বিশ্বায়নের এই যুগে দৈনন্দিন জীবনের বেশিরভাগ কাজই সম্পন্ন হচ্ছে ইন্টারনেটের সাহায্যে। ইন্টারনেটভিত্তিক পরিষেবা সমূহ সাধারণত কোনো ওয়েবসাইট কিংবা অ্যাপের সাহায্যে প্রদান করা হয়ে থাকে। এই সকল ওয়েবসাইট কিংবা অ্যাপের উৎস, তথ্য অথবা বিষয়াবলী অনেক সময়ে বিভ্রান্তিমূলক হতে পারে। অনেকেই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর অ্যাপ বা ওয়েবসাইট তৈরি করে বাজারে নিয়ে আসে। এসকল পরিষেবা গ্রহণ করলে তথ্য চুরি, ফিশিং, হ্যাকিং ইত্যাদির মতো অনলাইনভিত্তিক ঝুঁকির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের আবশ্যিকভাবে ভুয়া ওয়েবসাইট, অ্যাপ এবং সেবা সনাক্তকরণ ও রিপোর্ট করার পদ্ধতি সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা উচিৎ।
ভুয়া ওয়েবসাইট চেনার উপায়-
১। URL তথা লিঙ্কটিতে কোনো ভুল বানান আছে কিনা তা যাচাই করতে হবে। ভুল বানান সম্পৃক্ত লিঙ্কগুলি সাধারণত ভুয়া হয়। যেমন- amaz0n.com (‘O’ এর পরিবর্তে ‘0’)
২। সাইট সিল পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সাধারণত ভুয়া ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে সাইট সিলগুলিতে ক্লিক করলে কোনো ডায়লগ বার আসে না। (সাইট সিল হল দৃশ্যমান একধরণের সূচক যা একটি ওয়েবসাইট এনক্রিপ্ট করা হয়েছে কী না তা নির্দেশ করে। আর এনক্রিপ্ট হওয়া যেকোনো ওয়েবসাইটের জন্য যথার্থতা নির্দেশ করে।)
৩। ‘তালা’ চিহ্ন দেখে শনাক্ত করতে হবে। ওয়েবসাইট গুলোর URL এর পূর্বে একটি ‘তালা’ প্রতীক বা চিহ্ন থাকে। এটি সার্ভারের সাথে যোগাযোগের গোপনীয়তা নিশ্চিত করে।
৪। ওয়েবসাইট চেকারের মাধ্যমে ওয়েবসাইটটি চালিয়ে দেখতে হবে। বহুল ব্যবহৃত ওয়েবসাইট চেকারের মধ্যে পিংডম (Pingdom), গুগল পেজ স্পিড ইনসাইট (Google Page Speed Insight), ওয়েবসাইট গ্রেডার (Website Grader), আপট্রেন্ডস (Uptrends) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
৫। এছাড়াও আরো কিছু উপায়ে ওয়েবসাইটের যথার্থতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। যেমন-
- ওয়েবসাইটটির প্রাইভেসি পলিসি পর্যবেক্ষণ করে
- যোগাযোগের তথ্যাবলি পর্যবেক্ষণ করে
- ওয়েবসাইটের বিষয়াবলিতে ব্যাকরণগত অথবা বানান ভুল থাকলে
- গুগলে ‘নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের’ রিভিউ পড়ে
উল্লেখিত পদ্ধতির মাধ্যমে সহজেই ভুয়া ওয়েবসাইট চেনা সম্ভব।
ভুয়া অ্যাপ শনাক্ত করার উপায় –
১। অ্যাপের আইকনে কোনো খুঁত আছে কিনা দেখা। সাধারণত ভুয়া অ্যাপগুলি বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের ব্যবহার করা আইকনকে আংশিক পরিবর্তন করে ব্যবহার করে থাকে। তাই কোন ভুয়া অ্যাপ চিনতে হলে অ্যাপের আইকনে খুঁত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।
২। অ্যাপটির নামের বানান এবং এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নাম ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।
৩। অ্যাপটি কতবার ডাউনলোড হয়েছে সেই সংখ্যা দেখতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভুয়া অ্যাপ সাধারণত কম সংখ্যক ডাউনলোড হয়ে থাকে।
৪। অ্যাপটি সংক্রান্ত রিভিউগুলি পড়ে দেখতে হবে।
৫। অ্যাপটির প্রকাশকাল, হালনাগাদের ইতিহাস এবং গুগল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রদত্ত অনুমোদন আছে কী না তা খতিয়ে দেখতে হবে।