তথ্য চুরি

ব্যক্তিগত বা পেশাগত যে কারণেই আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকুন না কেন, আপনাকে অনলাইন ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। সচেতন না হলে অনলাইন মাধ্যমের বিভিন্ন ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হবে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীগণ যে কয়েকটি সম্ভাব্য বিপদের সম্মুখীন হতে পারে তার মধ্যে ‘তথ্য চুরি’ অন্যতম। বিভিন্নভাবেই ইন্টারনেট থেকে আপনার তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে। যেমন:

 

১। অরক্ষিত ওয়েবসাইট বা অনেকের ব্যবহৃত Wi-Fi-এ শেয়ার করা ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

২। আপনার মোবাইল, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার চুরি হয়ে গেলে এসব ডিভাইস থেকেও ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য ইত্যাদি চুরি হতে পারে।

৩। প্রতারকরা ইমেইল হ্যাকিং এর মাধ্যমে ব্যাংক এবং ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্ট, পূর্ব-অনুমোদিত ক্রেডিট কার্ড অফার, কর-প্রদান সংক্রান্ত তথ্য এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্যের নাগাল পেতে পারে।

৪। বিভিন্ন থার্ড পার্টি সোর্স (উৎস) থেকে ব্যক্তিগত তথ্য কিনে নেওয়ার মাধ্যমেও প্রতারকরা অনেক স্পর্শকাতর তথ্যের নাগাল পেতে পারে।

৫। ইন্টারনেট তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মচারী, যার কাছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের অ্যাক্সেস আছে, এমন মানুষের মাধ্যমেও আপনার ইন্টারনেটে দেওয়া তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে।

৬। একজন হ্যাকিং এর শিকার হলে, তার ডিভাইসের মাধ্যমে পরিবারের বা কর্মসংস্থানের অন্যান্য কর্মীদের তথ্য ও চুরি হতে পারে।

৭। থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি হয়ে যাওয়া বা বেহাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৮। ফিশিং এর মাধ্যমে তথ্য চুরি করতে পারে। অর্থাৎ এমন কোন সাইট বা লিঙ্কে আপনাকে নিয়ে গেলো যার মাধ্যমে আপনার ইমেইল, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি তথ্য চুরি করে তারপর আরও মূল্যবান তথ্য চুরি করে ফেলতে পারে।

৯। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ারকৃত বিভিন্ন তথ্য পাবলিক করে রাখলে এসব তথ্য প্রতারকরা অনায়াসেই চুরি করে ফেলতে পারে।

১০। কোন অপ্রয়োজনীয় এবং নকল ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট তৈরি এবং ব্যক্তিগত তথ্য দিলে তথ্য চুরি হতে পারে।

১১। অনেক ওয়েবসাইট বা অ্যাপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তেমন শক্তিশালী নয়, সেসব অনিরাপদ ওয়েবসাইট তথ্য দিলেও আপনার তথ্য ঝুঁকির মধ্যে থাকবে।

মনে রাখবেন, সাইবার অপরাধীরা বিভিন্ন অবৈধ কাজে আপনার তথ্য ব্যবহার করতে পারে। এমনকি ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে টাকা চুরি, আপনার নামে ক্রেডিট কার্ড অথবা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে বা নকল পরিচয়পত্র তৈরি করে আরও বড় কোন অপরাধ করতে পারে। এর ফলে আর্থিক বা সামাজিক ক্ষতিসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ভারও পড়তে পারে আপনারই ওপর। কাজেই ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান ও সংরক্ষণে যত্নবান হওয়া একান্তই জরুরি। নিজে সতর্ক হবার পাশাপাশি প্রাসোঙ্গিক বিষয়গুলো আপনার শিশুকেও অবহিত করুন এবং সচেতন করুন ডিজিটাল দুনিয়ায় সতর্ক আচরণ করতে।