প্রয়োজনীয় মোবাইল আপ্লিকেশন্স ও কম্পিউটার-এর বেসিক অপারেশন্স

রুবি আক্তার ঢাকা শহরে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করে। সপ্তাহে ছয়দিনই তাকে কাজে যেতে হয় বিধায় তার বাবা মার সাথে দেখা করতে গ্রামে যেতে পারছে না। এজন্য সে পরিবারের জন্য টাকা পাঠাতে পারছেন না; কারো মাধ্যমে টাকা পাঠাতেও ভরসা করতে পারছেন না। তার সহকর্মীদের সাথে ব্যাপারটি শেয়ার করলে তাকে বললো, ”এখন তো খুব সহজেই আপনার  ফোনে অ্যাপ ডাউনলোড করে একটা একাউন্ট খুলে যে কোনো সময়  বাসায় টাকা পাঠাতে পারবেন; কোনো দোকানেও যাওয়ার দরকার পড়বে না।“ সে রুবিকে সাথে আরও বললো যে স্মার্ট ফোনে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপলিকেশন ডাউনলোড করে অনেক জটিল কাজও এখন  খুব সহজে করা সম্ভব হচ্ছে।

বর্তমানে আমরা অনেকেই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে থাকি; আর এই স্মার্টফোনে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে একটি যন্ত্রের মাধ্যমেই বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারি। যেমন- হিসাব করা, ছবি তোলা, ভিডিও বানানো, প্রয়োজনীয় তথ্যাদি নোট করে রাখা, দূর-দূরান্তে মানুষের সাথে ভিডিও কলের মাধ্যমে সরাসরি কথা বলা, গান শোনাসহ আরও বিভিন্ন ধরনের কাজ।

চলুন আজকে তাহলে আমরা স্মার্টফোনের কিছু প্রয়োজনীয় মোবাইল আপ্লিকেশন সম্পর্কে জেনে নিব।

প্রথমেইজানিয়ে রাখা ভালো যে আমরা যে কোনো ধরনের প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন প্লেস্টোর থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারি। তবে কিছু কিছু অ্যাপ রয়েছে যেগুলো স্বভাবতই আপনার ফোনে ইনস্টল করা থাকে। 

Clock বা ঘড়ি- আমাদের প্রায় সবার ফোনেই এই অ্যাপটি ইনস্টল করা থাকে। এই অ্যাপের মাধ্যমে আমরা আমাদের অবস্থান অনুযায়ী ফোনের ঘড়ির সময় পরিবর্তন করে নিতে পারি। প্রয়োজনে পৃথিবীর অন্য কোনো শহরের সময়ও এই অ্যাপের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। এছাড়াও এই অ্যাপ দিয়ে আমরা সময়মতো অ্যালার্ম সেট করে রাখতে পারি,স্টপওয়াচ হিসেবেও ব্যবহার করতে পারি।

Calculator- ক্যালকুলেটর সাধারণ সকল ধরনের ফোনেই ইনস্টল করা থাকে; তবে আপনার ফোনে ইনস্টল করা না থাকলে আপনি প্লেস্টোর থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি যে কোনো সময়ে দৈনন্দিন জীবনের বড়-ছোট গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

Scanner- বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় কাজে (যেমন- কোন ডকুমেন্ট এর সফট কপি কাউকে পাঠানো, কোন ছবি এডিট করা ইত্যাদি) আমাদের স্ক্যানার ব্যবহার করতে হয়। যে ডকুমেন্ট বা বিষয়টি আমরা স্ক্যান করতে চাই সেটার দিকে ক্যামেরা দিকটি রেখে স্ক্যানার চালু করলেই স্ক্যান শুরু হয়ে যাবে। প্রায় সব ধরনের স্মার্টফোনেই এই অ্যাপটি ইনস্টল করা থাকে।

 

Facebook, Messenger এবং Whatsapp- এই অ্যাপগুলোর মাধ্যমে প্রধানত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাউন্ট তৈরি করা যায়। একাউন্ট থাকলে এই অ্যাপগুলোর মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর যেকোনো স্থানে অবস্থানরত যে কারো সাথে অডিও কল, ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যায়, একাউন্টে ছবি, ভিডিও বা যে কোনো ধরনের পোস্ট শেয়ার করা যায়। 

ফিন্যান্সিয়াল অ্যাপ (যেমন- Nagad, Rocketএবং Bkash)  কারো কাছে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে টাকা পাঠানোর জন্যবেশ সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছে। প্লেস্টোর থেকে এই অ্যাপগুলো ডাউনলোড করা সম্ভব। ডাউনলোড হয়ে গেলে ইনস্টল করার পর প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ প্রদান করে একাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে আমরা যেকোনো সময় অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা আদান-প্রদান করতে পারবো।

