ডিজিটাল স্পেস নিরাপদ করতে সাহসী ভূমিকা রাখবে তরুণরা

ডিজিটাল স্পেসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের তরুণরা শুধু দেশের সাইবার স্পেস নয়, সারা বিশ্বের ডিজিটাল স্পেস নিরাপদ রাখতে সাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে।

আজ মঙ্গলবার বিসিসি অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উদ্যোগে ‘নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস ২০২২’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিটি বিভাগের ডিজিটাল লিটেরেসি সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক সাইফুল আলম খান।

‘নিরাপদ ইন্টারনেটের জন্য ডিজিটাল লিটারেসি’- এই বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক শিশু কিশোরদের নিরাপত্তা বিষয়ক অ্যাপ সাইবার টিনসের প্রতিষ্ঠাতা সাদাত রহমান। অনলাইনে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পাবলিক পলিসি অফিসার শাবনাজ রশিদ দিয়া বক্তব্য দেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের অনেক তরুণ উদ্যোক্তা ইন্টারনেটের শক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদের আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে পরিবারে স্বচ্ছলতা আনার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে ডিজিটাল অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাই তাদের মতামত, পরামর্শ ও সুপারিশগুলো আমাদের কর্মকান্ডে যেন প্রতিফলিত হতে পারে সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি।

এর আগে টেন মিনিটস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আয়মান সাদিকের পরিচালনায় ‘নিরাপদ ইন্টারনেটের জন্য ডিজিটাল লিটারেসি’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় বক্তব্য দেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান, ইউএনডিপির রেসিডেন্ট রিপ্রেন্টিটিভ সুদীপ্ত মুখার্জি, ইউনিসেফের চাইল্ড প্রোটেকশন স্পেশালিস্ট মনিরা হাসান, সিসিমপুরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ শাহ আলম, বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার মোহাম্মদ শাহেদুল আলম।

প্যানেল আলোচনায় বক্তারা বলেন, দেশব্যাপী কানেক্টিভিটি ও ডিজিটাল ডিভাইসের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করেছে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি। কিন্তু অসচেতনার কারণে সব মানুষ সমানভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারছে না। একটি দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্তই হচ্ছে ডিজিটাল লিটারেসি। ব্যাংক লেনদেন থেকে শুরু করে অনলাইন কেনাকাটা-এসব জায়গায় আমরা ডিজিটাল লিটারেসির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। আমাদের জনসাধারণ, শিক্ষিত জনগোষ্ঠী-যারা মোবাইলফোন ব্যবহার করেন তাদের জন্য ডিজিটাল লিটারেসি অত্যান্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। ‘বাংলাদেশ সরকারের জন্য নিরাপদ ই-মেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন’ প্রকল্পে মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব জিয়াউল আলম বলেন, ‘আইসিটি বিভাগ সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিগত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে নানা ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। যেকোনো দেশের সাইবার নিরাপত্তার তিনটি প্রধান দিক রয়েছে। সাইবার নিরাপত্তার ষ্ট্র্যাটেজি ও পলিসি নির্ধারণ করা, সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন সোসাইটি ও এর সংস্কৃতি গড়ে তোলা এবং সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করা। সাইবার নিরাপত্তার ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সচেতন সোসাইটি ও সংস্কৃতি গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে, আমরা এই সেন্টারের মাধ্যমে সেই জায়গা নিয়ে কাজ শুরু করেছি।

পরে প্রতিমন্ত্রী www.digitalliteracy.gov.bd ওয়েবসাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে ডিজিটাল লিটারেসি বিষয়ক একটি কুইজ প্রতিযোগিতা। অনলাইনে সারা দেশ থেকে প্রায় এক হাজার স্কুল শিক্ষক, প্রোগ্রামার এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। অনুষ্ঠানে স্যোশাল মিডিয়া কনটেন্ট ক্রিয়েটর শামীমা শ্রাবণীর তৈরি ডিজিটাল লিটারেসির ওপর অ্যানিমেশন দেখানে হয়।