসে সম্ভব নয়, উচিতও হবে না। তবে শিশুর বয়স এবং প্রয়োজন বিবেচনা করে ডিভাইস ব্যবহারের সুযোগ দেয়া উচিত। অতিরিক্ত ডিভাইস ব্যবহার শিশুর মধ্যে ক্ষতিকর ডিভাইস আসক্তি তৈরি করতে পারে। আবার অনলাইন মাধ্যমে অনেক কনটেন্টই আছে যেগুলো নির্দিষ্ট বয়সের জন্য তৈরি করা হয়। এগুলো শিশুদের জন্য ব্যবহার না করাই ভালো। এছাড়া অনেক সময় অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে শিশু অনেক অসুবিধা ও বিপদে পড়ে যা আসলে অভিভাবকের অনেক বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই ডিভাইসের পরিমিত ও ইতিবাচক ব্যবহারের দিকে নজর দেয়া উচিত।সব বয়সী মানুষের মধ্যেই কমবেশি স্ক্রিন আসক্তি আছে। শিশুদের মধ্যে এর হার বেশি এবং শিশুদের নিজের কাজের উপর নিয়ন্ত্রণ কম থাকায় তারা এসব আসক্তি সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে অভিভাবকের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। শিশুদের ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিভাবক থেকে কিছু নিয়মকানুন ঠিক করে দেয়া উচিত যেগুলা শিশুদের প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ডিভাইসে অন্য কিছু করা বা বেশি সময় দেয়া থেকে বিরত রাখবে। সন্তানের ইন্টারনেট/ডিভাইস আসক্তি সম্পর্কে ধারণা করবেন কীভাবে?১। ডিজিটাল ডিভাইস বা ইন্টারনেট ব্যবহার না করতে পারলে শিশুর মন খারাপ বা মেজাজ খারাপ থাকছে।২। শিশুর পড়াশোনা, খাওয়া এবং ঘুমের সময় এলোমেলো হয়ে গেছে৩। পারিবারের সাথে সময় কম কাটিয়ে ডিভাইস নিয়ে ব্যস্ত থাকেএছাড়া খেয়াল করুন যে, ৪। শিশু কী তার বয়সের উপযোগী বিষয় ব্যবহার করছে?৫। শিশুর অনলাইনে কাটানো সময়গুলো কী শিক্ষামূলক?
আরও জানুনএই ডিজিটাল যুগে কম্পিউটার বহুল ব্যবহৃত একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস। আপনাদের বেশিরভাগের বাসাতেই হয়তো কম্পিউটার আছে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অফিসের কাজের জন্য কম্পিউটার অতি প্রয়োজনীয় একটি ডিভাইস। চলুন কম্পিউটারের কিছু সাধারণ ব্যবহার জেনে নেয়া যাক। ১। ইন্টারনেট ব্রাউজিংকম্পিউটারে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেয়ার মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করতে পারবেন। কম্পিউটারে কয়েকটি ইন্টারনেট ব্রাউজার থাকে যেগুলোর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্রাউজ করা লাগে। যেমন ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, মাইক্রোসফট এজ, গুগল ক্রোম, মোজিলা ফায়ারফক্স। এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি ব্রাউজার এ প্রবেশ করে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে যাওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ছবি, ভিডিও, ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন। ২। অফিসের কাজ করাঅফিসিয়াল বিভিন্ন কাজের জন্য মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, পাওয়ারপয়েন্ট, এক্সেল এর মত সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড দিয়ে বিভিন্ন ফাইল টাইপ করা, নোটিশ, বিজ্ঞপ্তি, যেকোনো লিখিত ফাইল তৈরি করা যায়। পাওয়ারপয়েন্ট দিয়ে প্রেজেন্টেশন তৈরি, স্বল্প পরিসরে পোস্টার, ব্যানার, ছবি ডিজাইন করা যায়। এক্সেল দিয়ে গাণিতিক হিসাব নিকাশ থেকে শুরু করে গ্রাফ, চার্ট, গাণিতিক হিসাব সংরক্ষণের মত কাজগুলো করা যায়। ৩। ডিজিটাল