ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন এখন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্মার্টফোনের বিভিন্ন অ্যাপ জীবনকে করছে সহজ ও গতিশীল। শুধুমাত্র স্মার্টফোনই নয়, স্মার্ট টিভি, স্মার্ট ঘড়ি এগুলোর জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে অসংখ্য মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের চাহিদা ও ব্যবহার যেমনি দিন দিন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে এগুলো ব্যবহারের ঝুঁকি। যে কোন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার আগে কিছু সতর্কতা অবলম্বন না করলে মোবাইলের সকল তথ্য চুরি হওয়া ছাড়াও মোবাইল ও মোবাইলে ব্যবহৃত বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। তাই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার সময় যে সকল সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত সেগুলো হচ্ছে -
১) গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোরে প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যাপের নাম দিয়ে সার্চ দিলে একই নামে একাধিক অ্যাপ সামনে চলে আসতে পারে এবং এর ভিতরে ভুয়া অ্যাপ থাকার সম্ভাবনা বেশি। এক্ষেত্রে অ্যাপের রিভিউ (অন্যান্য ব্যবহারকারীদের মতামত) এবং ডিসক্রিপশন (বিবরণ) পড়তে হবে। অনেক অ্যাপে পেইড রিভিউ দেখতে পাওয়া যায়।
ভালো মত খেয়াল করলেই বুঝতে পারা যাবে কোনটি পেইড রিভিউ আর কোনটি নিয়মিত ব্যবহারকারীর রিভিউ।
২) যে কোন অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় অবশ্যই আপডেটেড অ্যান্টি-ভাইরাস সচল রাখতে হবে।
৩) ফ্রি অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় অন্য কোন অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার বা ফাইল ডাউনলোড হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এই ধরনের সফটওয়্যার ও ফাইল অবশ্যই ডিলিট করতে হবে এবং কোন অবস্থাতেই সেগুলো ইনস্টল করা যাবে না।
৪) যে কোন অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে প্লে স্টোরের ডিসক্রিপশন পেইজে “এডিটরস চয়েস” অথবা “টপ ডেভেলপার” জাতীয় ট্যাগলাইন থাকলে সেটি আসল অ্যাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ডেভেলপারের ওয়েবসাইট ভিজিট করে অ্যাপটির বিষয়ে আরো নিশ্চিত হয়ে নিতে পারবেন।
৫) ইনস্টল করার সময় যে কাজের জন্য অ্যাপটি ডাউনলোড করা হয়েছে তা বাদে যদি অপ্রয়োজনীয় ব্যাপারে অনুমতি চায় (যেমন- হিসাব-নিকাশের একটি অ্যাপ ইন্সটল করার সময় যদি আপনার মোবাইলের ক্যামেরা, মাইক্রোফোন বা ছবিতে প্রবেশ অধিকার চায়) তাহলে ঐ অ্যাপটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। এই ধরনের অ্যাপ আন-ইনস্টল করে দিন।
দিন দিন ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি পাওয়ায় অল্প সময়ের কাজেই মোবাইল ডাটা অনেকখানি খরচ হয়ে যায়। মোবাইলের ডাটা খরচ কমানোর জন্য তাই অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার সীমিত করে দিচ্ছেন। কিন্তু একটু সতর্ক হলেই মোবাইলের ডাটা সংরক্ষণ করা সম্ভব। এজন্য নিচের বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখা জরুরী -
১) গুগল ক্রোম ব্রাউজারে ডাটা সেভার নামে একটি ফিচার আছে। এই ফিচারটি চালু করলে গুগল ক্রোম বিভিন্ন ছবি ও ওয়েব সাইটের তথ্য সংকুচিত করে প্রদর্শন করবে। ফলে মোবাইল ডাটা সঞ্চয় করা সহজ হবে। এই সুবিধাটি পাওয়ার জন্য গুগল ক্রোমের সেটিংসে প্রবেশ করে ডাটা সেভার অপশনটি চালু করতে হবে।
২) অনলাইনে অডিও/ভিডিও প্লে করার ক্ষেত্রে অডিও/ভিডিওয়ের কোয়ালিটি যদি গুরুত্বপূর্ণ না হয় তবে তা একদম কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে ডাটা সাশ্রয় হবে। ফেইসবুক, ইনস্টাগ্র্যাম ও টুইটার অ্যাপের সেটিংসে এই সুবিধা পাওয়া যায়।
৩) বর্তমানে বিভিন্ন অ্যাপের লাইট ভার্সন প্লে স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো ব্যবহার করলে প্রচুর ডাটা সাশ্রয় করা সম্ভব।
৪) বেশিরভাগ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকগ্রাউন্ডে সচল থাকে। এর ফলে প্রচুর মোবাইল ডাটা অপচয় হয়। ব্যাকগ্রাউন্ড ডাটা রেস্ট্রিক্ট করে এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এজন্য এই ধাপটি অনুসরণ করুন: Settings > Data Usage > Tap on the menu button > Restrict background data > OK.
৫) ম্যাপ/মিউজিক/ভিডিও প্রভৃতি ডাউনলোড করে অফলাইনে উপভোগ করার সুযোগ থাকলে ইন্টারনেটে অযথা এগুলো প্লে করে মোবাইল ডাটা অপচয় করার প্রয়োজন নেই।