কমিউনিকেশন অ্যাপের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে অনেক বেশি ব্যবহৃত অ্যাপ সম্ভবত মেসেঞ্জার অ্যাপ। মেসেঞ্জার হচ্ছে ফেসবুকের মেসেজিং অ্যাপ। মেসেঞ্জারের দুইটা অ্যাপ আছে। এর একটি হচ্ছে মেসেঞ্জার আরেকটি মেসেঞ্জার লাইট। মেসেঞ্জারের লাইট ভার্শনটি স্টোরেজ কম ব্যাবহার করে এবং অনেক কম ডাটা সার্ভিস ব্যবহার করে। কিন্তু এই অ্যাপে মেসেঞ্জারের মত সকল সুবিধা নেই।
মেসেঞ্জার অ্যাপ ব্যাবহার করতে কী প্রয়োজন?
একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার
ইন্টারনেট সংযোগ
মেসেঞ্জার অ্যাপ বা ইন্টারনেট ব্রাউজার
মেসেঞ্জার ব্যাবহার করবে কীভাবে?
ইন্টারনেট ব্রাউজারের মাধ্যমে
তোমার কম্পিউটারে ব্রাউজার দিয়ে ফেসবুক ব্যবহারের সাথে সাথে মেসেঞ্জার ব্যাবহার করা যায়। আবার মোবাইল ফোন এর যেকোনো একটা ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যবহার করে ফেসবুক ব্যবহারের পাশাপাশি মেসেঞ্জারও ব্যবহার করা যায়। সেজন্য মেসেঞ্জার অ্যাপ ডাউনলোড করার কোন প্রয়োজন নেই।
মেসেঞ্জার অ্যাপ এর মাধ্যমে
১. স্মার্ট ফোনে মেসেঞ্জার অ্যাপ বা মেসেঞ্জার লাইট অ্যাপ ডাউনলোড করেও মেসেঞ্জার ব্যাবহার করা যায়। গুগল প্লে স্টোর থেকে মেসেঞ্জার ডাউনলোড করে ইন্সটল করার পর ইমেইল বা ফোন এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে পারবে। ব্যবহার শেষে প্রয়োজনে লগ আউট করে রাখা যাবে।
২. কোন নতুন মেসেজ আসলে সেগুলো মেসেজ রিকুয়েস্ট (Message Request) অপশনে চলে যায়। তুমি দেখে যদি মনে করো যোগাযোগ করবে তাহলে রেসপন্স করলে সে যোগাযোগ করতে পারবে। তবে, প্রয়োজন মনে না করলে যোগাযোগ নাও করতে পারো।
৩. কেউ অনলাইনে থাকলে নামের পাশে সবুজ বিন্দু দেখে বোঝা যায়। জুম, গুগল মিটের মত মেসেঞ্জার কলে স্ক্রিন শেয়ার করার সুযোগ আছে।
মেসেঞ্জার ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
১। কমিউনিকেশন অ্যাপগুলো দেখতে এবং ব্যবহার করতে প্রায় একই রকম। ফেসবুক মেসেঞ্জারে অডিও এবং ভিডিও কলে কথা বলা যায়। সেজন্য যাকে ফোন দিবে তার ইনবক্সে গিয়ে অডিও বা ভিডিও কলের আইকনে ক্লিক করতে হবে।
২। মেসেঞ্জার মেসেজিং অ্যাপ হিসেবেই শুরুতে বেশি জনপ্রিয় ছিলো। এখানে লিখিত এবং অডিও দুই ধরণের মেসেজই পাঠানো যায়। লিখিত মেসেজ পাঠানোর জন্য মেসেজের বক্সে মেসেজটা টাইপ করে সেন্ড বাটন চাপলেই মেসেজ চলে যাবে। অযাচিত মেসেজ চলে গেলে প্রাপক দেখার আগেই মেসেজটা ডিলিট বা আনসেন্ট করার সুযোগ আছে।
৩। মেসেঞ্জারের মাধ্যমে যোগাযোগকে আরো আকর্ষণীয় করতে মেসেজের পাশাপাশি ইমোটিকন, GIF, Sticker ইত্যাদি ব্যবহার করার সুযোগ আছে।
৪। যেকোনো ছবি বা ভিডিও মেসেঞ্জারের মোবাইল বা কম্পিউটার যেকোনো ভার্শন থেকেই পাঠানো যাবে। সেজন্য ছবি বা ভিডিও ফোনের কাঙ্ক্ষিত ফোল্ডার থেকে আপলোড করে তারপর পাঠাতে হবে।
৪। মেসেঞ্জারের কম্পিউটার ভার্শনে অন্যান্য কাজের পাশাপাশি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, পাওয়ারপয়েন্ট, পিডিএফ এই ফাইলগুলো শেয়ার করা যায়। যা মোবাইল ভার্শনে করা যায় না।
৫। মেসেঞ্জারে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে একই কাজের বা চিন্তার মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে।
ফেসবুক মেসেঞ্জারের সুবিধাসমূহ:
- হোয়াটসঅ্যাপ এর মত এখানে কোন ফোন নাম্বার প্রয়োজন হয়না। কারো ফোন নাম্বার না জেনে শুধুমাত্র এই অ্যাপের মাধ্যমেই সবার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব।
- নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখা যায়। চাইলে কোন বিশেষ একজনের বা একটি গ্রুপের নোটিফিকেশনও বন্ধ করে রাখা যায়।
- বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন গেইম খেলা যায়।
- লগ-আউট করা যায়।
- ফেসবুক বন্ধ করে রাখলে বা একাউন্ট অচল(ডি-একটিভ) করে রাখলেও মেসেঞ্জারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রাখতে পারবে।
ফেসবুক মেসেঞ্জারের অসুবিধাগুলো:
- তথ্যের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার নিশ্চয়তা নেই। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তোমাকে না জানিয়ে তোমার কোন কল রেকর্ড ও মেসেজ সংরক্ষণ করতে পারে।
-ফেসবুক মেসেঞ্জারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অভিযোগ সম্ভবত ব্যক্তিগত তথ্যকে ব্যাবহার করে ব্যাবসায়িক প্রচার। টার্গেটেড মার্কেটিং কথাটা হয়তো শুনে থাকবে। মনে করো তুমি তোমার কোন বন্ধুর সাথে মেসেঞ্জারে একটি ঘড়ি কেনার ব্যাপারে কথা বলার পরে ঘড়ির অনেক বিজ্ঞাপন দেখতে পাচ্ছো! তুমি ঘড়ি কেনার আগ্রহ দেখানোর সাথে সাথেই ফেসবুক জেনে গেলো তোমার ঘড়ি লাগবে। এখন সব ঘড়ির বিজ্ঞাপন তোমার সামনে আসছে!