ফাইল আদান প্রদানকম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ফাইল আদান প্রদান করা যায়। সরাসরি ফাইল আদান প্রদানের জন্য পেনড্রাইভ ব্যবহার করতে পারবেন। পেনড্রাইভ হলো ছোট সাইজের একটি ডিভাইস যার নির্দিষ্ট স্টোরেজ অনুযায়ী সেখানে স্বল্পমেয়াদে ফাইল সংরক্ষণ করে রাখা যায়। সেই ফাইল প্রয়োজনে অন্য কোন কম্পিউটারে নিয়ে কাজ করা যাবে। আবার দূরবর্তী কম্পিউটারের মধ্যে ফাইল শেয়ারের জন্য ইমেইল, গুগল ড্রাইভ, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইমো এবং টেলিগ্রাম এর মত অ্যাপ দিয়ে সহজেই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে ফাইল আদান প্রদান করতে পারবেন। ৪। বিনোদনবিনোদনের জন্য কম্পিউটারে গান শুনতে পারবেন, নাটক-সিনেমা দেখতে পারবেন, বই পড়তে পারবেন এবং বিভিন্ন ধরনের ভিডিও গেইম খেলতে পারবেন। এসবের কাজ অনলাইনেও করা যেতে পারে, আবার কম্পিউটারে ডাউনলোড করে নিয়ে পরে দেখতে পারবেন। ডাউনলোড করা ফাইল অন্যদের সাথে চাইলে শেয়ারও করতে পারবেন।৫। ছবি, ভিডিও এডিট করা এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন করাকম্পিউটার ব্যবহার করে ছবি এবং ভিডিও এডিট করতে পারবেন। এডিটিংয়ের এর জন্য Adobe Photoshop, Adobe Illustrator হচ্ছে বহুল প্রচলিত দুইটি সফটওয়্যার। পোস্টার, ব্যানার, টিশার্ট, লোগো, প্যাড ইত্যাদি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস ডিজাইন করার জন্যে এই দুইটি সফটওয়্যার খুবই কাজের। এসব সফটওয়্যার দিয়ে কাজ করা কিছুটা জটিল হলেও শিখে নিতে পারলে অনেক সুন্দর সুন্দর কাজ এসব দিয়ে করা যায়। ছবি, ভিডিও এডিটিং এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন এই সময়ে বেশ চাহিদা সম্পন্ন একটি সফট স্কিল।৬। ক্লাস, ওয়ার্কশপ, ট্রেনিংয়ে অংশ নেয়াকম্পিউটারের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অনলাইনে ক্লাস, কোচিং, পরীক্ষা, ট্রেনিংয়ে অংশ নেয়া যাবে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে তাদের কোর্স দিয়ে থাকে। এসব কোর্সে যুক্ত হবার মাধ্যমে ঘরে বসেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন করা সম্ভব। এছাড়াও বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, মিটিং এবং ট্রেনিংয়ে অংশ নিতে পারবেন। জুম, গুগল মিট, স্ট্রিমইয়ার্ড এসব সফটওয়্যার দিয়ে এসব অনলাইন মিটিংয়ে যুক্ত হতে পারবেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্সের জন্য Coursera, আবার দক্ষতার জন্য Udemy ওয়েবসাইটগুলো খুব ভালো মাধ্যম। বাংলাদেশে মুক্তপাঠ, টেন মিনিট স্কুল, ঘুড়ি লার্নিং, বহুব্রীহি এবং Interactive Cares এরকম কিছু মাধ্যম। ৭। সামাজিক যোগাযোগকম্পিউটার ব্যবহার করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করার যায়। সেজন্য ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার, রেডিটমাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবার সাথে যোগাযোগ রাখা ও নিজস্ব চিন্তাভাবনা সবার সাথে শেয়ার করা যায়। লিঙ্কড-ইন পেশাজীবিদের সামাজিক যোগাযোগ, চিন্তাভাবনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় ইত্যাদির জন্য ভালো মাধ্যম। ৮। প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজতেইন্টারনেটের সংযোগ আছে এমন কম্পিউটারের মাধ্যমে Google, Bing, পিপীলিকা এসব সার্চ ইঞ্জিনে বিভিন্ন তথ্য সার্চ করে খুব সহজেই তথ্য খুঁজে পাওয়া যাবে।
