ব্রাউজার কী?আমাদের আশেপাশে চোখ বুলালেই আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির জয়জয়কার দেখতে পাই। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের সকল কাজ-কারবার এখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠেছে। এক সময়ে আমরা যোগাযোগের জন্য চিঠি লিখতাম, এখন মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠাই অথবা ইন্টারনেট ব্যবহার করে ইমেইল করি। স্কুলে ভর্তি হওয়া, চাকরির আবেদন ইত্যাদি কাজের জন্য পূর্বে আমাদেরকে কাগজে লেখা ফরম পূরণ করতে হতো। অনেক সময়ে এসব কাজের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকতে হতো। বর্তমানে আমরা ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরে বসেই এসব কাজ করে ফেলতে পারি। ইন্টারনেটের ব্যবহার আমাদের জীবনযাপন প্রক্রিয়াকে সহজ করেছে।মনে কর, পৃথিবীর বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত দেখতে তুমি পরিবারের সাথে কক্সবাজারে যাচ্ছ। কক্সবাজারে আরো কী কী দর্শনীয় স্থান রয়েছে তা জানতে তুমি ইন্টারনেটের সহায়তা নিয়েছ। এক্ষেত্রে, তুমি আসলে ইন্টারনেটে কিছু ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছো।কিন্তু এই ওয়েব সাইটে কীভাবে যাবে? ওয়েব সাইটের ঠিকানা কোথায় লিখবে?ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা কোনো নির্দিষ্ট কাজ করতে চাইলে আমাদেরকে বিভিন্ন সফটওয়্যার বা অ্যাপ ব্যবহার করতে হয়। বিভিন্ন ওয়েব সাইটে প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট সফটওয়্যার আছে। যে কোন ওয়েব সাইটে প্রবেশের আগে ঐ নির্দিষ্ট সফটওয়্যার চালু করতে হবে। তারপর ঐ সফটওয়্যারের মাধ্যমে চাহিদা মাফিক ওয়েব সাইটে প্রবেশ করা যাবে।যে সফটওয়ার বা অ্যাপ ব্যবহার করে ইন্টারনেটে প্রবেশ করা যায় তাকে ব্রাউজার বলে। ব্রাউজারের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোন ওয়েব সাইট বা তথ্য অনুসন্ধান করার প্রক্রিয়াকে বলে ব্রাউজিং। গুগল ক্রোম, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, অপেরা, মজিলা ফায়ার ফক্স এগুলো ব্রাউজারের উদাহরণ। সার্চ ইঞ্জিন কী?ধরো, কেউ একজন করোনা ভাইরাসের টিকা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে চায়, কিন্তু সে জানে না কোন ওয়েব সাইট থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ইন্টারেনেট ব্যবহার করে সে কিন্তু এই তথ্যটি খুঁজে বের করতে পারে। ইন্টারনেট থেকে তথ্য খুঁজে বের করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু ওয়েবসাইট বা সফটওয়্যার আছে, এগুলোকে বলে সার্চ ইঞ্জিন। যে কোন একটি সার্চ ইঞ্জিন চালু করে সেখানে “করোনা ভাইরাসের টিকা রেজিস্ট্রেশন” লিখে সার্চ দিলে https://surokkha.gov.bd/ এই ওয়েব সাইটের সন্ধান পাওয়া যাবে।সহজ কথায়, বিভিন্ন ধরনের তথ্যের সন্ধান করার জন্য যে ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করা হয় তাকে সার্চ ইঞ্জিন বলে। গুগল, ইয়াহু, বিং সার্চ ইত্যাদি বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন এর উদাহরণ।
