এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে ইন্টারনেট ব্যবহার খুব সাধারণ নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হলেও অনেকেই জানেন না কীভাবে ইন্টারনেটে যুক্ত হওয়া যায়। এই না জানা অস্বাভাবিক না। চলুন জেনে নেয়া যাক ইন্টারনেটে কীভাবে যুক্ত হবেন সে সম্পর্কে।
যা যা লাগবে–
১। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার
২। সিমকার্ড, মডেম, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ
৩। প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ও অ্যাপস। যেমন- ইন্টারনেট ব্রাউজার, মেসেঞ্জার ইত্যাদি
স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যুক্ত হবার উপায়
১। স্মার্টফোনে সিম কার্ড লাগিয়ে সেই সিম কোম্পানির বিভিন্ন ডাটা প্যাকেজ কিনে ইন্টারনেটে যুক্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে সিম কোম্পানির ডাটা প্যাকেজ কীভাবে কিনতে হয় সেসব জানতে হবে। আবার আশেপাশের ফ্লেক্সিলোডের দোকানে এখন মিনিট কার্ডের মত করে ডাটা প্যাকেজের জন্য আলাদা কার্ড পাওয়া যায়। এই কার্ড রিচার্জ করে ডাটা প্যাকেজ নিতে পারবেন। ডাটা প্যাকেজের নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে (যেমন- ২৪ ঘণ্টা, তিনদিন, এক সপ্তাহ, এক মাস ইত্যাদি), এই মেয়াদের মধ্যে ব্যবহার না করলে বাতিল হয়ে যাবে। মেয়াদ এবং ডাটা শেষ হয়ে গেলে আবারো ডাটা প্যাকেজ কিনতে হবে।
২। ওয়াইফাই ব্যবহার করেও ইন্টারনেটে যুক্ত হতে পারবেন, সেক্ষেত্রে সিমের প্রয়োজন হবে না। তবে সেজন্য বাসায় বা অফিসে যেখানে আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন সেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগ থাকতে হবে। তবে সংযোগটি আপনি নিজে নিতে চাইলে এলাকাভেদে বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার আছে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে সংযোগের জন্য একটি রাউটার কিনতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্যাবল কিনতে হবে। ব্রডব্যান্ড কানেকশন নিলে প্রতি মাসে ডেটা প্যাকেজ অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ বিল দিতে হয়।
কম্পিউটারের মাধ্যমে যুক্ত হবার উপায়
১। ব্রডব্যান্ড/লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (ল্যান) এর মাধ্যমে
ব্রডব্যান্ড/ল্যান এর মাধ্যমে আপনি কম্পিউটার ব্যবহার করে ইন্টারনেটে যুক্ত হতে পারবেন। এলাকাভেদে বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার আছে যারা বাসা বা অফিসে এসব ব্রডব্যান্ড/ল্যান সংযোগ দিয়ে থাকে। তাদের সাথে যোগাযোগ করলেই সংযোগ দিয়ে যাবে।
২। সিম কার্ড এবং মডেমের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারবেন।
মডেম হচ্ছে সিমে ডাটা প্যাকেজ কিনে কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারের অন্য বিশেষায়িত একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস। এই ডিভাইসে সিম যুক্ত করার জায়গা আছে, সিমে ডাটা প্যাকেজ কিনে তারপর সে সিমকে মডেমে লাগিয়ে কম্পিউটারের ইউএসবি পোর্টে যুক্ত করলেই ইন্টারনেট সংযোগ পেয়ে যাবেন।
৩। ওয়াইফাই দিয়ে যুক্ত হতে পারেন
ব্রডব্যান্ড সংযোগ নিলে ক্যাবলের মাধ্যমে ডেস্কটপ/ল্যাপটপ দুই ধরনের কম্পিউটারেই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে রাউটার ব্যবহার করলে ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ল্যাপটপকে ইন্টারনেটে যুক্ত করতে পারবেন। কিন্তু ডেস্কটপে আলাদা অ্যাডাপ্টার ছাড়া ওয়াইফাই সংযোগ পাওয়া যায় না। সেজন্য ডেস্কটপে ওয়াইফাই সংযোগ পেতে হলে আলাদা অ্যাডাপ্টার যুক্ত করে নিতে হবে।
৪। ফোনের হটস্পট দিয়ে যুক্ত হতে পারেন
অনেক সময় বাসার বা অফিসের বাইরে থাকার কারণে ব্রডব্যান্ড বা ওয়াইফাই এলাকার মধ্যে না থাকা অবস্থাতেও আমাদের অনেক কাজ করতে হতে পারে। সেসব ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনে ডাটা প্যাকেজ কিনে সেই ফোনে ডাটা কানেকশন অন করতে হবে। সেক্ষেত্রে ফোনের সেটিংস অপশনে গিয়েপোর্টেবল হটস্পট অন করতে হবে। এই হটস্পট অন করার ফলে মোবাইলের নেটওয়ার্কটা কম্পিউটারের কাছে ওয়াইফাইয়ের মত কাজ করবে। হটস্পটে যুক্ত করার জন্য হটস্পটে প্রবেশ করে পাসওয়ার্ডটি দেখে নিবেন। তারপর কম্পিউটারের ওয়াইফাই অন করে এই পাসওয়ার্ড দিয়ে ফোনের হটস্পটের সাথে যুক্ত করে নিলে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
সাইবার ক্যাফের মাধ্যমে
যদি আপনার কাছে ফোন বা কম্পিউটার নাও থেকে থাকে তাহলেও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা দেয়ার জন্য বিভিন্ন সাইবার ক্যাফে আছে। এসব ক্যাফেতে ঘণ্টা হিসেবে কম্পিউটার ভাড়া দেয়। এই কম্পিউটারের মাধ্যমেও আপনি ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে কাজ করতে পারবেন। সবার হাতে হাতে যখন ফোন , ল্যাপটপ এতটা সহজলভ্য ছিলো না সেই সময় সাইবার ক্যাফের ধারণাটা বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় ছিলো। তবে সাইবার ক্যাফেতে ইন্টারনেট ব্যবহারের বেলায় আপনারঅ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার দিকে বেশি নজর দিতে হবে। যেহেতু এ ধরনের কম্পিউটার অনেক মানুষ ব্যবহার করে সেক্ষেত্রে সতর্ক না থাকলে আপনার বিভিন্ন তথ্য অন্য মানুষের কাছে চলে যেতে পারে।