বর্তমানে ইন্টারনেট মানুষের জীবনে ব্যাপক প্রভাব রাখছে। সহজে যোগাযোগ থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্কিং এমনকি জীবিকার মত ব্যাপারগুলোর জন্যেও অনলাইনের উপর নির্ভরশীল। সেজন্য ইন্টারনেট ব্যাবহারের জন্যে এই মাধ্যমে কী করা উচিত এবং কী করা উচিত না সেই ব্যাপারটা ভালো করে জানা প্রয়োজন। জেনে বুঝে অনলাইন মাধ্যম ব্যাবহার করলে অনেক ঝামেলা এড়িয়ে চলা যায়। এক্ষেত্রে করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো হলো-১। শ্রদ্ধাশীল হোন:অনলাইনে কারো সাথে আলাপের ক্ষেত্রে আমরা হয়তো সামনাসামনি আলাপ করছিনা, কিন্তু প্রতিটা অনলাইন একাউন্টের পিছনে তো এক একজন মানুষই আছে। যে কথাগুলো সামনাসামনি বলতে পারি না সেগুলো আমরা অনলাইন বলতে ভয় পাই না। তা যত তিক্ত-কটু কথাই হোক না কেন। আমাদের মনে রাখা উচিত, আমরা সকলেই ভিন্ন ভিন্ন মানসিক অবস্থা , ভিন্ন ভিন্ন মতবাদ ধারণ করি। আপনার সাথে কারো মতের মিল নাই, হতে পারে, কিন্তু সেজন্য অশ্রদ্ধা দেখানো উচিত না। পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রেখে যোগাযোগ করুন।২। আপনার মন্তব্য কী বোঝাচ্ছে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন:বাস্তব জগতে কথা বলার সময় যোগাযোগের বড় একটা অংশ হিসেবে কাজ করে বাচনভঙ্গি। অনেককিছুই আমরা মুখে না বললেও বাচনভঙ্গি দেখে বুঝে নেই। আবার কেউ কিছু না বুঝলে পুনরায় বুঝে নেয়ারও সুযোগ থাকে এখানে৷ কিন্তু অনলাইনে কোন একটা লেখা বা কথায় এই বাড়তি ব্যাপারগুলো থাকেনা। সেজন্য চেষ্টা করা উচিত যাতে বোধগম্য ভাষায় বলা যায়। নাহলে আপনার কথা ভুল বুঝে কেউ কষ্ট পেলে বা রেগে গেলে তো সমস্যাই।৩. সার্কাজম ও হিউমারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন:সামনাসামনি যোগাযোগ না হবার কারণে রম্য বা মজা করে বলা কথা অনেকে বুঝতে পারেন না। আবার অনেক সময় ইমোটিকন বা ‘LOL’ এই ধরণের কোড দিয়ে সিরিয়াস কথা বলেও আসলে রম্য বোঝানো হয়, যা অনেকেই বুঝতে পারেন না। সেজন্য অনলাইন ফান করার ক্ষেত্রে সচেতন থাকা উচিত। আপনি যা লিখছেন তা আবারো ভালোমত পড়ে দেখে নিন এখানের হিউমারটা অধিকাংশ লোকেই বুঝবে কিনা।৪। অবাঞ্চিত ব্যাক্তির থেকে আপনার তথ্য নিরাপদ রাখুন:অনলাইনের প্রাইভেসি সেটিংস এর মাধ্যমে আপনার তথ্য গোপন রাখুন। ব্যাক্তিগত তথ্য পাবলিক করে রাখলে বিভিন্ন ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন। সেজন্য আগেভাগেই সতর্ক থাকা ভালো। ৫।ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট এবং গ্রুপের আমন্ত্রণ গ্রহণের আগে ভালোমত দেখে নিন:নতুন কোন রিকুয়েস্ট আসলে সে ব্যাক্তির একাউন্ট ভালমত দেখে নিন যে এই ব্যাক্তিকে আপনি চেনেন কিনা, বা তাকে ফ্রেন্ড লিস্টে রাখতে আপনি স্বাছন্দ্যবোধ করবেন কিনা। গ্রুপ বা পেইজের ইনভাইটেশনের ব্যাপারেও খেয়াল রাখবেন যে এগুলো আপনার প্রয়োজনীয় কিনা। যদি না হয় তাহলে এক্সেপ্ট না করাই ভালো।৬. কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভালোমত পড়ে, বুঝে নিন: অনলাইন ওয়েবসাইট ও অ্যাপের নিয়ম বা কমিউনিটি সট্যান্ডার্ড ভালো করে জেনে নিন। বেশিরভাগ অনলাইন ফোরাম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গেইমিং সাইটগুলোর নিজস্ব কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড বা গ্রাহকদের অনলাইন আচরণের নির্দেশনা থাকে।