আরও জানুনবিভিন্ন তথ্য খোঁজার কাজে আমরা বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি।ইন্টারনেট ব্যবহার করে যেকোনো সময়েই নিকটবর্তী বাজার, হাসপাতাল, ব্যাংক ইত্যাদির ঠিকানা জেনে নেওয়া যায়। মনে করো, তুমি বাবার সাথে সকালে স্কুল যাওয়ার জন্য বের হয়েছো। কোন রাস্তা ধরে স্কুলে গেলে ট্র্যাফিক জ্যাম কম হবে তা ইন্টারনেট ব্যবহার করে জেনে নিতে পারবে। কিংবা তোমার কাছাকাছি কোথায় স্টেশনারি দোকান বা রেস্টুরেন্ট আছে তা তুমি গুগলের সাহায্যে সহজেই জেনে নিতে পারো। এরকম হাজারো তথ্য জানতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারো। তবে মনে রাখতে হবে যে, ইন্টারনেট হলো তথ্যের সমুদ্র। এই বিশাল তথ্যের সমুদ্র থেকে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে বের করতে তোমাকে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে, নাহলে অপ্রয়োজনীয় তথ্যের ভীড়ে প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পাওয়াই মুশকিল হয়ে পড়বে। এক্ষেত্রে যেসব কৌশল ব্যবহার করতে পারো- ১. উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহার:চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাসেল একটি রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। রচনার বিষয়বস্তু ‘বাংলাদেশের নদী’। রচনাটি লিখতে রাসেলের বাংলাদেশের নদী সম্পর্কে তথ্য প্রয়োজন। এই তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রাসেল গুগলে বাংলাদেশের নদী লিখে সার্চ দিলো। ফলে বিভিন্ন ওয়েব সাইট ও ব্লগে ”বাংলাদেশ” সম্পর্কিত এবং “নদী” সম্পর্কিত যত তথ্য আছে তা গুগল প্রদর্শন করলো। অর্থাৎ, বাংলাদেশের খেলাধুলা, বাংলাদেশের রাস্তাঘাট, বাংলাদেশের রাজনীতি এসব তথ্যও যেমন গুগল প্রদর্শন করলো তেমনি ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল ইত্যাদি দেশের নদী সম্পর্কিত তথ্যও গুগল প্রদর্শন করলো। কিন্তু, রাসেলের কেবলমাত্র বাংলাদেশের নদী সম্পর্কিত তথ্য-ই প্রয়োজন।তোমরা কী জানো রাসেল কিভাবে অনুসন্ধান করলে শুধুমাত্র বাংলাদেশের নদী সম্পর্কিত তথ্য সম্পর্কে জানতে পারবে?শুধুমাত্র বাংলাদেশের নদী সম্পর্কে যথাযথ অনুসন্ধানের জন্য রাসেল যদি শব্দ দুইটিকে (” “) জোড় উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহার করে (“বাংলাদেশের নদী”এভাবে) অনুসন্ধান করে তাহলে, গুগল কেবল মাত্র বাংলাদেশের নদী সম্পর্কিত তথ্যগুলোই প্রদর্শন করবে। ফলে বিষয়বস্তুর সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমনঅসংখ্য তথ্যের ভীড়ে রাসেলকে বিভ্রান্ত হতে হবে না। ২. নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের ঠিকানা ব্যবহার:আবার ধরো, রাসেল বাংলাদেশের সকল নদীর নাম সম্পর্কে শুধুমাত্র ‘উইকিপিডিয়া’ নামক ওয়েবসাইটের তথ্যগুলি জানতে চায়। কিন্তু, শুধুমাত্র জোড় উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহার করে ‘বাংলাদেশের নদীর তালিকা’ লিখে অনুসন্ধান করায় উইকিপিডিয়াসহ আরো বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ‘বাংলাদেশের নদীর তালিকা’ সম্পর্কিত তথ্য গুগল পরিবেশন করলো।