আমরা কিন্তু কমবেশি সকলেই ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তাই না? আর এই করোনা পরিস্থিতির কারণে আমাদের ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে, সাথে সাথে বাড়ছে ইন্টারনেটের ব্যবহার। আর তুমি যখন একটি ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে ইন্টারনেটের ব্যবহার করছো ঠিক তখনই কিন্তু তুমি ডিজিটাল পরিমণ্ডলে প্রবেশ করছো। আমরা এই পরিমণ্ডল থেকে অনেক রকমের সেবা পেয়ে থাকি। যেমন: আমরা অতি সহজেই দেশ-বিদেশের খবরা-খবর জানতে পারি, বাসায় বসে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারি, দূর-দূরান্তে থাকা সকল আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বলতে পারি, বিভিন্ন অ্যাপ বা সফটওয়ারের মাধ্যমে শিক্ষক ও সহপাঠীদের সাথে পড়াশোনা করতে পারি। এরকম আরও অনেক রকম ডিজিটাল সেবা আমরা প্রায়ই গ্রহণ করছি। অথচ আমরা অনেক সময়ই এমন কিছু আচরণ প্রদর্শন করছি যা মোটেও ঠিক নয়। এজন্যই আমাদের জানতে হবে এই পরিমণ্ডলে কোন আচরণ গ্রহণযোগ্য আর কোন আচরণ বর্জনীয়। ডিজিটাল পরিমণ্ডলে যে কোনো ধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে ছোট,বড় সকলের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। কোনো ধরনের মন্তব্য প্রকাশে বেশ সতর্ক থাকতে হবে; যাতে কেউ ভুল বুঝে কষ্ট না পায়। আমরা অনেক সময় মজা করে বিভিন্ন রকম কথা বলে থাকি। যার অনেক রকম ব্যাখ্যা হতে পারে। এমন কোন মন্তব্য ভুল বুঝে কেউ কষ্ট পেতে পারে। এই ধরণের মজা অনেক সময়ই ডিজিটাল পরিমণ্ডলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। এই জন্য মজা করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। এই পরিমণ্ডলে বিচরণকালে আমাদের বিভিন্ন ধরণের মানুষের সম্মুখীন হতে হয়। এজন্য সবসময় অপরিচিত ব্যক্তির থেকে তোমার যে কোনো ধরণের ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন- বাসার ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার) নিরাপদ রাখতে সতর্ক থাকবে। ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট এবং গ্রুপের আমন্ত্রণ গ্রহণের আগে ভালোমত দেখে নিতে হবে, যে সেটা আসলেও প্রয়োজনীয় কিনা। প্রয়োজন না হলে এই ধরনের আমন্ত্রণগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। বিভিন্ন ধরনের মানুষের বিভিন্ন রকম মতামত থাকতে হবে। সকলের মতামতের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। যোগাযোগের সময় কারো বিরক্তির কারণ হলে কিনা, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তথ্যের সত্যতা যাচাই না করে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ই-মেইল ব্যবহার করতে পারো। আমরা আমাদের দিনের বেশির ভাগ সময় এই পরিমণ্ডলে বিচরণ করি। এজন্য এই পরিমন্ডলের যে কোন আচরণ মানুষের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। একজনের অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্য যেমন তাকে ভালো কাজের জন্য আরও উৎসাহিত করে; আর ঠিক তেমনিভাবে একজনের বাজে মন্তব্য একজন মানুষের হীনমন্যতায় ভোগার জন্য দায়ী। এজন্য আমাদের এই ডিজিটাল পরিমণ্ডলের নিজেদের আচরণ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
