করোনাকালীন সময়ে বেশিরভাগ কাজই অনলাইনে চালিয়ে যেতে হয়েছিলো। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো ডাক্তার দেখানো। ডাক্তার, নার্স বা হাসপাতালের সাথে যুক্ত সকলেই নিজেদের নিরাপত্তার জন্যে রোগী দেখা বন্ধ করে দিচ্ছিলেন। আবার কিছু কিছু হাসপাতাল শুধুই কোভিডের রোগীর জন্যেই নিয়োজিত থাকায় অন্য রোগীরা সেখানে যেতে পারতেন না। এমন একটি অবস্থায় অনলাইনে ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নেয়ার প্রক্রিয়াটা খুব কার্যকর একটা পদ্ধতি ছিলো। কিন্তু জানার অভাব এবং ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের অভিজ্ঞতার অভাবে অনেকেই এই সেবা নিতে পারেননি। তবে করোনা পরবর্তী বাংলাদেশে ডিজিটাল মাধ্যমের উপর নির্ভরতা বেড়ে গেছে অনেক। ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট, অনলাইনে বিভিন্ন কোর্স করা থেকে শুরু করে অনেককিছুই এখন অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইন নির্ভর। তবে আরও আগে থেকেই অনলাইনে বা হটলাইনে ফোনকলের মাধ্যমে ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নিশ্চিত করার সুযোগ অনেক হাসপাতালেই ছিলো। এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছে টেলিমেডিসিন সেবা।অনলাইনে ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নিবে কীভাবে?১। বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকেhttps://doctorkoi.com/ক) এই ওয়েবসাইটে গিয়ে নাম এবং মোবাইল নাম্বার দিয়ে সাইন আপ করলে কাঙ্ক্ষিত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবে।খ) কিংবা হটলাইন নাম্বারে (+৮৮০৯৬৬৬৭৭৭১১) ফোন করেও এপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবে। সেজন্য যা যা করবে –হটলাইন নাম্বারটিতে ফোন করতে হবেএকজন এজেন্ট ফোন ধরবেন, তাকে কাঙ্ক্ষিত ডাক্তারের নাম এবং রোগীর তথ্য দিবেন।তারপর এজেন্ট এপয়েন্টমেন্টের জন্যে সময় ঠিক করবেন।ক্রেডিট কার্ড বা বিকাশের মাধ্যমে ডাক্তারের ফি অগ্রীম পাঠিয়ে এপয়েন্টমেন্ট নিশ্চিত করতে হবে।এরপর এপয়েন্টমেন্টের সময় এবং অন্যান্য তথ্য ফোনে মেসেজ করে জানিয়ে দেয়া হবে।রোগীর নাম্বারে ফোন দিয়ে এজেন্ট রোগীকে ভিডিও বা অডিও কলের অ্যাপ তৈরি রাখতে সহযোগিতা করবেন।ভিডিও বা অডিও কল করার অ্যাপের মাধ্যমে ডাক্তার ও রোগীকে যুক্ত করে দেয়া হবে।ডাক্তারের থেকে প্রেসক্রিপশন সংগ্রহ করে রোগীকে ইমেইলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া হবে।পরবর্তীতে অন্য কোন প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে হলে এজেন্টের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যায়।এমন আরও কয়েকটি ওয়েবসাইট যেমন ডক্টরস বিডি ডট কম এবং ডাক্তার ভাই এর মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সেবা এবং এপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবে। সবগুলোর এপয়েন্টমেন্ট নেয়ার প্রক্রিয়া কমবেশি একইরকম। ২। বিভিন্ন হাসপাতালের নিজস্ব অনলাইন এপয়েন্টমেন্ট সেবার মাধ্যমেইউনাইটেড হাসপাতাল(ঢাকা)টেলিমেডিসিন সেবার এপয়েন্টমেন্ট নেবার জন্যে ১০৬৬৬ বা ০২ ২২ ২২ ৬২ ৪৬৬ নাম্বারে ফোন করতে হবে।