এই ডিজিটাল যুগে মানুষের জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়ে গেছে। আগের মত সব কাজের জন্য গিয়ে লাইন ধরতে হয় না, বিড়ম্বনাও কমেছে অনেক। ডিজিটাল পরিমণ্ডলের সুযোগ-সুবিধাগুলো আমাদের জীবনে খুবই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। চলুন এমন কিছু সুবিধা এবং ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেই।
১। সামাজিক যোগাযোগ
অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কড ইন ইত্যাদি ব্যবহার করে খুব সহজে এবং কম সময়ে অনেক মানুষের সাথে যোগাযোগ করা যায়।
২। ডিজিটাল লেনদেন
বিভিন্ন ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যম থাকায় ক্যাশ টাকা দেয়ার পাশাপাশি ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগও আছে। ডিজিটাল লেনদেনের মধ্যে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং বহুল ব্যবহৃত দুইটি মাধ্যম। এভাবে অনেকেই নিজ বাড়িতে টাকা পাঠানো, সরাসরি বা অনলাইনে কেনাকাটা করা এই সব কাজই করতে পারছেন।
৩। অনলাইনে কেনাকাটা
কেনাকাটার জন্য বাজারে না গিয়ে ই-কমার্স সাইটগুলো থেকে প্রায় সব জিনিসই কিনতে পারবেন। অর্ডার করলে বাসায় হোম ডেলিভারি দিয়ে যাবে। গৃহস্থালি পণ্য থেকে শুরু করে সকল ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য পর্যন্ত কেন সম্ভব এখানে।
৪। বাচ্চাদের অনলাইনে স্কুল-কলেজে ভর্তি ও বেতন
বাচ্চাদের স্কুল-কলেজে ভর্তির আবেদন, ফর্ম ফিলাপ ইত্যাদি কাজ অনলাইনেই করা যাচ্ছে। এমনকি একাধিক স্কুল বা কলেজে একই জায়গা থেকেই আবেদন করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভর্তি হওয়া যাচ্ছে।
৫। পরীক্ষার ফলাফল দেখা
বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা যেমন পিইসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি এসব পরীক্ষার ফলাফল জানতে এখন আর স্কুল-কলেজে গিয়ে দেখার প্রয়োজন পরে না। অনলাইনে খুব সহজেই বিস্তারিত ফলাফল পেয়ে যাওয়া যায়।
৬। জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্ম নিবন্ধন
জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন, পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধনের তথ্য হালনাগাদ করা বা সংশোধন, এর ফি পরিশোধ ইত্যাদি কাজও সহজেই অনলাইনে করা যায়।
৭। চাকরির আবেদন
প্রায় সব ধরনের চাকরির আবেদনই এখন অনলাইনে করা সম্ভব হচ্ছে। আবেদনের ফি পরিশোধ, এডমিট কার্ড ডাউনলোড করা, পরীক্ষার কেন্দ্রের নাম জানা, ফল প্রকাশ হলে তা দেখা এবং পরবর্তী প্রস্তুতি নেয়ার মত সকল কাজই অনলাইনে করা যাচ্ছে।
৮। পাসপোর্ট, ভিসার জন্য আবেদন
পাসপোর্টের আবেদনের জন্য পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইটেই আবেদন করা এবং ব্যাংকের মাধ্যমে আগাম ফি পরিশোধ করা যায়। ভিসার জন্য কাঙ্ক্ষিত দেশের এম্বাসিতে অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। আবেদন সম্পর্কিত সকল তথ্য, আবেদন করার পর বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি সব কিছু অনলাইনে মাধ্যম ব্যবহার করে করা যায়।
৯। ব্যবসা
অনলাইনে এবং অফলাইন সকল ধরনের ব্যবসাতেই এখন অনলাইনে মাধ্যম ব্যবহার হচ্ছে। অনলাইনে প্রচারণা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন চালানো, প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের সকল শাখার কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনলাইনে মাধ্যম ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া ব্যবসা পরিচালনার জন্য ট্রেড লাইসেন্স এর আবেদন বা পরবর্তীতে তা প্রক্রিয়াকরণের কাজও অনলাইনে করা যাচ্ছে।
১০। শিক্ষা
শিশু-কিশোরদের শিক্ষার জন্য অনলাইনে অনেক ভালো ভালো মাধ্যম আছে। তারা ক্লাসে কিছু বুঝতে না পারলে এসব মাধ্যম ব্যবহার করে খুব সহজেই পড়া শিখতে পারবে। ইউটিউবে বিভিন্ন ক্লাসের পড়াশোনা নিয়ে প্রচুর টিউটোরিয়াল আছে। যেমন- কিশোর বাতায়ন, চমক হাসান, টেন মিনিট স্কুল, অন্যরকম পাঠশালাসহ আরও অনেক চ্যানেল আছে যারা পড়াশোনার বিষয় নিয়ে টিউটোরিয়াল তৈরি করে। এসব টিউটোরিয়াল দেখে বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারবে। আবার কোন কারণে স্কুল-কলেজে গিয়ে ক্লাস করা সম্ভব না হলে শিক্ষকের অনলাইনে ক্লাসেও যুক্ত হয়ে জেনে নিতে পারবে।
১১। চিকিৎসা
চিকিৎসা খাতে অনলাইন মাধ্যমের ব্যবহার খুব পুরনো না হলেও এর ব্যবহার প্রচুর বাড়ছে। ডাক্তার ও হাসপাতালের খোঁজ নেয়া, অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়া, টেলিমিডিসিন সেবা নেয়া, ওষুধ কেনা, মেডিক্যাল টেস্ট সংক্রান্ত তথ্য এমন অনেক কাজই অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে করা যায়।
১২। তথ্য খুঁজে বের করা
যেকোনো প্রয়োজনীয় তথ্য এখন খুব সহজেই সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে বের করা যায়। এসব সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে আছে গুগল, পিপীলিকা, Bing ইত্যাদি।
১৩। আইনি সহায়তা
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের আইনি সহায়তা নেয়া যায়। অনলাইনে অভিযোগ জানানো থেকে শুরু করে আইন সম্পর্কে জানা পর্যন্ত অনেক কাজই অনলাইনে করা সম্ভব।
১৪। টিকেট কেনা
প্লেন, বাস, লঞ্চ ও ট্রেনের টিকেট অনলাইনেই কেনা যাচ্ছে। স্টেশনে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কাটার প্রয়োজন পরছে না আর। এই প্রত্যেকটি টিকেট কাটার জন্য আলাদা ওয়েবসাইট আছে যেখানে গিয়ে টিকেট কিনতে পারবেন।