এক্ষেত্রে, শুধুমাত্র উইকিপিডিয়াতে বিদ্যমান ‘বাংলাদেশের নদীর তালিকা’ সম্পর্কিত তথ্য জানতে রাসেলকে কী করতে হবে জানো?রাসেল যদি ‘মূল বিষয়বস্তুর পাশাপাশি ওয়েব সাইটের ঠিকানা’ লিখে অনুসন্ধান করে, অর্থাৎ, শুধুমাত্র উইকিপিডিয়াতে বিদ্যমান ‘বাংলাদেশের নদীর তালিকা’ সম্পর্কিত তথ্য জানতে রাসেল যদি গুগলে ‘বাংলাদেশের নদীর তালিকা’ site:wikipedia.org এভাবে লিখে অনুসন্ধান করে তবে গুগল কাঙ্ক্ষিত ফলাফল প্রদর্শন করবে।৩. নির্দিষ্ট ফরম্যাটের ফাইলগুগলে কেবল ওয়েবপেজ বা তথ্যই নয়, তুমি চাইলে নির্দিষ্ট ফরম্যাটের ফাইলও গুগলে খুঁজতে পারবে। তবে ফাইলটিকে অবশ্যই কোনো ওয়েবসাইটে যুক্ত থাকতে হবে।মনে করো, একজন শিক্ষক পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বিজ্ঞান বইটিকে পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করতে চায় যেন তাঁর শিক্ষার্থীরা সেটিকে ল্যাপটপ, কম্পিউটার বা মোবাইলে পড়তে পারে। ফাইলটি ডাউনলোড করার উদ্দেশ্যে তাকে ক্ষেত্রে ”পঞ্চম শ্রেণী প্রাথমিক বিজ্ঞান filetype: pdf” লিখে সার্চ করতে হবে। তাহলে পঞ্চম শ্রেণীর প্রাথমিক বিজ্ঞান সম্পর্কিত সকল পিডিএফ ফাইল গুগল তাঁর সামনে প্রদর্শন করবে। ৪. একই নামে একাধিক ধরনের তথ্য থাকলেবাংলাদেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। তিনি সাহিত্যকর্মের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেছেন এবং অনেকগুলো চলচ্চিত্রও নির্মান করেছেন।রুনা হুমায়ূন আহমেদের বই পড়তে প্রচন্ড ভালোবাসে। হুমায়ূন আহমেদ এবং তার লেখা বই সম্পর্কে তথ্য জানতে সে একদিন গুগলে হুমায়ুন আহমেদ সম্পর্কে অনুসন্ধান করলো। অনুসন্ধানের ফলাফল হিসেবে গুগল হুমায়ুন আহমেদের লেখা কিছু বইয়ের পাশাপাশি তাঁর নির্মাণ করা চলচ্চিত্র, নাটক ইত্যাদি সম্পর্কেও অনেক তথ্য প্রদর্শন করলো। কিন্তু, রুনার প্রয়োজন কেবলমাত্র হুমায়ুন আহমেদ কর্তৃক লিখিত বই সংক্রান্ত তথ্য। তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্র,নাটক ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্যের কোন প্রয়োজন রুনার নেই । তুমি কি জানো কীভাবে অনুসন্ধান করলে রুনা শুধুমাত্র হুমায়ুন আহমেদের বই সম্পর্কিত তথ্য পেতে পারে?রুনা যদি গুগলের অনুসন্ধান বক্সে ‘হুমায়ুন আহমেদ’ লিখে book-এর আগে একটা যোগ চিহ্ন এবং movie-এর আগে একটা বিয়োগ চিহ্ন বসিয়ে অনুসন্ধান করে, অর্থাৎ, ‘হুমায়ূন আহমেদ +book -movie’ এভাবে লিখে অনুসন্ধান করে তাহলে গুগল তাকে শুধুমাত্র কাঙ্ক্ষিত ফলাফল প্রদর্শন করবে। ৫. নির্দিষ্ট সময়ের তথ্য খোঁজার কৌশলআমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমার। তুমি কি জানো মায়ানমারের রাজধানীর নাম কী?