আরও জানুনএই সময়ে শিশুদের বিভিন্ন কাজে ডিজিটাল ডিভাইস এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেড়ে গেছে। শিশুদের ডিভাইস দেয়ার সাথে সাথে এসবের ব্যাপারে আসক্তি একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে আবার এসব মাধ্যম ব্যবহার করে শিশু অনেক সময়ই বিভিন্ন অসুবিধায় পরতে পারে। সেজন্য শিশুকে এসব প্রয়োজনীয় ডিভাইস দেয়ার পাশাপাশি অভিভাবক হিসেবে আপনার উচিত এগুলো সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা রাখা। তাহলে অতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি এসব ব্যবহারে শিশুকে সহযোগিতা করতে পারবেন। চলুন জেনে নেয়া যাক শিশুদের কোন কাজে কী কী হার্ডওয়ার, সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্স সে সম্পর্কে।১। শিক্ষাশিক্ষা কার্যক্রমে ডিজিটাল ডিভাইস ও ইন্টারনেটের ব্যবহার এখন বহুল প্রচলিত। অনলাইনে পরীক্ষার ফলাফল দেখা, ক্লাস করা, পরীক্ষা দেয়া, বাড়ির কাজ জমা দেয়া, বই ডাউনলোড করা, স্কুল-কলেজের বাইরে কোন কোর্স করার মত কাজগুলো করার প্রয়োজন পড়ে। সেসব কাজের জন্য জুম, গুগল মিট, স্ট্রিমইয়ার্ড, ডকুমেন্ট স্ক্যানার, গুগল ক্লাসরুম, ইন্টারনেট ব্রাউজার এসব সফটওয়্যার এবং কিশোর বাতায়ন, খান একাডেমী, টেন মিনিটস স্কুল, বহুব্রীহি, ইউটিউব, মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, NCTB- এর ওয়েবসাইট ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে।- অনলাইনে ক্লাস করার জন্য জুম (Zoom), গুগল মিট (Google Meet), স্ট্রিমইয়ার্ড (Streamyard), গুগল ক্লাসরুম (Classroom), টিচমিন্ট (Teachmint) এসব অ্যাপ্স বা সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়।- অনলাইনে পরীক্ষা দেয়া, বাড়ির কাজ জমা দেয়া ও পরীক্ষার জমা দেয়ার জন্য গুগল মিট, জুম, গুগল ক্লাসরুম, টিচমিন্ট এসব অ্যাপ্স ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়। পরীক্ষার খাতা স্ক্যান করার জন্য ডকুমেন্ট স্ক্যানার ব্যবহার করতে হয় যেমন ক্যামস্ক্যানার হচ্ছে এমন একটি স্ক্যানার।- বই ডাউনলোড করার জন্য NCTB- এর ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে হয়। এই ওয়েবসাইটে প্রথম থেকে দশম পর্যন্ত সকল ক্লাসে সব বই পিডিএফ ফাইল আকারে দেয়া আছে। কেউ ডিভাইসে পড়তে চাইলে বা বই হারিয়ে ফেললে এই ওয়েবসাইট থেকে খুব সহজেই ডাউনলোড করে নিতে পারবে।- পরীক্ষার ফল দেখার জন্য শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল নাম্বার এবং রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দিলে ফলাফল পেয়ে যাবেন।- অনলাইনে ক্লাসের পড়ার বাইরেও কোন কোর্স করার জন্য খান একাডেমী, টেন মিনিটিস স্কুল, ঘুড়ি লার্নিং, বহুব্রীহি, ইউটিউব চ্যানেল এর মত ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করতে হবে। ২। বিনোদনশিশুদের বিনোদনের জন্য অনলাইন প্লাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের কার্টুন, শিশুতোষ সিনেমা, নাটক দেখা যাবে। সেজন্য কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ এর সাথে সাথে যে ওয়েবসাইটে দেখবে সেখানে একাউন্ট করতে হবে। আবার ইউটিউবে দেখলে শুধুমাত্র গুগল একাউন্টে লগইন করেই সব দেখা যাবে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে রয়েছে ইউটিউব কিডস যা কেবল শিশুদের উপযোগী কন্টেন্ট এর জন্য তৈরি। গেইমস খেলার জন্য সেসব গেইমসের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে।৩। যোগাযোগসহপাঠী ও শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এসব অ্যাপ্স ব্যবহার করতে হয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ফেসবুক পেইজ/গ্রুপ আছে যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের তথ্য পেয়ে থাকে। বিভিন্ন ব্যাচের জন্য আলাদা গ্রুপ থাকে এমন, সেক্ষেত্রে একসাথে আলোচনা করে পড়াশোনা করা, পড়ায় কোন সমস্যা হলে অন্যদের থেকে সহযোগিতা নেয়া সম্ভব এখানে।৪। সহ-শিক্ষা কার্যক্রমশিশুরা বিভিন্ন ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয় তার মধ্যে আছে বিতর্ক, নাচ, গান, আবৃত্তি, ফটোগ্রাফি ইত্যাদি। এসব কর্মকাণ্ডের জন্যেও ডিজিটাল ডিভাইস এবং ইন্টারনেট বহুল ব্যবহার হচ্ছে। বিতর্কের জন্য একটি অ্যাপ আছে যার নাম ডিসকর্ড। যেখানে সরাসরি বিতর্ক করার মত করে অনলাইনের অডিও/ভিডিও কলে বিতর্কে অংশ নেয়া যায়। এছাড়াও ছবি আঁকা, গান, নাচ, ফটোগ্রাফি এসব কর্মকাণ্ডের জন্যেও বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্স প্রয়োজন।৫। অনলাইনে তথ্যপ্রাপ্তিযেকোন কিছু বিষয়ে না জানলে অনলাইনে সার্চ করে এসব তথ্য জেনে নেয়া যায়। শিক্ষা বা অন্য যেকোন বিষয়ে না জানলে শিশুরা ডিভাইস ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত তথ্যটি খুঁজে বের করতে পারে। সেজন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ ফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যবহার করতে হয়। কয়েকটি প্রয়োজনীয় সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে গুগল, Bing এবং পিপীলিকা।৬। আবেদন,ভর্তি ও বেতন পরিশোধ স্কুল-কলেজে ভর্তি হবার আবেদন এবং সেখানে ভর্তি হবার জন্যে সেসব স্কুল-কলেজের ওয়েবসাইটে আবেদন করা, ভর্তি হওয়া এবং মাসিক বেতন দেয়ার কাজগুলোও করা সম্ভব। বেতন পরিশোধের জন্যে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিং অপশন ব্যবহার করা যায়।৮। অনলাইন কেনাকাটাপ্রয়োজনীয় বিনোদন ও শিক্ষা উপকরণ কেনার জন্যে বিশেষ করে শিশুদের জন্যে অনলাইন বেশ ভালো একটি মাধ্যম। শহরের রাস্তার যাতায়াতের সমস্যা, অনিরাপত্তার মধ্যে শিশুকে বাইরে না নিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস অনলাইনে কেনার ব্যবস্থা করতে পারেন। সেজন্য দারাজ, অথবা ডট কম, রকমারি ডট কম, বইয়ের জাহাজ ইত্যাদি ওয়েবসাইট আছে। ৯। সৃজনশীল কাজে শিশুরা বিভিন্ন ধরণের সৃজনশীল কাজে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে। যেমন কেউ কেউ গ্রাফিক্স ডিজাইন করে, কেউ প্রোগ্রামিং, কেউ তার নাচ-গান-আবৃত্তি রেকর্ড করে, কেউ বা লেখালেখি করে। এ ধরনের কাজের জন্য বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার ও অ্যাপ ব্যবহার করার প্রয়োজন পরে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্যে Adobe illustrator, Adobe Photoshop ব্যবহার করা হয়। প্রোগ্রামিং এর জন্য সেসব সফটওয়্যার যেমন C++, python, r ইত্যাদি। লেখালেখির জন্য কিছু নোট থাকে মোবাইলে এসব নোটের পাশাপাশি মাইক্রোফসট ওয়ান নোট, গুগল ডক, মাইক্রোফট ওয়ার্ড এসব ব্যবহার করা হয়। রেকর্ড করার জন্যে ফোনের ভিডিও ক্যামেরা, অডিও রেকর্ডার ব্যবহার করতে হবে। সেসব রেকর্ড করে উপস্থাপন উপযোগী করে তোলার জন্যেও কিছু ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করা যায়।
আরও জানুন