এপয়েন্টমেন্টের সময় নিশ্চিত হবার পর বিকাশ বা ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে ফি পাঠিয়ে দিতে হবে।ফি পাঠিয়ে দেয়ার পর ফোন করে নিশ্চিত করতে হবে। এপয়েন্টমেন্টের ৫-৬ ঘণ্টা আগে ফি পরিশোধ না করলে এপয়েন্টমেন্ট অনিশ্চিত হয়ে যাবে।এপয়েন্টমেন্ট নিশ্চিত হলে পর স্কাইপ বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ডাক্তার দেখানো যাবে।ল্যাবএইড হাসপাতালল্যাব এইড হাসপাতালের ২৪ ঘণ্টা সচল হটলাইন সেবা ১০৬০৬ এ কল করে এপয়েন্টমেন্ট নিতে পারো। তবে ডাক্তার দেখানোর জন্যে হাসপাতালে যেতে হবে।পপুলার হাসপাতাল পপুলার হাসপাতালের ধানমন্ডি শাখায় ফ্রি টেলিমেডিসিন সেবা পাবে শনি-বৃহস্পতিবার সেজন্য ০৯৬১৩৭৮৭৮০০ এই এই নাম্বারে ফোন করে সময় জেনে সেভাবে অ্যাপয়নেমেন্ট নিতে হবে। বিভিন্ন শাখার হটলাইন নাম্বারে ফোন করেও ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যাবে। সবগুলো শাখার হটলাইন নাম্বার পাবে এখানে- https://www.populardiagnostic.com/call-for-appointment? অনলাইনে ডাক্তার দেখাতে চাইলে ‘অনলাইন ডক্টর এপয়েন্টমেন্ট’ সেকশনে গিয়ে হাসপাতালের কোন শাখায় দেখাতে চাও সে শাখার নাম, ডাক্তারের নাম, তারিখ ইত্যাদি নির্বাচন করে তোমার নাম এবং ফোন নাম্বার দিতে হবে। এরপর বিকাশের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করলে এপয়েন্টমেন্ট পেয়ে যাবে। এভাবে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সরাসরি গিয়ে ডাক্তার দেখাতে চাইলে তারও সুযোগ আছে। এই লিঙ্কে এই সেবা পাবে https://populardiagnostic.com/booking/appointment এছাড়াও অন্যান্য হাসপাতাল যেমন বারডেম হাসপাতাল, মডার্ন হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসপাতাল, স্কয়ার হাসপাতালে অনলাইনে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়ার ব্যবস্থা আছে। এসব হাসপাতালের ওয়েবসাইটে গেলেই এসব তথ্য খুব সহজেই পাওয়া যাবে।
আরও জানুনতথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে আমাদের জীবনযাত্রা এতই সহজ হয়ে গেছে যে এখন ট্রেন, বাস, লঞ্চ এবং বিমানের টিকেট কাটার জন্য সশরীরে যেতে হয়না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কাটার ঝামেলাও এখন নেই। শুধু একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার থাকলেই তুমি অধিকাংশ টিকেট বাড়িতে বসেই করে ফেলতে পারবে।ট্রেনের টিকেট ক্রয় করবে কীভাবে?ট্রেনের টিকেট কেনার জন্যে ‘রেলসেবা’ নামে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি অ্যাপ আছে। এখান থেকে খুব সহজেই ট্রেনের টিকেট কেনা যাবে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-সেবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও ট্রেনের টিকেট করা যাবে। ১। অ্যাপের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট কেনাপ্রথমেই, গুগল প্লে স্টোরে ‘Rail Sheba’ লিখে সার্চ দিয়ে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করে নাও।অ্যাপটি ডাউনলোড হয়ে গেলে ‘Sign Up’ এ ক্লিক করে ইমেল এড্রেস, ফোন নাম্বার, নাম, পাসওয়ার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।