মিয়ানমারের বর্তমান রাজধানীর নাম ‘নাইপিদো বা নেপিদো’। নাইপিদো শহরটি সম্প্রতি মায়ানমারের রাজধানী হিসেবে গৃহীত হয়েছে। এর আগে মায়ানমারের রাজধানীর নাম ছিলো ‘রেংগুন বা ইয়াংগুন’। তুমি যদি গুগলে মায়ানমারের রাজধানীর নাম জানতে অনুসন্ধান করো, তাহলে কোথাও কোথাও মায়ানমারের রাজধানী হিসেবে রেঙ্গুন/ইয়াঙ্গুন আবার কোথাও কোথাও নাইপিদো প্রদর্শন করতে পারে।অর্থাৎ, একাধিক ধরনের উত্তর প্রদর্শন করায় কোনটি বর্তমান ও আসল রাজধানী এটি জানতে চাইলে তুমি বিভ্রান্তির শিকার হতে পারো। তাহলে এই সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কী?এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য তোমাকে ‘নির্দিষ্ট সময়ের তথ্য গুগলে খুঁজে বের করার পদ্ধতি জানতে হবে। গুগলে সাম্প্রতিক সময়ের তথ্য পাওয়ার পদ্ধতিটি নিম্নরূপ-তুমি যখন কোনো কিছু অনুসন্ধান করবে, তখন ফলাফল প্রদর্শন পৃষ্ঠায় অন্যান্য অপশনের সঙ্গে Tools নামে একটি বোতাম আসবে। এই টুলসে ক্লিক করলে Any time অর্থাৎ যেকোনো সময়ের তথ্যের অপশন দেখাবে। এটি পরিবর্তন করে ‘গত এক ঘণ্টা’, ‘এক দিন’, ‘এক সপ্তাহ’, ‘এক মাস’ কিংবা ‘এক বছর’ ইত্যাদি প্রয়োজনানুসারে দিতে হবে। এভাবে তুমি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংগঠিত হওয়া ঘটনা সম্পর্কে যথাযথ তথ্য খুঁজে বের করতে পারবে। ৬. ছবি সম্পর্কে তথ্য পেতেতথ্য খোঁজার পাশাপাশি গুগলে ছবি, ভিডিও, খবর, মানচিত্র, বই খোঁজা যায়। এদের মধ্যে বিশেষ করে গুগল ইমেজ সার্চ পদ্ধতি আমাদের বিভিন্ন কাজে বহুল ব্যবহৃত হয়।তুমি গুগলে কোনো ছবি আপলোড করে কিংবা ছবির লিংক দিয়ে একই ধরনের আরও ছবি খুঁজতে পারো। এ জন্য কম্পিউটার থেকে গুগল ইমেজে (images.google.com) গিয়ে সার্চ বারের ডান দিকের ক্যামেরা শাটার আইকনে ক্লিক করো। এবার এখানে ছবির লিংক পেস্ট করে অথবা ‘আপলোড অ্যান ইমেজ’ বোতামে ক্লিক করে কম্পিউটার থেকে নির্দিষ্ট ছবিটি আপলোড করো। এভাবে সার্চ করলে প্রদত্ত ছবির মতো আরো যেসব ছবি আছে সেগুলো গুগল প্রদর্শন করবে।
আরও জানুনআমাদের দেশের বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ হলো –‘চিল কান নিয়েছে শুনে চিলের পিছে দৌড়ানো’। কোনো তথ্য জানা মাত্রই সেটি যাচাই-বাছাই না করে প্রতিক্রিয়া দেখানোকে এই প্রবাদের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়েছে। এর ফলাফল নানান কারণে ভয়াবহ হতে পারে। যেকোনো তথ্য সংগ্রহ করার পরে এর সত্যতা ও নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি।মনে করো, আগামীকাল সকালে তোমার গণিত পরীক্ষা। তোমার কোনো এক বন্ধুর সৌজন্যে তুমি জানতে পারলে যে, তোমার পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তিত হয়েছে এবং গণিতের পরিবর্তে আগামীকাল তোমাকে ইংরেজি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এই অবস্থায় তুমি গণিত অনুশীলন বাদ দিয়ে ইংরেজি অনুশীলন শুরু করলে। কিন্তু, পরে তোমার মা শ্রেণী শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলেন, স্কুল থেকে রুটিন পরিবর্তন করার কোনো সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় ইংরেজি অনুশীলন শুরু না করে তোমার করণীয় কী হতে পারতো?