৭. সহানুভূতিশীল হোন:অনলাইন মাধ্যমের সবাই ভালোমত জেনে বুঝে ব্যাবহার করতে জানে তা কিন্তু না। সেক্ষেত্রে কেউ যদি অযাচিত কোন কথা বলে বা লেখে তাহলে তাদেরকে ভালোভাবে বোঝান। তারপরও না বুঝলে ওই সাইটের নিয়ম মেনে রিপোর্ট করুন বা ব্যবস্থা নিন। খুব বেশি আক্রমণাত্মক বা অপমানজনক আচরণ করবেন না।৮। কারো বিরক্তির কারণ হচ্ছেন কিনা খেয়াল রাখুন:ব্যক্তিগত যোগাযোগ কিংবা সাধারণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে কারো বিরক্তি উদ্রেক করছেন কিনা খেয়াল করুন। ব্যক্তিগত মেসেজ দেয়ার ক্ষেত্রে সম্মান রেখে কথা বলুন এবং মেসেজ দেয়ার আগে প্রয়োজনে প্রাপকের অনুমতি নিয়ে নিন। মেসেঞ্জার বা অন্য কোন মাধ্যমে সরাসরি কল করার আগে অনুমতি নিয়ে নিন। অপ্রয়োজনীয় ফোন দিবেন না। ৯। অফিসিয়াল বা ফরমাল যোগাযোগে ইমেইল ব্যবহার:অফিসিয়াল বা ফরমাল কাজের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চেয়ে ইমেইল বেশি উপযুক্ত মাধ্যম। তাই এসব ক্ষেত্রে মেসেঞ্জার, সোশ্যাল মিডিয়া বা এ ধরনের মাধ্যম এভয়েড করে ইমেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা উচিত।
আরও জানুনঅনেকগুলো কমিউনিকেশন অ্যাপ এর মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ভাইবার এগুলো অন্যতম। এই অ্যাপের সুবাদে দেশ-বিদেশে যোগাযোগ অনেক বেশি সহজ হয়ে গেছে। ব্যক্তিগত বা কর্মক্ষেত্রের যেকোনো কাজ অতি সহজেই করছেন সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। এমনই বহুল ব্যবহৃত একটি অ্যাপ হলো হোয়াটসঅ্যাপ। ১৮০ টি দেশের দুই বিলিয়নেরও বেশি মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যাবহার করে থাকে।অ্যাপ ব্যাবহার করতে কী প্রয়োজন?একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটারইন্টারনেট সংযোগঅ্যাপ বা ইন্টারনেট ব্রাউজার কীভাবে ব্যাবহার করতে হয়?স্মার্টফোনের মাধ্যমেগুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে প্রথমে তোমার স্মার্টফোনে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করবে ডাউনলোড করার পর নাম, ফোন নাম্বার দিয়ে অ্যাকাউন্ট করতে হবে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সাইন ইন করে মেসেজ, অডিও/ভিডিও কল করা, ছবি-ভিডিও এবং ফাইল পাঠানো যাবে যেকোনো নতুন নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্যে সেই নাম্বারটি ফোনের ফোনবুকে আগে সংরক্ষণ(সেইভ) করে নিতে হবে। কম্পিউটারের মাধ্যমেকম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য ইন্টারনেট ব্রাউজার থেকে এর ওয়েব ভার্শন ওপেন করে ফোন থেকে যুক্ত করে নিতে পারবে। সেজন্য কম্পিউটারে সার্চ করে হোয়াটসঅ্যাপ বের করে নিতে হবে। ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ ওপেন করে সেখানে কানেক্ট ডিভাইস এ ক্লিক করে কম্পিউটারে থাকা কিউ-আর কোড স্ক্যান করলে যুক্ত হয়ে যাবে। আবার কম্পিউটারে হোয়াটসঅ্যাপ সফটওয়্যার ডাউনলোড করেও ব্যবহার করা যাবে ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: ১। হোয়াটসঅ্যাপে অডিও এবং ভিডিও কলে কথা বলা যায়। সেজন্য যাকে ফোন দিবে তার ইনবক্সে গিয়ে অডিও বা ভিডিও কলের আইকনে ক্লিক করতে হবে। ২। এখানে লিখিত এবং অডিও দুই ধরণের মেসেজই পাঠানো যায়। লিখিত মেসেজ পাঠানোর জন্য মেসেজের বক্সে মেসেজটা টাইপ করে সেন্ড বাটন চাপলেই মেসেজ চলে যাবে। অযাচিত মেসেজ চলে গেলে প্রাপক দেখার আগেই মেসেজটা ডিলিট বা আনসেন্ট করার সুযোগ আছে। ৩। যেকোনো ছবি বা ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপ মোবাইল বা কম্পিউটার যেকোনো ভার্শন থেকেই পাঠানো যাবে। সেজন্য ছবি বা ভিডিও ফোনের কাঙ্ক্ষিত ফোল্ডার থেকে আপলোড করে তারপর পাঠাতে হবে। ৪। হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে একই কাজের বা চিন্তার মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে। হোয়াটসঅ্যাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ১।এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনএই ব্যবস্থায় প্রেরক ও প্রাপকের মধ্যকার মেসেজটি তৃতীয় কোন ব্যক্তি এমনকি হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের কেউও দেখতে পারেননা। মেসেজকে কোডের মাধ্যমে লক করা হয় যাতে অন্য কেউ এই মেসেজ দেখতে না পারে। ২। টু –ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনলগইন করার সময় মেইল ও পাসওয়ার্ড দেয়ার পর তোমার ফোনে বা মেইলে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড পাঠিয়ে নিশ্চিত হওয়া হয় যে তুমিই লগইন করেছো। ফেসবুক বা গুগলের মত হোয়াটসঅ্যাপে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। ৩।অবাঞ্ছিত মেসেজ বা কল করা সম্ভব না এবং ব্লক করা যায়নতুন কেউ মেসেজ বা কল দিলে তুমি এই যোগাযোগ অনুমোদন না করলে সে তোমার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না। এভাবে অপ্রয়োজনীয় মেসেজ এড়িয়ে চলতে পারবে। এবার বিদ্যমান কোন একাউন্ট চাইলে ব্লক করা যায়।
আরও জানুনকমিউনিকেশন অ্যাপের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে অনেক বেশি ব্যবহৃত অ্যাপ সম্ভবত মেসেঞ্জার অ্যাপ। মেসেঞ্জার হচ্ছে ফেসবুকের মেসেজিং অ্যাপ। মেসেঞ্জারের দুইটা অ্যাপ আছে। এর একটি হচ্ছে মেসেঞ্জার আরেকটি মেসেঞ্জার লাইট। মেসেঞ্জারের লাইট ভার্শনটি স্টোরেজ কম ব্যাবহার করে এবং অনেক কম ডাটা সার্ভিস ব্যবহার করে। কিন্তু এই অ্যাপে মেসেঞ্জারের মত সকল সুবিধা নেই। মেসেঞ্জার অ্যাপ ব্যাবহার করতে কী প্রয়োজন?একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটারইন্টারনেট সংযোগমেসেঞ্জার অ্যাপ বা ইন্টারনেট ব্রাউজার মেসেঞ্জার ব্যাবহার করবে কীভাবে? ইন্টারনেট ব্রাউজারের মাধ্যমেতোমার কম্পিউটারে ব্রাউজার দিয়ে ফেসবুক ব্যবহারের সাথে সাথে মেসেঞ্জার ব্যাবহার করা যায়। আবার মোবাইল ফোন এর যেকোনো একটা ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যবহার করে ফেসবুক ব্যবহারের পাশাপাশি মেসেঞ্জারও ব্যবহার করা যায়। সেজন্য মেসেঞ্জার অ্যাপ ডাউনলোড করার কোন প্রয়োজন নেই। মেসেঞ্জার অ্যাপ এর মাধ্যমে১. স্মার্ট ফোনে মেসেঞ্জার অ্যাপ বা মেসেঞ্জার লাইট অ্যাপ ডাউনলোড করেও মেসেঞ্জার ব্যাবহার করা যায়। গুগল প্লে স্টোর থেকে মেসেঞ্জার ডাউনলোড করে ইন্সটল করার পর ইমেইল বা ফোন এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে পারবে। ব্যবহার শেষে প্রয়োজনে লগ আউট করে রাখা যাবে।