ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখার গুরুত্ব/ প্রয়োজনীয়তা

অনেকেই অনলাইন মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য খুব বেশি প্রকাশ করেন এবং অনলাইনে প্রাইভেসি সংক্রান্ত ব্যাপারে খুব বেশি সচেতন থাকে না। এসব কারণে কেউ কেউ বিভিন্ন ধরণের ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। এজন্য এসব তথ্য গোপন রাখা উচিত। চলুন, জেনে নেয়া যাক ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখার প্রয়োজনীয়তাগুলো-

 ১। তথ্য চুরি থেকে বাঁচানো

অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্য প্রচারের কারণে অনেকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির সম্ভাবনা থাকে। তথ্য চুরি থেকে বাঁচানোর জন্য ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখা প্রয়োজন। ফোন নাম্বার, ছবি, পেশা, আর্থিক তথ্য গোপন না রাখলে চুরির সম্ভাবনা অনেক।

 ২। জালিয়াতচক্র এড়িয়ে চলা

অনেক সময় জালিয়াতচক্র কাউকে টার্গেট করে তার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে তথ্য জালিয়াতি থেকে শুরু করে আর্থিক জালিয়াতির মত ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। এসব ঝামেলা এড়িয়ে চলার জন্য গোপনীয়তা জরুরি।

 ৩। অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের অ্যাকাউন্ট, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার জন্য অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য যেমন- ইমেইল এড্রেস, পাসওয়ার্ড, পিন নাম্বার, ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড, অ্যাকাউন্ট নাম্বার এসব তথ্য গোপন করে রাখা খুবই জরুরি। কেউ এসব তথ্য জেনে গেলে আপনার অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। কখনো কখনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট থেকে জালিয়াতি করে টাকা ট্রান্সফার করে নিতে শোনা যায়। এসবের ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টটি যিনি ব্যবহার করছেন তারও দায়ভার আছে। কেননা তিনি এসব তথ্য অন্য মানুষের কাছে গোপন না রাখায় তারা এসব তথ্য পেয়ে গেছে।

 ৪। পারিবারিক নিরাপত্তার জন্য

আমরা কখন কোথায় যাচ্ছি, কী করছি এসব দৈনন্দিন তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি অনেকটাই। এসব তথ্য যত কম দেয়া যায় ততই ভালো। কারণ এসব তথ্য থেকে আপনাকে এবং আপনার পরিবারের গতিবিধি নজরদারি করা খুবই সহজ। কেউ আপনার পরিবারের কোন ক্ষতি করতে চাইলে বা অন্য কোন ধরনের অপরাধ করতে চাইলে নজরদারি করে আপনাকে বিপদে ফেলার পরিকল্পনা করতে পারে।

 ৫। ব্যবসায়ীদের কাছে বিজ্ঞাপনের লক্ষ্যে পরিণত না হবার জন্য

আমাদের কোন ধরনের পণ্য পছন্দ, কোন বিষয়ে আগ্রহ বেশি এসব বিষয় কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে আমাদের এক্টিভিটি থেকে খুব সহজেই বুঝে নেয়া সম্ভব। আবার ফেসবুকের এলগরিদমের মাধ্যমে এসব তথ্য থেকে আপনার ইচ্ছা-অনিচ্ছা, পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে ধারণা করে তারপর আপনার সামনে বিজ্ঞাপন দেয়া শুরু করে। এবং এসব বিজ্ঞাপনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমরা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বিভিন্ন পণ্য কিনে থাকি। অর্থাৎ আমাদের অনলাইন এক্টিভিটি থেকে তথ্য নিয়ে পরোক্ষভাবে আমাদের কোন একটা পণ্য বা সেবার ভোক্তা বানিয়ে দেয়া হয় খুব সহজেই। কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে চলার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে যত কম ব্যক্তিগত তথ্য দেয়া যায় তার চেষ্টা করতে হবে।

 ৬। সাইবার অপরাধের শিকার না হবার জন্য

অনলাইনে সাইবার অপরাধের একটা ধরন হচ্ছে কারো ছবি বা ভিডিও নিয়ে তা অন্য কোন অবাঞ্চিত, অযাচিত এবং কুরুচিপূর্ণভাবে এই ছবিগুলো ব্যবহার করা। অনলাইনে নিজের ছবি বা ভিডিও দেয়ার ক্ষেত্রে এজন্যই সতর্ক থাকা উচিত। ছবি শেয়ার করলেও তার গোপনীয়তা কতটা আছে তা নিশ্চিত হয়ে দেয়া উচিত।

 ৭। অপব্যবহার রোধ করার জন্য

অনেক সময় একটি ঘটনার ছবি অন্য জায়গায়, একটি ঘটনার তথ্য অন্য ঘটনার সাথে জুড়ে দিয়ে নানান গুজব ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়। ব্যক্তিগত তথ্যের এ ধরনের অপব্যবহার রোধ করার জন্য সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে তথ্য গোপন করে রাখা খুব জরুরি।