রেজিস্ট্রেশনের পর ইমেইলে ভ্যারিফিকেশন লিঙ্ক পাঠাবে। এই লিঙ্কে ক্লিক করলেই অ্যাকাউন্ট সচল হয়ে যাবে।অ্যাকাউন্ট সচল হবার পর একাউন্টে গিয়ে প্রোফাইল সম্পূর্ণ করতে হবে। সেজন্য তোমার জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার বা জন্ম নিবন্ধন নাম্বার দিয়ে প্রোফাইল সম্পূর্ণ করতে হবে।অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে এই অ্যাপে লগ ইন করে ট্রেনের টিকেট কাটা, ট্রেনের সময়সূচী জানা, প্রয়োজনে ট্রেনের বগিও দেখে নেয়া যাবে।টিকেট কেনার জন্য ‘Purchase’ এ ক্লিক করে যাত্রা শুরু ও শেষের স্টেশন, তারিখ, যাত্রী সংখ্যা এবং আসনের শ্রেণী (শোভন, শো: চেয়ার, এসি, স্নিগ্ধা) নির্বাচন করতে হবে। তাহলে এই তারিখে কোন কোন ট্রেন আছে, সময় কখন সেসব বিস্তারিত তথ্য আসবে। এমনকি পছন্দসই সিটও নির্বাচন করে নিতে পারবে।একজন সর্বোচ্চ ৪ টি টিকেট কাটতে পারবে। সেজন্য এর বেশি সিট নির্বাচন করা যাবে না। এবং একটি একাউন্ট দিয়ে এক সপ্তাহে ২ বারের বেশি টিকেট ক্রয় করা যাবেনা।সিট নির্বাচন করে ‘Continue’ এ ক্লিক করলে ভাড়াসহ সকল তথ্য চলে আসবে। ভাড়ার সাথে ব্যাংক চার্জ এবং ভ্যাট যুক্ত হয়ে পুরো পরিমাণটা দেখাবে।‘pay now’ এ ক্লিক করলে ডিজিটাল পেমেন্টের সুযোগ দিবে। এখানে বিকাশ, রকেট, ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড, নেক্সাস কার্ড দিয়ে ভাড়া পরিশোধের সুযোগ আছে।পছন্দসই মাধ্যম নির্বাচন করে একাউন্ট নাম্বার ও পিন নাম্বার দেয়ার পর একটি কোড আসবে ফোনে। এই কোড দিলেই টিকেট কাটা হয়ে গেলো। তোমার অ্যাকাউন্ট থেকে ভাড়ার সমপরিমাণ টাকা কেটে নিবে এবং ৩০ মিনিটের মধ্যে মেইল করে টিকেট পাঠিয়ে দিবে। আবার অ্যাপে গিয়ে ‘History’ তে ক্লিক করলেও টিকেট ডাউনলোড করতে পারবে।২। ই-সেবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও ট্রেনের টিকেট কেনাবাংলাদেশ রেলওয়ের ই-সেবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও ট্রেনের টিকেট কেনা যাবে।বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-সেবা ওয়েবসাইট https://www.esheba.cnsbd.com/ এ প্রবেশ করো।এখানে প্রবেশ করে নাম, ইমেইল এড্রেস, মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।রেজিস্ট্রেশনের পর জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার দিয়ে প্রোফাইল সম্পূর্ণ করতে হবে।রেজিস্ট্রেশন করে একাউন্ট চালু হয়ে যাবার পর ট্রেনের টিকেট কেনা যাবে।টিকেট কেনার জন্যে উপরের ওয়েবসাইটে গিয়ে যাত্রার স্থান এবং যাত্রা শুরুর স্থান নির্বাচন করো।তারিখ, আসনের ধরন, টিকেটের সংখ্যা নির্বাচন করলে এই তারিখে সচল সকল ট্রেনের তালিকা এবং সময়সূচি আসবে।ট্রেন নির্বাচন করার পর ‘Details’ এ ক্লিক করে ‘Availability’ নির্বাচন করলে এখনো অবিক্রীত টিকেটের সংখ্যা এবং ভাড়া দেখা যাবে।‘Purchase’ এ ক্লিক করলে লগইন এর অপশন দেখাবে। লগইন করলে অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে ভাড়া দেয়ার পরে ইমেইল ঠিকানায় টিকেট পাঠিয়ে দেয়া হবে।যাত্রার সময় এই টিকেট প্রিন্ট করে নিতে পারো অথবা স্টেশনের টিকেট কাউন্টারে এই ই-টিকেট দেখালে প্রিন্ট করা কাউন্টার টিকেট দিবে।