অ্যাডভান্সড লেভেলের ডিভাইস ব্যবহার-ল্যাপটপ/ কম্পিউটারের সাধারণ ব্যবহার

এই ডিজিটাল যুগে কম্পিউটার বহুল ব্যবহৃত একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস। আপনাদের বেশিরভাগের বাসাতেই হয়তো কম্পিউটার আছে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অফিসের কাজের জন্য কম্পিউটার অতি প্রয়োজনীয় একটি ডিভাইস। চলুন কম্পিউটারের কিছু সাধারণ ব্যবহার জেনে নেয়া যাক।

 ১। ইন্টারনেট ব্রাউজিং

কম্পিউটারে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেয়ার মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করতে পারবেন। কম্পিউটারে কয়েকটি ইন্টারনেট ব্রাউজার থাকে যেগুলোর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্রাউজ করা লাগে। যেমন ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, মাইক্রোসফট এজ, গুগল ক্রোম, মোজিলা ফায়ারফক্স। এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি ব্রাউজার এ প্রবেশ করে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে যাওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ছবি, ভিডিও, ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন।

 ২। অফিসের কাজ করা

অফিসিয়াল বিভিন্ন কাজের জন্য মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, পাওয়ারপয়েন্ট, এক্সেল এর মত সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড দিয়ে বিভিন্ন ফাইল টাইপ করা, নোটিশ, বিজ্ঞপ্তি, যেকোনো লিখিত ফাইল তৈরি করা যায়। পাওয়ারপয়েন্ট দিয়ে প্রেজেন্টেশন তৈরি, স্বল্প পরিসরে পোস্টার, ব্যানার, ছবি ডিজাইন করা যায়। এক্সেল দিয়ে গাণিতিক হিসাব নিকাশ থেকে শুরু করে গ্রাফ, চার্ট, গাণিতিক হিসাব সংরক্ষণের মত কাজগুলো করা যায়।

 ৩। ডিজিটাল ফাইল আদান প্রদান

কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ফাইল আদান প্রদান করা যায়। সরাসরি ফাইল আদান প্রদানের জন্য পেনড্রাইভ ব্যবহার করতে পারবেন। পেনড্রাইভ হলো ছোট সাইজের একটি ডিভাইস যার নির্দিষ্ট স্টোরেজ অনুযায়ী সেখানে স্বল্পমেয়াদে ফাইল সংরক্ষণ করে রাখা যায়। সেই ফাইল প্রয়োজনে অন্য কোন কম্পিউটারে নিয়ে কাজ করা যাবে। আবার দূরবর্তী কম্পিউটারের মধ্যে ফাইল শেয়ারের জন্য ইমেইল, গুগল ড্রাইভ, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইমো এবং টেলিগ্রাম এর মত অ্যাপ দিয়ে সহজেই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে ফাইল আদান প্রদান করতে পারবেন।

 ৪। বিনোদন

বিনোদনের জন্য কম্পিউটারে গান শুনতে পারবেন, নাটক-সিনেমা দেখতে পারবেন, বই পড়তে পারবেন এবং বিভিন্ন ধরনের ভিডিও গেইম খেলতে পারবেন। এসবের কাজ অনলাইনেও করা যেতে পারে, আবার কম্পিউটারে ডাউনলোড করে নিয়ে পরে দেখতে পারবেন। ডাউনলোড করা ফাইল অন্যদের সাথে চাইলে শেয়ারও করতে পারবেন।

৫। ছবি, ভিডিও এডিট করা এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন করা

কম্পিউটার ব্যবহার করে ছবি এবং ভিডিও এডিট করতে পারবেন। এডিটিংয়ের এর জন্য Adobe Photoshop, Adobe Illustrator হচ্ছে বহুল প্রচলিত দুইটি সফটওয়্যার। পোস্টার, ব্যানার, টিশার্ট, লোগো, প্যাড ইত্যাদি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস ডিজাইন করার জন্যে এই দুইটি সফটওয়্যার খুবই কাজের। এসব সফটওয়্যার দিয়ে কাজ করা কিছুটা জটিল হলেও শিখে নিতে পারলে অনেক সুন্দর সুন্দর কাজ এসব দিয়ে করা যায়। ছবি, ভিডিও এডিটিং এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন এই সময়ে বেশ চাহিদা সম্পন্ন একটি সফট স্কিল।

৬। ক্লাস, ওয়ার্কশপ, ট্রেনিংয়ে অংশ নেয়া

কম্পিউটারের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অনলাইনে ক্লাস, কোচিং, পরীক্ষা, ট্রেনিংয়ে অংশ নেয়া যাবে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে তাদের কোর্স দিয়ে থাকে। এসব কোর্সে যুক্ত হবার মাধ্যমে ঘরে বসেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন করা সম্ভব। এছাড়াও বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, মিটিং এবং ট্রেনিংয়ে অংশ নিতে পারবেন। জুম, গুগল মিট, স্ট্রিমইয়ার্ড এসব সফটওয়্যার দিয়ে এসব অনলাইন মিটিংয়ে যুক্ত হতে পারবেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্সের জন্য Coursera, আবার দক্ষতার জন্য Udemy ওয়েবসাইটগুলো খুব ভালো মাধ্যম। বাংলাদেশে মুক্তপাঠ, টেন মিনিট স্কুল, ঘুড়ি লার্নিং, বহুব্রীহি এবং Interactive Cares এরকম কিছু মাধ্যম। 

৭। সামাজিক যোগাযোগ

কম্পিউটার ব্যবহার করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করার যায়। সেজন্য ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার, রেডিটমাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবার সাথে যোগাযোগ রাখা ও নিজস্ব চিন্তাভাবনা সবার সাথে শেয়ার করা যায়। লিঙ্কড-ইন পেশাজীবিদের সামাজিক যোগাযোগ, চিন্তাভাবনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় ইত্যাদির জন্য ভালো মাধ্যম। 

৮। প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজতে

ইন্টারনেটের সংযোগ আছে এমন কম্পিউটারের মাধ্যমে Google, Bing, পিপীলিকা এসব সার্চ ইঞ্জিনে বিভিন্ন তথ্য সার্চ করে খুব সহজেই তথ্য খুঁজে পাওয়া যাবে।