আরও জানুনইমন তার বাবা এবং মায়ের সাথে ঢাকায় বসবাস করে। গ্রাম থেকে তার খালু তাদের বাসায় বেড়াতে আসতে চেয়েছে। এজন্য তার বাবা তাকে বললো যে তাদের বাসার সঠিক ঠিকানাটি যাতে তার খালুকে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়। ইমন তার বাবার ফোনটি নিয়ে তখন মেসেজ লিখে পাঠানোর চেষ্টা করলো।ইতি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। একদিন স্কুল শেষে তার শ্রেণিশিক্ষক ক্লাসের সবাইকে একটি নাম্বার দিয়ে বললেন সবাই যাতে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে নাম্বারটিতে তাদের ব্যক্তিগত তথ্যগুলো লিখে পাঠিয়ে দেয়। তখন ইতি তার আম্মুর কাছ থেকে জানতে চাইলো যে কীভাবে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে সে বার্তা পাঠাতে পারবে।উপরের দুইটি ঘটনা পড়ে আমরা কী বুঝলাম? আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই আমাদের বিভিন্ন কাজে ইমেইল, মোবাইল মেসেজ বা হোয়াটস্ অ্যাপের মাধ্যমে বার্তা পাঠানোর প্রয়োজন হয় । চলো তাহলে দেখে নিই, কীভাবে আমরা মোবাইল মেসেজ, ইমেইল, কিংবা হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে বার্তা আদান প্রদান করতে পারি। মোবাইলে মেসেজঃমোবাইল ফোনের মাধ্যমে কাউকে বার্তা পাঠাতে চাইলে করণীয়-প্রথমে তোমাদের মোবাইলের মেসেজ অপশনে বা অ্যাপে যেতে হবে।নতুন একটি মেসেজ লেখার জন্য তোমার সামনে (+) যোগ চিহ্নের মত একটি আইকন দেখতে পাবে যেখানে ক্লিক করলে বার্তাটি লেখার জন্য একটি বক্স আসবে। সেই বক্সে তুমি মেসেজ লিখতে পারবে। অনেকের ফোনে আইকনের বদলে নিউ মেসেজ লেখা একটি অপশন আসবে। সেখানে ক্লিক করার মাধ্যমে তুমি তোমার বার্তাটি লিখতে পারবে।বার্তাটি লেখার পর উপরে খেয়াল করলে দেখতে পাবে (Add Recipient / Add Contact ) লেখা ছোট আরেকটি বক্স আছে যেখানে তুমি যাকে বার্তাটি পাঠাতে চাও তার নাম্বারটি লিখে দিবে। আর যদি তার নাম্বারটি আগে থেকেই সেইভ (save) করা থাকলে , তাহলে যে নামে সেইভ করা আছে সেই নামটি লিখলে তার contact টি চলে আসবে এবং তুমি তার নামটি সিলেক্ট করতে পারবে।পরবর্তীতে send লেখা অপশনটিতে ক্লিক করলে মেসেজটি গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যাবে। কোনো মোবাইল ফোনে send লেখাটির বদলে তিনকোনা তীরের মত একটি অপশন থাকে যেটাতে ক্লিক করলে বার্তাটি চলে যাবে। ইমেইলের মাধ্যমে কাউকে বার্তা পাঠাতে চাইলে করণীয়-ইমেইলের মাধ্যমে কাউকে বার্তা পাঠাতে চাইলে সর্বপ্রথম কথাটি হলো-তোমাকে অবশ্যই যে কোনো ইমেইল প্রোভাইডারের একটি অ্যাকাউন্ট থাকা লাগবে। যেমন- জি মেইল(Gmail), ইয়াহু মেইল(Yahoo! Mail), আউটলুক (Outlook), প্রোটোনমেইল(ProtonMail) ইত্যাদি।যদি তোমার জি মেইল একাউন্ট থাকে, তাহলে তোমাকে মোবাইলের জি মেইল অপশনে যেতে হবে। এরপর জি মেইলের কম্পোজ(Compose) অপশনে যাবে। সেখানে একটি বক্স দেখতে পাবে। বক্সের ‘To’ লেখা জায়গাটিতে যার কাছে মেইলটি পাঠাতে চাও তার ইমেইল ঠিকানা লিখে দিবে।উপরের দিকে ‘Subject’ লেখা জায়গাটিতে মেইলের শিরোনাম বা যে বিষয়ে মেইল করা হবে সেই বিষয়টি সংক্ষেপে ১ লাইনে বা কয়েকটি শব্দে লিখবে। এরপর নিচের দিকে ‘Compose email’ লেখা জায়গায় মেইলের মূল কথাগুলো লিখবে। মেইলটি শুরু করতে হবে সুন্দর সম্ভাষণ দিয়ে।স্কুল কলেজের শিক্ষককে মেইল করতে হলে প্রিয়/শ্রদ্ধেয় স্যার লিখে শুরু করা যেতে পারে, বন্ধু বা আত্মীয় স্বজন হলে প্রিয় বন্ধু বা প্রিয়/শ্রদ্ধেয় চাচা লিখে শুরু করা যাবে।এরপর সেন্ড(send)- এ ক্লিক করলে তোমার বার্তাটি প্রদত্ত ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। সেন্ড(send) লেখাটির পরিবর্তে তিনকোনা আকৃতির একটি সেন্ড আইকন ও থাকতে পারে।
আরও জানুন