৩। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমেট্রেনের টিকেট বিকাশ অ্যাপ দিয়েও কিনতে পারবে।টিকিট কিনতে বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করে অ্যাপের টিকেট আইকন থেকে ট্রেন নির্বাচন করতে হবে।এখানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘ই-টিকেটিং সার্ভিস’ স্ক্রিন আসবে।এখানে যাত্রার শুরুর স্থান, গন্তব্য, তারিখ, টিকেটের সংখ্যা এসব তথ্য দিয়ে ট্রেন নির্বাচন করতে হবে।গ্রাহকের প্রয়োজনীয় টিকেট থাকলে ‘purchase’ এ যেতে হবে।রেলওয়ের ওয়েবসাইট বা এপের নিবন্ধিত আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে।এরপর বিকাশ দিয়ে ভাড়া দেয়ার গেটওয়ে আসবে।গেটওয়েতে বিকাশ নম্বর দিলে ফোনে একটি ভ্যারিফিকেশন কোড আসবে।এই কোড ও পিন নাম্বার দিয়ে টিকেট নিশ্চিত করলে ইমেইল করে টিকেট পাঠিয়ে দেয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে রেলওয়ের ই-টিকেটিংয়ে একাউন্ট করে রাখতে হবে। বাসের টিকেট কিনবে কীভাবে?বেশ কিছু বাস কোম্পানির টিকেট অনলাইনে কাটার ব্যবস্থা আছে। চলো অনলাইনে বাসের টিকেট কেনার কিছু মাধ্যম জেনে নেই -১। সহজ ডট কম থেকেশুরুতেই সহজ অ্যাপ বা ওয়েবে গিয়ে যাত্রা শুরু ও শেষের শহরের নাম, যাত্রার তারিখ নির্বাচন করলে এই দুই শহরে যাতায়াতকারী সকল বাসের নাম, ভাড়া এবং যাত্রার সময়সূচীর তালিকা আসবে।এখান থেকে বাস নির্বাচন করে বাসের পছন্দসই সিট নির্বাচন করতে হবে।সিট নির্বাচনের পর তোমার পূর্ণ নাম, ফোন নাম্বার এবং ইমেইল এড্রেস দিতে হবে।এরপর অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করলে মেইলের মাধ্যমে টিকেট পেয়ে যাবে।এখানে বিকাশ, রকেটসহ অনেকগুলো অনলাইন পেমেন্ট মাধ্যমে ভাড়া দেয়ার ব্যবস্থা আছে।২। গ্রিন লাইনের ওয়েবসাইট থেকেগ্রীনলাইনের ওয়েবসাইট https://greenlinebd.com/ এ গিয়ে যাত্রা শুরুর স্থান, গন্তব্য এবং যাত্রার তারিখ নির্বাচন করলে ভাড়ার পরিমাণ, বাসের সময়সূচী এবং বিভিন্ন ধরনের বাসের তালিকা আসবে।এখান থেকে পছন্দসই একটি বাস নির্বাচন করলে সিট বাছাইয়ের সুযোগ দেবে।এখান থেকে সিট নির্বাচন করে পরের ধাপে গিয়ে নাম, ফোন নাম্বার এবং ইমেইল এড্রেস দিতে হবে।এরপর ‘Proceed to Pay’ তে ক্লিক করলে অনলাইন মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধের অপশন দেখাবে। সেগুলোর মধ্যে তোমার সুবিধাজনক মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করলে ইমেইলে ই-টিকেট পাঠিয়ে দেয়া হবে।ই-টিকেট যাত্রার আগে কাউন্টারে দেখালে প্রিন্টেড টিকেট দিয়ে দিবে।এছাড়া কিছু বাস কোম্পানি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে টিকেট কেনার সুযোগ দিয়ে থাকে।
