অনলাইন আসক্তি বুঝার উপায়

কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের মত বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস বর্তমানে খুবই সহজলভ্য। বিশেষ করে স্মার্টফোন নামক যন্ত্রটি এখন বেশিরভাগ মানুষের হাতেই দেখা যায়। এটি ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন কাজ করতে পারছি। জরুরি কাজের পাশাপাশি বিনোদনমূলক কাজেও স্মার্টফোনের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। অনলাইন সামাজিক মাধ্যম, অনলাইন গেম, ভিডিও দেখা, গান শোনা ইত্যাদি বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড স্মার্টফোনের কল্যাণে হাতের মুঠোয় চলে এসেছে।

অনলাইন বিনোদনসমূহ বহুল ব্যবহারের একটি মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে অনলাইন আসক্তি। অনলাইন সেবা ব্যবহারের প্রতি যে মোহ ব্যবহারকারীকে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন করে তোলে এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নেশাগ্রস্ত করে রাখে তাই অনলাইন আসক্তি। এই আসক্তি সকল শ্রেণি-পেশা-বয়সের মানুষের মধ্যেই দেখা দিতে পারে। তবে কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সমস্যাটি বেশি দেখা যায়।

অনলাইন আসক্তি অবহেলার কোন ব্যাপার নয়। দিন দিন এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে। প্রায় সময়ই আমরা আমাদের ডিজিটাল ডিভাইসে স্ক্রিনের দিকে মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে থাকছি। এমনকি পারিবারিক অনুষ্ঠান বা বন্ধুদের আড্ডায় বসেও আমরা অনলাইনে ব্যস্ত থাকছি। বাস্তব জগতে নিজেদের মধ্যে কথা বলার চেয়ে অনলাইনের অবাস্তব জগতই যেন ক্রমাগত আমাদের কাছে মূখ্য ও প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ছে। অনলাইনের প্রতি এই আসক্তি মাদকাসক্তির মতই আমাদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।                    

মাদকাসক্তির যেমন কতগুলো উপসর্গ আছে, ঠিক তেমনি অনলাইন আসক্তিরও রয়েছে বিভিন্ন উপসর্গ। এগুলো দেখে বোঝা যায় একজন মানুষ অনলাইনে আসক্ত কিনা। যেমন –

  •   নানা পারিবারিক কাজে সহযোগিতা না করা এবং অন্যান্য সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হ্রাস পাওয়া
  •   আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের সাথে পারস্পারিক মিথষ্ক্রিয়া কমে যাওয়া
  •   কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা প্রকাশ করা এবং বাইরে বের হতে না চাওয়া
  •   পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
  •   অযথা রাত জাগা এবং সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা
  •   প্রতিনিয়ত শিক্ষা বা কর্মস্থলে দেরি করে যাওয়া
  •   শিক্ষার্থীরা পড়তে বসলে দ্রুত পড়া শেষ করা বা খেতে বসলে তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করা
  •   খেতে বসলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা, ইউটিউবে গান শোনা বা ভিডিও দেখা
  •    অনেক সময় চড়া গলায় কথা বলা এবং মেজাজ খিটখিটে থাকা
  •  জরুরি কাজ না থাকলেও দিনের বেশিরভাগ সময় কম্পিউটার বা স্মার্টফোন ব্যবহার করা
  •   শারীরিক ও মানসিকভাবে দূর্বল ও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া
  •   অতিমাত্রায় ইন্টারনেট ব্যবহার এবং অনলাইন গেম খেলার কারণে চোখ ফুলে যাওয়া ও চোখের নিচে কালি পড়া
  •   সবসময় ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত থাকা