কোন ই-কমার্স সাইটে বিনিয়োগ করবো? ক্যাশব্যাক করবে তো? আমার টাকা মার যাবে না তো? সঠিক পণ্য দিবে কি?- এই সকল প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি আমরা প্রতিনিয়ত। অনলাইন শপিং নিয়ে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক কিছু প্রতারণার চক্রের কারণে এইসব আশংকার জন্ম, দিন দিন বেড়েই চলেছে ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলোর সম্পর্কে মানুষের অবিশ্বাস। অনলাইনে প্রতারণাকারি ই-কমার্স চক্র যেমন আছে তেমনি আছে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এখন আপনি নিজের অর্থ কোন ধরণের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করবেন তা সম্পূর্ণ নির্ভর করযে আপনার বিচার বিবেচনা ও সহজ কিছু টিপস এর উপর। প্রতারক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান বোঝার উপায়: বর্তমান পরিস্থিতির সাপেক্ষে নিজেকে ই-কমার্স প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করা অত্যাবশকীয়। এইসব প্রতারণা থেকে নিজের মূল্যবান অর্থ বাঁচিয়ে রাখতে যেভাবে প্রতারক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো শনাক্ত করবেন তা হলো- অবিশ্বাস ক্যাশব্যাক অবাস্তব অফার প্রতিনিয়ত অফারের মেলা নেগেটিভ রিভিউ ডেলিভারি টাইমের অনিশ্চয়তা আগাম পেমেন্ট ছাড়া অর্ডার কনফার্ম না করা নিরাপদ ই-কমার্স সাইট বোঝার উপায়: নিজের অর্থ সঠিক ই-কমার্স ওয়েবসাইটে বিনিয়োগ করতে ছোট কিছু পদক্ষেপ মেনে চলুন যা হলো- পূর্ব ক্রেতাদের পজিটিভ রিভিউ সঠিক সময়ে ডেলিভারির নিশ্চয়তা স্বল্প এবং বিশ্বাসযোগ্য অফার পণ্যের যথাযোগ্য ম্যান নিশ্চিতকরণ
আরও জানুনই-কমার্স কি নিরাপদ? "ডোলে ভরা আশা আর কূলে ভরা ছাই, অধিক লাভের স্বপ্নে সব যায় ভাই"- এই কথাটি বাংলাদেশে বর্তমান ই-কমার্স ক্রেতাদের-বিক্রেতা উভয়ের জন্যই শতভাগ খাঁটি। ই-কমার্স ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি দুই থাকলেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটা আসলে কতটা নিরাপদ অনলাইনে পণ্য কিনলে সময় বাঁচে, ঝক্কিও এড়ানো যায়। তাই ঘরের দুয়ারে প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে নিবন্ধিত হয়েছে দেশে বেশ কিছু ই-কমার্স প্লাটফর্ম যার মধ্যে ইভ্যালি ও আলিশা মার্ট- এই নাম দুটি আমাদের মধ্যে বহুল প্রচলিত। কখনো শতভাগ ক্যাশব্যাক বা কখনো "মুরগির টাকায় গরু ফ্রি" এমন অস্বাভাবিক অফার দিয়ে ইতিমধ্যে এসকল ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলো বিপুল পরিমাণে অর্ডার সংগ্রহে সার্থক হয়েছে। কিন্তু তাদের এই অবিশ্বাসকর অফারের ফাঁদে পরে স্বল্প সংখ্যক মানুষ যেমন লাভমান হয়েছে, তেমনি লোকসানের স্বীকার হয়েছে লক্ষাধিক ব্যক্তি। চলমান এই পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে ই-কমার্স সেক্টরের তীব্র অবিশ্বাস। এই অবিশ্বাস থেকেই আজ জাতির প্রশ্ন "ই-কমার্স কি আসলেও নিরাপদ?" নাচতে না জানলে যেমন উঠোন ব্যাঁকা তেমনি ব্যবহার না জানলে অনলাইন শপিংও ব্যাঁকা। ক্রমউন্নয়নশীল প্রযুক্তির যুগে যেখানে সারা বিশ্বে অনলাইন শপিং ও ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলোর রাজত্ব তখন নিজেদের এ ব্যাপারে সর্তক করাই সর্বোত্তম সমাধান। দেশে প্রচলিত পদ্ধতিতে পণ্য কেনার সঙ্গে সঙ্গে দাম পরিশোধ করতে হয়। দেশে কিস্তিতে ও বাকিতে পণ্য কেনার সুযোগও তৈরি হয়েছে এখন। তাই প্রচলিত নিয়মের বাইরে যেয়ে অধিক ক্যাশব্যাক লুফে নেয়ার আশায় কোনো পণ্যের সম্পূর্ণ মূল্য অর্ডারের সাথে সাথে পরিশোধ করা থেকে বিরত থাকুন, আপনার টাকার আপনার কাছেই শ্রেয়। কখনো মুরগির মূল্যে যেমন গরু কেনা সম্ভব নয় তেমনি যত আধুনিক প্রতিষ্ঠানই হোক না কেনো, কোনো দিন অর্ধ মূল্যে মোটরসাইকেল, একটি পণ্যের সাথে ৩টি পণ্য ফ্রি, ১কেজির তাকে ৩কেজি চাল- এমন অফার সম্ভব নয়। তাই লোভনীয় অফার দেখে প্রতারিত হবেন না, কোনটি যুক্তিযোগ্য অফার তা নিজের বিবেচনা বোধ থেকে যাচাই করুন। ক্রেতাদের জন্য সচেতনতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিক্রেতাদের জন্যই সঠিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম ঠিক ততটাই গুরুর্ত্বপূর্ণ। বিপুল পরিমাণে ক্রেতাদের সহজে পাওয়ার আশায় নিজেদের পণ্য অধিক বাকিতে অথবা অনির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের কাছে দিবেন না। অনলাইনের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তায় সম্ভব সৎ ও সঠিক উপায়ে ব্যবসার প্রসারণ করা। ই-কমার্স নিরাপদ কি না, আপনি ই-কমার্স ব্যবহার করবেন কি না সেটা পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার বিচার বুদ্ধির উপর। যেকোনো ই-কমার্স ওয়েবসাইটে অর্ডার প্লেস করার আগে তাদের পূর্বের কার্যক্রম যাচাই করুন, এবং আগাম পেমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।
আরও জানুন