আরও জানুনবর্তমান যুগে টাকাপয়সা লেনদেনের ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যমগুলো অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড কিংবা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অনলাইন লেনদেন করা হয়ে থাকে। এসব লেনদেনের ক্ষেত্রে তথ্য ও অর্থের নিরাপত্তা একটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিরাপদ অনলাইন লেনদেন করতে হলে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা খুবই জরুরি।১। পিন নাম্বার গোপন রাখতে হবেতোমার যেকোনো একাউন্টের পিন নাম্বারটি একটি গোপন সংখ্যা যা তুমি ছাড়া আর কেউ জানবে না। কেউ এই নাম্বার গোপন রাখবে। পিন নাম্বার এবং একাউন্ট নাম্বার জেনে গেলে একাউন্টের নিরাপত্তা নষ্ট হয়। সে ব্যক্তি চাইলে তোমাকে বড় ধরনের আর্থিক ঝামেলার মধ্যে ফেলে দিতে পারে।২। ওটিপি বা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড কাউকে দেয়া যাবে নাবিভিন্ন অ্যাকাউন্টে অ্যাকাউন্ট খোলা, ভ্যারিফিকেশন ইত্যাদি কাজে মোবাইলে মেসেজ দিয়ে বা ইমেইল করে ওটিপি পাঠানো হয়। যা টু ফ্যক্টর অথেনটিকেশনের (দুই ধাপে পরিচয় যাচাই) মত কাজ করে। এই ওটিপি অন্য কাউকে দিয়ে দিলে সে তোমার অ্যাকাউন্টের টাকা ট্রান্সফার করে নিতে পারে।৩। অ্যাকাউন্ট নাম্বার কোন মাধ্যমে শেয়ার করার ব্যাপারে সতর্ক থাকুনকোন অনলাইন প্লাটফর্মে অ্যাকাউন্ট নাম্বার, পিন নাম্বার ইত্যাদি শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন। এ ধরনের গোপনীয় তথ্য অনলাইনে শেয়ার করলে নিরাপদ জায়গা বা ব্যক্তির সাথে করতে হবে। প্রয়োজন শেষে শেয়ারকৃত তথ্য মুছে ফেলতে হবে।৪। খুব কাছের কাউকেও একাউন্টের গোপনীয় তথ্য দেয়া যাবেনাতোমারপরিবারের সদস্য, বন্ধুকে বা কাছের কারো সাথে অ্যাকাউন্টের পিন নাম্বার বা পাসওয়ার্ড শেয়ার না করাই উত্তম। তথ্যের গোপনীয়তা যত বেশি থাকবে, তোমার অ্যাকাউন্ট তত বেশি নিরাপদ থাকবে। এই ব্যাপারটা একেবারে ব্যক্তিগত বিষয়। ব্যক্তিগত না রাখতে পারলে বিপদে পড়বে।৫। কোন অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে লেনদেন করলে ঠিক ওয়েবসাইটেই তথ্য দিচ্ছো কিনা খেয়াল করোঅনলাইন লেনদেনের বড় একটি অংশই হয় অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে। এখানে অ্যাকাউন্ট নাম্বার, পিন নাম্বার, ওটিপি ইত্যাদি দিতে হয়। যে সাইটে এসব তথ্য দিচ্ছো লক্ষ্য করো যে সাইটটা কোন ফিশিং সাইট কি না। ওয়েবসাইটটির এড্রেস দেখে যদি কোন সন্দেহ হয় তাহলে সেখানে অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য দেয়া থেকে বিরত থাকো। প্রয়োজনে কাস্টামার কেয়ার প্রতিনিধির সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নাও। ৬। অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেছে বা কোন ব্যাংকিং অফিস থেকে ফোন দিয়ে গোপনীয় তথ্য চাইলে সতর্ক থাকবেঅ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবার কথা বলে একটি চক্র আমাদের টাকাপয়সা নিজের অ্যাকাউন্টে নিয়ে নিতে চায়। এদের থেকে সতর্ক থাকবে। এরকম কেউ ফোন করলে সতর্ক হয়ে যাবে। এ ধরনের লোক প্রতারক হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ কোন অনলাইন ব্যাংকিং কর্তৃপক্ষ থেকে তোমাকে কখনোই কল করে এ ধরনের কথা বলবে না। ওটিপি বা পিন নাম্বার তো চাইবেই না।