অথবা, তুমি রেসলিং দেখতে পছন্দ করো। WWE এর সুপারস্টার ‘দ্য রক’ তোমার ভীষণ পছন্দ। দ্য রক এর আসল নাম ডুয়াইন জনসন। তো, একদিন বিকেলে তোমার বন্ধুর সাথে রেসলিং নিয়ে গল্প করতে করতে তুমি জানতে পারলে – ‘দ্য রক’ নামে পরিচিত ডুয়াইন জনসন মারা গিয়েছেন। এই খবর শুনে তুমি ভীষণভাবে মন খারাপ করলে এবং তোমার আরেক বন্ধু রুনি যে কিনা তোমার মতই ‘দ্য রক’ এর অনুসারী, তাকেও বাসায় ফিরে এই খবরটি জানালে। কিন্তু, পরবর্তীতে তোমার বাবার মাধ্যমে জানতে পারলে যে, ‘দ্য রক’ বেচে আছেন এবং তোমার জানা তথ্যটি ভুয়া ছিলো। এই ভুয়া তথ্যটি তুমি আসলে অজ্ঞতাবশত ছড়িয়ে দিয়েছো তোমার বন্ধুর (রুনি) কাছেও। এক্ষেত্রেও তোমার করণীয় কী হতে পারতো?উভয়ক্ষেত্রেই তথ্যের সত্যতা, যেই উৎস থেকে তথ্যটি পেয়েছো সেটির গ্রহণযোগ্যতা এবং নির্ভরযোগ্যতা যাচাই বাছাই করলে তুমি বিড়ম্বনা এড়িয়ে যেতে পারবে। তাই প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে যে তথ্যটি “সঠিক” নাকি “ভুল”। সঠিক তথ্য যেমন বড় বড় সমস্যার সমাধান করতে পারে, তেমনি ভুল তথ্য অনেক বড় বড় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। মিথ্যা বা ভুল তথ্য যে সকল ক্ষয় ক্ষতি করতে পারে-১। মিথ্যা বা ভুল তথ্যের কারণে মানুষ প্রতারিত হতে পারে।২। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হতে পারে।৩। মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারে।৪। সামাজিক ও রাজনৈতিক হানাহানি, সংঘাত এমন কি প্রাণহানিও ঘটতে পারে।এছাড়াও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি, সামাজিকভাবে হেয় হওয়া সহ আরও অনেক সমস্যার উদ্ভব ঘটতে পারে ভুল তথ্য শেয়ারের ফলে। এজন্য কোন তথ্য প্রকাশ বা শেয়ারের আগে তথ্যের সঠিকতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।কোন তথ্য জেনে প্রতিক্রিয়া দেখানো অথবা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার পূর্বে তোমাকে যেই কাজগুলি করতে হবে-১। তথ্যের নির্ভুলতা ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হতে হবে। এজন্য তথ্যটি সম্পর্কে গুগলে সার্চ দিয়ে তথ্যের উৎস, তথ্য বা ঘটনার তারিখ ইত্যাদি জেনে নেওয়া দরকার। তথ্যের উৎস নির্ভরযোগ্য কিনা এবং সুপরিচিত কিনা, ছবি বা ভিডিও এডিট করা কিনা এসব গুগলে সার্চ করার মাধ্যমে জানা যায় এবং তথ্যটির সঠিকতা সম্পর্কে যাচাই করা যায়।২। তথ্যটি শেয়ারের ফলে কোন বিভ্রান্তি, ভুল বোঝাবুঝি বা সংঘাতের সৃষ্টি হবে কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। ৩। কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র এবং সংবাদ মাধ্যমে খোঁজ করতে হবে।৪। বিষয়বস্তু নির্মাতার কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে সে সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে। ৫। বিষয়বস্তুটি সমাজের কারো উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কি না তা চিন্তা করতে হবে।
আরও জানুন