২. কোন নতুন মেসেজ আসলে সেগুলো মেসেজ রিকুয়েস্ট (Message Request) অপশনে চলে যায়। তুমি দেখে যদি মনে করো যোগাযোগ করবে তাহলে রেসপন্স করলে সে যোগাযোগ করতে পারবে। তবে, প্রয়োজন মনে না করলে যোগাযোগ নাও করতে পারো।৩. কেউ অনলাইনে থাকলে নামের পাশে সবুজ বিন্দু দেখে বোঝা যায়। জুম, গুগল মিটের মত মেসেঞ্জার কলে স্ক্রিন শেয়ার করার সুযোগ আছে। মেসেঞ্জার ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:১। কমিউনিকেশন অ্যাপগুলো দেখতে এবং ব্যবহার করতে প্রায় একই রকম। ফেসবুক মেসেঞ্জারে অডিও এবং ভিডিও কলে কথা বলা যায়। সেজন্য যাকে ফোন দিবে তার ইনবক্সে গিয়ে অডিও বা ভিডিও কলের আইকনে ক্লিক করতে হবে। ২। মেসেঞ্জার মেসেজিং অ্যাপ হিসেবেই শুরুতে বেশি জনপ্রিয় ছিলো। এখানে লিখিত এবং অডিও দুই ধরণের মেসেজই পাঠানো যায়। লিখিত মেসেজ পাঠানোর জন্য মেসেজের বক্সে মেসেজটা টাইপ করে সেন্ড বাটন চাপলেই মেসেজ চলে যাবে। অযাচিত মেসেজ চলে গেলে প্রাপক দেখার আগেই মেসেজটা ডিলিট বা আনসেন্ট করার সুযোগ আছে। ৩। মেসেঞ্জারের মাধ্যমে যোগাযোগকে আরো আকর্ষণীয় করতে মেসেজের পাশাপাশি ইমোটিকন, GIF, Sticker ইত্যাদি ব্যবহার করার সুযোগ আছে। ৪। যেকোনো ছবি বা ভিডিও মেসেঞ্জারের মোবাইল বা কম্পিউটার যেকোনো ভার্শন থেকেই পাঠানো যাবে। সেজন্য ছবি বা ভিডিও ফোনের কাঙ্ক্ষিত ফোল্ডার থেকে আপলোড করে তারপর পাঠাতে হবে। ৪। মেসেঞ্জারের কম্পিউটার ভার্শনে অন্যান্য কাজের পাশাপাশি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, পাওয়ারপয়েন্ট, পিডিএফ এই ফাইলগুলো শেয়ার করা যায়। যা মোবাইল ভার্শনে করা যায় না। ৫। মেসেঞ্জারে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে একই কাজের বা চিন্তার মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে। ফেসবুক মেসেঞ্জারের সুবিধাসমূহ:- হোয়াটসঅ্যাপ এর মত এখানে কোন ফোন নাম্বার প্রয়োজন হয়না। কারো ফোন নাম্বার না জেনে শুধুমাত্র এই অ্যাপের মাধ্যমেই সবার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব।- নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখা যায়। চাইলে কোন বিশেষ একজনের বা একটি গ্রুপের নোটিফিকেশনও বন্ধ করে রাখা যায়।- বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন গেইম খেলা যায়।- লগ-আউট করা যায়।- ফেসবুক বন্ধ করে রাখলে বা একাউন্ট অচল(ডি-একটিভ) করে রাখলেও মেসেঞ্জারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রাখতে পারবে। ফেসবুক মেসেঞ্জারের অসুবিধাগুলো:- তথ্যের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার নিশ্চয়তা নেই। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তোমাকে না জানিয়ে তোমার কোন কল রেকর্ড ও মেসেজ সংরক্ষণ করতে পারে।-ফেসবুক মেসেঞ্জারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অভিযোগ সম্ভবত ব্যক্তিগত তথ্যকে ব্যাবহার করে ব্যাবসায়িক প্রচার। টার্গেটেড মার্কেটিং কথাটা হয়তো শুনে থাকবে। মনে করো তুমি তোমার কোন বন্ধুর সাথে মেসেঞ্জারে একটি ঘড়ি কেনার ব্যাপারে কথা বলার পরে ঘড়ির অনেক বিজ্ঞাপন দেখতে পাচ্ছো! তুমি ঘড়ি কেনার আগ্রহ দেখানোর সাথে সাথেই ফেসবুক জেনে গেলো তোমার ঘড়ি লাগবে। এখন সব ঘড়ির বিজ্ঞাপন তোমার সামনে আসছে!