৭। লেনদেনের ক্ষেত্রে যেকোনো সমস্যা হলে, সন্দেহ হলে ব্যাংক বা অনলাইন মাধ্যমের কর্তৃপক্ষকে জানাওলেনদেন সম্পর্কিত যেকোনো ধরনের সন্দেহ, প্রশ্ন দেখা দিলে বা বাড়তি কিছু জানতে চাওয়ার জন্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে যোগাযোগ করো। পরিচিত/ অপরিচিত মানুষদের থেকে ভুল এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিস জেনে নিজে থেকেই অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে না। সমস্যা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে জানানোর ফলে ভবিষ্যতে এ ধরনের সমস্যায় পড়ার হার কমে যাবে। এই ব্যাপারে সাথে সাথেই বিশ্বাসযোগ্য কারো সাথে আলাপ করে পদক্ষেপ নিলে অনেকসময় এসব প্রতারক চক্র থেকে বাঁচা যায়।৮। অন্য কারো জাতীয় পরিচয়পত্র বা ফোন নাম্বার ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট খোলা বা সিম কেনা যাবে নাঅনেক সময় আমরা জাতীয় পরিচয়পত্র এখনো না পাওয়ায় অন্য কারো জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলি, যা একেবারেই উচিত না। কারণ সেই জাতীয় পরিচয়পত্র বা ফোন নাম্বার হচ্ছে স্বতন্ত্র পরিচয় যা দিয়ে কোন একজন ব্যক্তিকে সনাক্ত করা হয়। অন্যের তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট করলে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা খুব সহজেই নষ্ট হতে পারে। এই কাজ করাই যাবে না। একইভাবে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েও কোন অবস্থাতেই অন্য কাউকে অ্যাকাউন্ট খুলে দেয়া যাবে না।
আরও জানুনঅনলাইনে লেনদেন করার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে, এপে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য দিতেই হয়। এসব সাইটে তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় নানান ঝুঁকিতে পড়তে হয়। সেজন্য কোন আর্থিক লেনদেন সংশ্লিষ্ট তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা জরুরি। ব্যক্তিগত তথ্যকে নিরাপদে ব্যবহার করতে পারা এই সময়ে বেশ ভালো একটি যোগ্যতা।অনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্য দেয়ার বেলায় কী কী সতর্কতা ব্যবস্থা নেয়া উচিত?১। লেনদেনের প্লাটফর্মটা আসল কিনা দেখে তারপর তথ্য দাওযে মাধ্যমে লেনদেন করছো তা কোন ফিশিং সাইট কিনা লক্ষ্য করো। অনেক সময় আসল ওয়েবসাইটের মত করে অনেক ফিশিং সাইট বানানো হয় যেগুলো আসলে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বানানো হয়। অ্যাকাউন্টের গোপনীয় তথ্য এখানে দিয়ে দিলে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হতে পারে। কিংবা অ্যাকাউন্টের সকল টাকা ট্রান্সফার করে নিতে পারে। সেজন্য কোন সাইটে তথ্য দিচ্ছো, লেনদেন করছো তা নিশ্চিত হয়ে নেয়াটা খুবই জরুরি। ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেস বা ইউআরএল-এ লক্ষ্য করে দেখতে হবে, অপরিচিত কোনো অ্যাড্রেস কিনা এবং পরিচিত সাইট হলেও সাইটের নামের বানান শুদ্ধ ও সঠিক আছে কিনা সেটি যাচাই করে নিতে হবে। এছাড়া ওয়েবসাইটের এড্রেসে https:// আছে কিনা সেটাও দেখে নাও।২। টাকার পরিমাণ ঠিক আছে কিনা দেখে নাওঅনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে টাকার অঙ্ক টাইপ করার সময় ভুল করে বেশি টাকা চলে যেতে পারে। সেজন্য লেনদেন করার সময় কত টাকা দিচ্ছো তা খেয়াল করে তারপর টাকা পাঠাও। কমবেশি হয়ে গেলে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।