Zoom- মূলত বিভিন্ন অনলাইন মিটিংয়ের জন্য এই অ্যাপটি বহুল ব্যবহৃত। অনলাইন মিটিং হোস্ট করা এবং Zoom অ্যাপের মাধ্যমে কেউ আপনাকে মিটিংয়ের আমন্ত্রন জানালে ও অংশগ্রহণের জন্য এই অ্যাপ্লিকেশনটি স্মার্টফোনে ইনস্টল করে রাখতে হবে। অ্যাপটি আপনি প্লেস্টোর থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।

 

এছাড়াও আরও কিছু প্রয়োজনীয় অ্যাপ যেমন- ক্যালেন্ডার, রেকর্ডার, গুগল ম্যাপস্‌, বিভিন্ন রাইডিং অ্যাপ (যেমন- উবার, পাঠাও, ওভাই), মিউজিক, গুগল মিট, গুগল ক্লাসরুম ইত্যাদির সঠিক ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সচল এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলতে পারে।

স্মার্টফোনের পাশাপাশি আমাদের কর্মজীবনে কম্পিউটার , ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের ব্যবহার অস্বীকার্য। কর্মজীবন ছাড়াও আমাদের শিক্ষাজীবনে এই কম্পিউটার বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আমাদের কম্পিউটার-এর কিছু বেসিক অপারেশন্স সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

ডেস্কটপ কম্পিউটার চালু এবং বন্ধ করা- কম্পিউটারের চারকোনা বক্সের মতো বেশ বড় আকৃতির যন্ত্র থাকে যা কেসিং, যদিও অনেকে একে সিপিউ (CPU) বলে; এই যন্ত্রটির সামনের দিকে একটি বাটন বা সুইচ থাকে। সেটিতে চাপ দিলেই কম্পিউটার চালু হয়ে যাবে। কম্পিউটার বন্ধ করার জন্য উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে স্ক্রিনের নিচের দিকে একটি চারকোনা উইন্ডোজ আইকন থাকে; সেখানে মাউসের কার্সরটি নিয়ে ক্লিক করতে হবে। সেখানে গোল আকৃতির পাওয়ার (Power) বাটনে ক্লিক করলে আপনার সামনে কিছু অপশন আসবে (যেমন- Restart, Shut down, Sleep)। সেখান  থেকে আপনি Shut down অপশনটিতে ক্লিক করলে আপনার কম্পিউটারটি বন্ধ হয়ে যাবে।

 

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (Microsoft Word) ব্যবহার- মূলত যেকোনো ধরনের ডকুমেন্ট বা নথিপত্র তৈরি করার জন্য এই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করার জন্য আপনার কম্পিউটারের Microsoft Word-এ প্রবেশ করবেন। সেখান থেকে New Document-এ ক্লিক করলে আপনার সামনে নতুন একটি পেইজ চলে আসবে যেখানে আপনার প্রয়োজন মতো লেখালেখি বা ডকুমেন্ট তৈরি  করতে পারবেন। লেখালেখির জন্য আপনি আপনার কম্পিউটারের কীবোর্ড ব্যবহার করবেন। লেখালেখির পর আপনি যদি সেটা পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করতে চান তাহলে এই ফাইল বা ডকুমেন্টটি সেইভ করতে উপরের একদম ডানদিকে চারকোনা একটি (Save Icon) থাকে সেখানে ক্লিক করে আপনার ডকুমেন্টের একটি নাম দিয়ে সেইভ করতে পারবেন। অথবা, কীবোর্ডের Ctrl এবং S (Ctrl+s) কী বা বোতাম দুইটি একসাথে চেপে ধরলে  সেইভ হয়ে যাবে। 

মাইক্রোসফট এক্সেলের (Microsoft Excel) ব্যবহার- যেকোনো ধরনের সহজ জটিল হিসাব করা, বিভিন্ন ধরনের ডাটা সংরক্ষণ করার জন্য Microsoft Excel বেশ উপযোগী একটা সফটওয়্যার।  এই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করার জন্য আপনার কম্পিউটারের Microsoft Excel-এ প্রবেশ করবেন। সেখান থেকে Blank workbook-এ ক্লিক করলে আপনার সামনে নতুন একটি শিট চলে আসবে যেখানে আপনার প্রয়োজন মতো ডাটা সংরক্ষণ করতে পারবেন। ডকুমেন্টটি সেইভ করতে উপরের একদম ডানদিকে চারকোনা একটি (Save Icon) থাকে সেখানে ক্লিক করে আপনার Sheet একটি নাম দিয়ে সেইভ করতে পারবেন। অথবা, কীবোর্ডের Ctrl এবং S (Ctrl+s) কী বা বোতাম দুইটি একসাথে চেপে ধরলে সেইভ হয়ে যাবে। 

এগুলো ছাড়াও কম্পিউটারের আরও অনেক ধরনের সফটওয়ার রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজগুলো খুব সহজেই করে ফেলতে পারবেন।