আরও জানুনজনপ্রিয় কমিউনিকেশন অ্যাপ এর মধ্যে ইমো অন্যতম। বাংলাদেশে বিশেষ করে প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যরা বিদেশে যোগাযোগের জন্যে এই অ্যাপ বেশি ব্যাবহার করতে দেখা যায়। এই অ্যাপে সবচেয়ে আগে ভিডিও কলের অপশন থাকায় অনেক বেশি মানুষ ব্যবহার করেছে। ইমোতে টেক্সট মেসেজ পাঠানোর সুযোগ থাকলেও তাই অনেকেই এই অ্যাপকে শুধুমাত্র ভিডিও কল করার অ্যাপ হিসেবেই জানেন।ইমো অ্যাপ ব্যাবহার করতে কী প্রয়োজন?একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটারইন্টারনেট সংযোগইমো অ্যাপ ইমো ব্যাবহার করবে কীভাবে?গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে এই অ্যাপ ডাউনলোড করার পর এখানে ফোন নাম্বার দিতে বলবে। ফোন নাম্বার দেয়ার পর তোমার নাম্বারে একটি কোড পাঠাবে। এই কোড দিলেই ইমো একাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে মেসেজিং, অডিও-ভিডিও কল, ফাইল শেয়ারিং সব করা যাবে।১। কমিউনিকেশন অ্যাপগুলো দেখতে এবং ব্যবহার করতে প্রায় একই রকম। ইমো অ্যাপে অডিও এবং ভিডিও কলে কথা বলা যায়। সেজন্য যাকে ফোন দিবে তার ইনবক্সে গিয়ে অডিও বা ভিডিও কলের আইকনে ক্লিক করতে হবে।২। ইমো অ্যাপে লিখিত এবং অডিও দুই ধরণের মেসেজই পাঠানো যায়। লিখিত মেসেজ পাঠানোর জন্য মেসেজ বক্সে মেসেজটা টাইপ করে সেন্ড বাটন চাপলেই মেসেজ চলে যাবে। অডিও মেসেজ পাঠানোর জন্য অডিও আইকনে প্রেস করে কথা বললে সে কথা রেকর্ড হয়ে যাবে। যা সেন্ড বাটন চেপে পাঠিয়ে দেয়া যাবে।৩। যেকোন ছবি বা ভিডিও ইমোর মাধ্যমে পাঠানো যাবে। সেজন্য ছবি বা ভিডিও ফোনের কাঙ্ক্ষিত ফোল্ডার থেকে আপলোড করে তারপর পাঠাতে হবে।৫। ইমোতে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে একই কাজের বা চিন্তার মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে।ইমোর সুবিধাগুলোস্টিকার ও ইমোজি ব্যাবহার করা যায়কোন অপরিচিত বা খারাপ ব্যাবহার করা কাউকে ব্লক করতে পারবে।কাউকে ফোন করার সময় সে অনলাইনে থাকলে ''Ringing' এবং অফলাইনে থাকলে 'Calling' দেখাবে।ইমো ব্যাবহার করতে অনেক কম মেমোরি স্পেইসের প্রয়োজন হয়।১০ জিবি পর্যন্ত ফাইল শেয়ার করা যায়।হোয়াটসঅ্যাপ এর মত কারো ফোন নাম্বার সেইভ করে ইমোতেও যুক্ত হওয়া যায়।ইমোর অসুবিধাগুলোইমোতে কোন অপরিচিত নাম্বার আপনাআপনি তোমার ফোনে যুক্ত হয়ে যেতে পারে।ইমোর মাধ্যমে তোমার লোকেশন শেয়ার করা যায় না।অনেক বেশি বিজ্ঞাপন দেখায় যা অনেক ক্ষেত্রেই বিরক্তিকর লাগে।এখানে হোয়াটসঅ্যাপের মত এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।তোমার নাম্বার অন্য কোন অপরিচিত লোকের কাছে চলে যেতে পারে।যে কেউ আপনাকে ভিডিও এবং অডিও কল দিতে পারে। এখানে মেসেজ রিকুয়েস্ট এর মত অপরিচিত মেসেজগুলো আলাদা করার কোন সুযোগ নেই।ইমোতে অনেক অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন আসে যেগুলো তোমার মনোযোগ নষ্ট করবে। ইমোতে তথ্যের নিরাপত্তাএন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সিস্টেম না থাকায় এবং অবাঞ্ছিত ফোন, মেসেজ পাবার সম্ভাবনা, অন্য কারো নাম্বার অটোমেটিক যুক্ত হয়ে যাওয়ার সমস্যার জন্যে ইমোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত সুবিধাজনক না। অন্যান্য কমিউনিকেশন অ্যাপের তুলনায় ইমোতে অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশনের পরিমাণও অনেক বেশি।
আরও জানুন