৩। পিন নাম্বার গোপন রাখতে হবেব্যাংকের পক্ষ থেকে যদি কেউ পিন নাম্বার জানতে চায় তবুও পিন নাম্বার বলা যাবে না। ব্যাংকের কেউ পিন নাম্বার জানতেও চাইবে না। জানতে চাইলে ধরে নিবে এই লোক প্রতারক। এদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে।৪। নাম এবং ফোন নাম্বার সঠিক কিনা দেখে নাওযে নাম এবং ফোন নাম্বার দিচ্ছো তা পুনরায় যাচাই করে নিশ্চিত হয়ে নাও। ফোন নাম্বার বা নামে কোন ভুল থাকলে টাকা বা পণ্য ভুল ঠিকানায় চলে যেতে পারে। অথবা অন্য লোকের কাছে তোমার অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ চলে যেতে পারে, যা আরও ভয়াবহ।৫। কারো সাথে পাসওয়ার্ড শেয়ার করা যাবে নাপাসওয়ার্ড হচ্ছে খুবই ব্যক্তিগত জিনিস। পাসওয়ার্ড কারো সাথে শেয়ার করা যাবেনা। খুব কাছের কারো সাথেও পাসওয়ার্ড শেয়ার করা অনুচিত। অ্যাকাউন্টের মেইল ও পাসওয়ার্ড কাউকে দিয়ে দেয়া মানে নিজে যেচে অ্যাকাউন্টকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা। ৬। পাসওয়ার্ড, অ্যাকাউন্ট নাম্বার বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ই-কমার্স সাইটে বা অন্য কোথাও সেইভ করে রাখা যাবেনাঅনেক সময় অলসতা করে বারবার পাসওয়ার্ড দেয়ার ঝামেলা এড়ানোর জন্যে আমরা বিভিন্ন সাইটে পাসওয়ার্ড সেইভ করে রাখি। এই কাজটা মোটেও করা যাবেনা। এসব সাইটে অ্যাকাউন্ট নাম্বার, পাসওয়ার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড/ডেবিট কার্ডের তথ্য সংরক্ষণ করার খুব বেশি প্রয়োজন হলে কাজ শেষে এগুলো ডিলিট করে দাও।৭। অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ ও ট্রানজেকশন আইডি কাউকে জানানো উচিত নাকারো সাথে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠানোর তথ্য শেয়ার করার প্রয়োজন হলে ব্যাংকে থাকা টাকার পরিমাণ এবং ট্রানজেকশন আইডি মুছে দাও। একাউন্টের তথ্য দিয়ে তুমি প্রতারকদের লক্ষ্যে পরিণত হতে পারো। যা কোনভাবেই ভালো খবর না।
আরও জানুনঅনলাইনে আর্থিক লেনদেনের সুযোগ থাকায় সবার জীবনযাত্রা অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। বিকাশ, নগদ, রকেট, শিওরক্যাশ, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি অনলাইন ব্যাংকিং সেবার কারণে আর্থিক লেনদেন জনসাধারণের জন্যে সহজ হওয়ায় এর গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেড়ে গেছে। এর পাশাপাশি বেড়েছে অনলাইন লেনদেনের ঝুঁকির পরিমাণও।অনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো কী হতে পারে?১। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংঅনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাক হবার সম্ভাবনা থাকে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার,পাসওয়ার্ডের মত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিরাপদে না রাখতে জানলে হ্যাকারের আক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। এসব তথ্য নিরাপদে রাখা জরুরি। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দেয়া অ্যাকাউন্টকে অনেক নিরাপত্তা দিতে পারে।২। ভুল অ্যাকাউন্ট নাম্বারে টাকা চলে যাওয়াকোথাও টাকা পাঠাতে গেলে অ্যাকাউন্ট নাম্বারের একটা সংখ্যা ভুল টাইপ করার কারণে ভুল নাম্বারে টাকা চলে যেতে পারে। লেনদেনের ক্ষেত্রে অসতর্ক থাকলে এ ধরনের সমস্যা খুব স্বাভাবিক।৩। নকল পেমেন্ট গেটওয়েতে অ্যাকাউন্টের গোপনীয় তথ্য দেয়াঅনলাইন পেমেন্ট গেটওয়েতে তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে সাবধান থাকা জরুরি। অনেক সময় সত্যিকার ওয়েবসাইটের মত করে ভুয়া ফিশিং সাইট বানানো হয় এবং এগুলোতে অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে অ্যাকাউন্টের গোপনীয় তথ্য জেনে নিয়ে অ্যাকাউন্টের টাকা নিজ অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে নেয়। সন্দেহ হলে এসব গেটওয়ে চেনার জন্যে গুগলে সার্চ করে দেখে নিতে পারো। আবার যে ওয়েবসাইটে কেনাকাটা করছো সেই ওয়েবসাইট আসল হলে পেমেন্ট গেটওয়ে আসল হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ওয়েব এড্রেসটা খেয়াল করলে বুঝতে পারবে।৪। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেয়ার পরেও কাঙ্ক্ষিত সেবা না দেয়াঅনলাইনে কোন অ্যাকাউন্টের সাবস্ক্রিপশন, ট্রেন-বাস-লঞ্চের টিকেট কেনার সময় টাকা কেটে নেয়ার পরও কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেতে পারো। কখনো এমনও হতে পারে যে টাকা প্রদানের কোন মেসেজই তোমার ফোনে আসলো না যা দিয়ে অর্থ প্রদানের প্রমাণ দিতে পারো। এমন সমস্যায় পরলে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে সমস্যা সমাধান হতে পারে।৫। এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের সময় অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেয়ার পরেও টাকা হাতে না পাওয়াএটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে অনেক সময় অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিলেও এটিএম মেশিন থেকে টাকা বের হয় না। এটিএম বুথে যান্ত্রিক গণ্ডগোলের জন্যে এমন হতে পারে। দ্রুত কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা অ্যাকাউন্টে টাকা রিফান্ড করে দেয়।৬। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা চলে যেতে পারেযে পরিমাণ টাকা দেয়ার কথা ছিলো সে পরিমাণ না দিয়ে বেশি টাকা চলে যেতে পারে। দুই হাজারকে ভুল করে ২০ হাজার লিখে ফেলা অস্বাভাবিক না। এ ধরনের সমস্যা এড়ানোর জন্যে কত টাকার সেবা নিচ্ছো এবং কত টাকা দিচ্ছো সেদিকে লক্ষ্য রাখো। টাকার অঙ্ক টাইপ করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। এরকম অবস্থায় টাকা ফেরত পাওয়া গেলেও অনেক বিড়ম্বনা পোহাতে হবে।৭। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেজে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট থেকে টাকা চুরি ফোনে কল দিয়ে বিকাশ বা অন্য কোন অ্যাকাউন্ট অচল বা ব্লক হয়ে যাবার ভয় দেখিয়ে টাকা চুরি করতে পারে। ফোন নাম্বারে ওটিপি পাঠানো হয় এবং বিশ্বাসযোগ্য কথা বলে একাউন্টের মালিককে ওটিপিটা পাঠাতে প্ররোচিত করা হয়। এই ওটিপি পাঠালে একাউন্টের সকল টাকা প্রতারকের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা খুবই ঘটতে দেখা যায়।
আরও জানুন